কলকাতা, 24 মার্চ:ফুটপাথ বেআইনি দখল মুক্ত করতে এবার রণংদেহী মনোভব দেখাল কলকাতা পৌরনিগম ৷ কলকাতার ফুটপাথ দখল করে দোকান বসানো নতুন কোনও ঘটনা নয়। তবে বেশ কয়েক বছর ধরে এই দখলদারি বেলাগাম গতিতে বেড়েই চলেছে বলে অভিযোগ। এবার সেখানেই লাগাম টানতে কলকাতা পৌরনিগম কড়া মনোভব নিয়েই এগোতে চাইছে।
সম্প্রতি কলকাতার পুর-কমিশনার বিনোদ কুমার একটি নির্দেশিকা জারি করে ৷ সেই নির্দেশিকায় স্পষ্টতই বলা হয়েছে, ফুটপাথ দখলদারদের বিরুদ্ধে এবার কড়া অবস্থান নিতে চলেছে তারা ৷ প্রয়োজনে যারা ফুটপাথ দখল করে রয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হবে ৷ প্রয়োজনে কাঠামো ভেঙে ফেলে সেই জায়গা পুনরুদ্ধার করা হবে বলেও জানানো হয়োছে নির্দেশিকায়।
হকাররাজ ঠেকাতে তৈরি হয়েছে হকার আইন মাফিক টাউন ভেন্ডিং কমিটি। সেই কমিটি সমীক্ষা চালিয়ে প্রকৃত হকারদের হাতে বারকোড দেওয়া শংসাপত্র তুলে দেওয়ার কাজও চলছে। এর কারণ হিসাবে পৌরনিগমের দাবি, বেআইনি আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে সরকারি ফুটপাত যাতে কোনওভাবে হাত বদল না-হতে পারে সে কারণেই এই ব্য়বস্থা ৷
অন্যদিকে কোথায় হকার জোন এবং কোথায় নন-হকিং জোন হবে তাও নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে ৷ ধীরে ধীরে বিভিন্ন এলাকা ধরে তা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে টাউন ভেন্ডিং কমিটি ও কলকাতা পৌরনিগমের হকার পুনর্বাসন সংক্রান্ত বিভাগ। দোকানের ক্ষেত্রে প্লাস্টিক বা অন্য কোনও ধরনের ছাউনি নয়, নির্দিষ্ট লোহার কাঠামো দিয়ে টিনের ছাউনি দেওয়া এবং নির্দিষ্ট মাপ এই বিষয়গুলিতেই গুরুত্ব দিচ্ছে টাউন ভেন্ডিং কমিটি। তবে কলকাতা পৌরনিগমের কর্তাদের দাবি, এত কিছু করেও হকাররাজকে নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না ৷ বরং ক্রমশ তা বেড়েই চলেছে ৷
'টক টু মেয়রে' বাড়ির দরজা বা গেটের সামনে ফুটপাত দখল করা থেকে শুরু করে নির্দিষ্ট জায়গা থেকে অতিরিক্ত জায়গা দখল করে ফেলার মতো ফুটপাথ দখলদারি অভিযোগ মাঝেমধ্যেই উঠে আসে। এই পরিস্থিতি পরিবর্তনের জন্য় পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও সম্প্রতি যে নির্দেশিকা জারি হয়েছে কলকাতা পৌর-কমিশনার মারফৎ তাতে স্পষ্ট যে, আবেদন-নিবেদন বা বোঝাপড়ার রাস্তায় আর হাটবে না কলকাতা পৌরনিগম ৷ বরং এবার বেআইনি দখলদারদের মূল থেকে উৎখাত করতে চাইছে তারা ৷
আরও পড়ুন:মোদির 'নতুন ভারতে' গণতন্ত্রের নয়া অবনমন, রাহুলের সাংসদ পদ খারিজে বার্তা মমতার
কলকাতা পৌরনিগম সূত্রে খবর, নির্দেশিকায় বলা হয়েছে বেআইনিভাবে ফুটপাথ দখলদারদের বিরুদ্ধে এফআইআর করতে হবে। বিল্ডিং বিভাগের ডেমোলিশন স্কোয়ার ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মীরা বেআইন কাঠামো ভেঙে দেওয়ার কাজ করবে ৷ ফুটপাথ বেআইনি দখলদারদের বিরুদ্ধে এমন কঠিন মনোভাব অবশ্য় এর আগে দেখা যায়নি বলেই মত কর্তৃপক্ষের একাংশের।