পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

Doctor became Inventor: চিকিৎসক হলেন আবিষ্কর্তা ! চিকিৎসায় নয়া দিশা দেখাচ্ছে সুদীপ দাসের 'স্মুথ ফরেনবডি পুলার'

আবিষ্কারে নয়া দিশা দেখালেন চিকিৎসক সুদীপ দাস (Kolkata based doctor Sudip Das) । কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ইএনটি বিভাগের অধ্যাপকের আবিষ্কারে এবার অস্ত্রোপচার ছাড়াই বের করে আনা যাবে শ্বাসনালীতে আটকে যাওয়া ফরেনবডি ।

Etv Bharat
Etv Bharat

By

Published : Mar 4, 2023, 8:26 PM IST

নয়া দিশা দেখাচ্ছে সুদীপ দাসের 'স্মুথ ফরেনবডি পুলার'

কলকাতা, 4 মার্চ: কাক ডাকার সঙ্গে সঙ্গেই রোগীদের লম্বা লাইন । প্রত্যেকের রোগ আলাদা আলাদা । সেই রোগ শনাক্ত করে তার যথাযথ চিকিৎসা করা, এটাই একজন চিকিৎসকের রোচনামচা । তবে এর মাঝেও কুরে কুরে খেত ব্যর্থতার জ্বালা । সেই ব্যর্থতাকেই জয় করে নতুন যন্ত্রের হদিস দিলেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ইএনটি বিভাগের অধ্যাপক চিকিৎসক সুদীপ দাস (Kolkata based doctor Sudip Das) । কোনও শিশুর খাদ্যনালীতে যদি কোনও গোল বস্তু ঢুকে যায়, তবে কাটাছেঁড়া ছাড়াই সেই ফরেনবডিকে বের করে আনার যন্ত্র তৈরি করলেন চিকিৎসক । এই যন্ত্রের জেরে দেশ তথা রাজ্য চিকিৎসা বিজ্ঞানে একটা নতুন দিশা দেখালেন তিনি ।

2007 সালে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন সুদীপ দাস । তিনি জানান, যদি কারও শ্বাসনালী বা খাদ্যনালীতে গোলাকৃতির কিছু ঢুকে যায়, হয় অস্ত্রোপচার করে বা ওই বস্তুটাকে ঠেলে পেটের দিকে পাঠিয়ে দিতেন । ফলে রোগীদের মলের মাধ্যমে সেই বস্তুটা বেরিয়ে যেত । কারও ক্ষেত্রে তা পেটে গিয়ে আটকে যেত । তখন পেটের যন্ত্রণার পাশাপাশি বেশ কিছু সমস্যা দেখা দিত । যার ফলে তাকে ফের অস্ত্রোপচার করে পেট থেকে ওই বস্তুটা বার করে দিতে হত । এই সমস্যায় অনেকের মৃত্যু হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে ।

সুদীপ দাস বলেন, "2007 সালে যখন আমি এসএসকেএম হাসপাতালে কর্মরত, তখন একজন শিশুরোগী এই অবস্থায় এসেছিল । আমি এইভাবেই তার চিকিৎসা করি । তবে সে সুস্থ হলেও আমার নিজেকে ব্যর্থ মনে হয়েছিল ।" এই কেসের ঠিক কিছুদিনের মাথায় আবারও একজন রোগী এই ধরনের সমস্যা নিয়ে আসেন । ওই অপারেশন থিয়েটার থেকেই তিনি বেরিয়ে এসে অন্যান্য চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলেও কোনও সদুত্তর পাননি তিনি । ফলে পুরনো পন্থাতেই হয় তার চিকিৎসা ।

ফরেনবডি বার করার নতুন যন্ত্র

একদিন হস্টেলরুমে বন্ধুদের সঙ্গে গল্প করতে করতেই এই নতুন ভাবনা মাথায় আসে তাঁর । সম্পূর্ণ ভাবনাটা বাস্তবায়িত করার জন্য যোগাযোগ করেন যন্ত্র নির্মাণকারী সংস্থাদের সঙ্গে । সেখানেও একের পর এক বাধা কাটিয়ে অবশেষে একটি সংস্থার সঙ্গে কথা বলে তৈরি করলেন এই নতুন 'ফরশেপ', যার নাম-'দাসেস ইসোফেজিয়াল স্মুথ ফরেনবডি পুলার'।

কীভাবে কাজ করে এই যন্ত্র ?

এই যন্ত্র মুখ দিয়ে ঢোকানো হয় । যন্ত্রের সামনের দিকটা অনেকটা চামচের মত । সেটা দিয়ে আঁকশির মতন করে কোনও অস্ত্রোপচার না-করেই তুলে আনা যেতে পারে যেকোনও ফরেনবডি । প্রায় 45 সেন্টিমিটার লম্বা এটি । সামনের দিকে 90 ডিগ্রি বাঁকানো সম্ভব ।

যেহেতু এই কেস খুবই বিরল তাই 14 জনের উপর একটা ট্রায়াল চলে । কলকাতা আইপিজিএমআর ও বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজের যৌথ উদ্যোগে ট্রায়াল হয় । 2011-12 সাল নাগাদ তাঁর যন্ত্র সম্পূর্ণভাবে তৈরি হয় । সেই সময় স্টেট কনফারেন্সে এই জন্য একটি বিশেষ সম্মানও পেয়েছিলেন চিকিৎসক । তারপরেও যন্ত্রে বেশ কিছু মডিফিকেশন করা হয় । 2016 সালে পেটেন্টের জন্য প্রক্রিয়া শুরু করেন তিনি । চলতি বছর যা হাতে আসে । রাজ্যের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দফতরের পক্ষ থেকেও তাঁকে বিশেষভাবে সম্মানিত করেন মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস ।

আরও পড়ুন: বিশ্বের সবচেয়ে ছোট অ্যান্টেনা আবিষ্কার করে তাক লাগালেন বাঁকুড়ার বিজ্ঞানী

ABOUT THE AUTHOR

...view details