কলকাতা, 4 মার্চ: কাক ডাকার সঙ্গে সঙ্গেই রোগীদের লম্বা লাইন । প্রত্যেকের রোগ আলাদা আলাদা । সেই রোগ শনাক্ত করে তার যথাযথ চিকিৎসা করা, এটাই একজন চিকিৎসকের রোচনামচা । তবে এর মাঝেও কুরে কুরে খেত ব্যর্থতার জ্বালা । সেই ব্যর্থতাকেই জয় করে নতুন যন্ত্রের হদিস দিলেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ইএনটি বিভাগের অধ্যাপক চিকিৎসক সুদীপ দাস (Kolkata based doctor Sudip Das) । কোনও শিশুর খাদ্যনালীতে যদি কোনও গোল বস্তু ঢুকে যায়, তবে কাটাছেঁড়া ছাড়াই সেই ফরেনবডিকে বের করে আনার যন্ত্র তৈরি করলেন চিকিৎসক । এই যন্ত্রের জেরে দেশ তথা রাজ্য চিকিৎসা বিজ্ঞানে একটা নতুন দিশা দেখালেন তিনি ।
2007 সালে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন সুদীপ দাস । তিনি জানান, যদি কারও শ্বাসনালী বা খাদ্যনালীতে গোলাকৃতির কিছু ঢুকে যায়, হয় অস্ত্রোপচার করে বা ওই বস্তুটাকে ঠেলে পেটের দিকে পাঠিয়ে দিতেন । ফলে রোগীদের মলের মাধ্যমে সেই বস্তুটা বেরিয়ে যেত । কারও ক্ষেত্রে তা পেটে গিয়ে আটকে যেত । তখন পেটের যন্ত্রণার পাশাপাশি বেশ কিছু সমস্যা দেখা দিত । যার ফলে তাকে ফের অস্ত্রোপচার করে পেট থেকে ওই বস্তুটা বার করে দিতে হত । এই সমস্যায় অনেকের মৃত্যু হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে ।
সুদীপ দাস বলেন, "2007 সালে যখন আমি এসএসকেএম হাসপাতালে কর্মরত, তখন একজন শিশুরোগী এই অবস্থায় এসেছিল । আমি এইভাবেই তার চিকিৎসা করি । তবে সে সুস্থ হলেও আমার নিজেকে ব্যর্থ মনে হয়েছিল ।" এই কেসের ঠিক কিছুদিনের মাথায় আবারও একজন রোগী এই ধরনের সমস্যা নিয়ে আসেন । ওই অপারেশন থিয়েটার থেকেই তিনি বেরিয়ে এসে অন্যান্য চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলেও কোনও সদুত্তর পাননি তিনি । ফলে পুরনো পন্থাতেই হয় তার চিকিৎসা ।
একদিন হস্টেলরুমে বন্ধুদের সঙ্গে গল্প করতে করতেই এই নতুন ভাবনা মাথায় আসে তাঁর । সম্পূর্ণ ভাবনাটা বাস্তবায়িত করার জন্য যোগাযোগ করেন যন্ত্র নির্মাণকারী সংস্থাদের সঙ্গে । সেখানেও একের পর এক বাধা কাটিয়ে অবশেষে একটি সংস্থার সঙ্গে কথা বলে তৈরি করলেন এই নতুন 'ফরশেপ', যার নাম-'দাসেস ইসোফেজিয়াল স্মুথ ফরেনবডি পুলার'।