কলকাতা, 11 নভেম্বর: বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বন ৷ দুর্গা পুজোর রেশ কাটতে না কাটতেই এবার কালীপুজো নিয়ে মাতোয়ারা তিলোত্তমা ৷ কলকাতার অনেক জায়গাতেই কালীপুজোর বেশ সুদীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে ৷ তারই মধ্যে অন্যতম পাথুরিয়াঘাটা ব্যায়াম সমিতির পুজো ৷ প্রায় 96 বছর আগে 1928 সালে প্রথম শুরু হয় এই পুজো ৷
1908 সালে অনুশীলন সমিতির আওতায় তৈরি হয় এই ব্যায়াম সমিতি ৷ তখন গঙ্গার ঘাটে ছিল এই ক্লাব ৷ শোনা যায় এক সময় এই এলাকায় একটি বাড়িতে বাঘা যতীন আসতেন। বহুবার তিনি এসেছেন ছদ্মবেশে । এই ব্যায়াম সমিতির সঙ্গেও যোগ ছিল তাঁর ৷ কিন্তু অনুশীলন সমিতির বিপ্লবী কার্যকলাপের কথা সামনে আসতেই এই ক্লাবও বন্ধ করে দেওয়া হয় ৷ এরপর ফের 1924 সালে এই ক্লাবটি নতুন করে শুরু করেন অতুল কৃষ্ণ ঘোষ ৷ তিনি সরাসরি স্বদেশী নেতাদের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন ৷
1928 সালে তাঁর মৃত্যুর পর শুরু হয় কালীপুজো ৷ পুজোকে কেন্দ্র করে ফের একবার স্বদেশী কার্যকলাপে যুক্ত হয়ে পড়ে এই ব্যায়াম সমিতি ৷ 1930 সালে কলকাতার মেয়র থাকাকালীন সুভাষ চন্দ্র বসু এই পুজোর সম্পাদনার দায়িত্বভার গ্রহণ করেন ৷ তিনি এই সমিতির সভাপতিও ছিলেন ৷ নানাভাবে তিনি সমিতিকে সাহায্য করেন ৷ আসলে তাঁর লক্ষ্য পুজো ছিল না ৷ উদ্দেশ ছিল বৈপ্লবিক কাজে সহায়তা করা ৷ মহারাজা মনীন্দ্র চন্দ্রও একসময় এই পুজো দেখতে আসতেন ।
ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক কৃষ্ণেন্দু ভট্টাচার্য বলেন, "পরবর্তী সময় গঙ্গার ঘটে পুজো করতে মহিলাদের অসুবিধা হওয়ার জন্য বিনানি ভবনের কাছে এই পুজো শুরু হয় ৷ 1965 সালে এই জায়গা পরিবর্তন করা হয় ৷ পরে সেই জায়গা ফের পরিবর্তন হয় ৷ পুজো শুরু হয় 22 নম্বর যদুলাল মল্লিক রোডে। যদুলাল মল্লিকের জমিতে রামকৃষ্ণ এসছিলেন। সেই জমির একাংশের এই পুজো শুরু হয়। মায়ের পুজোর স্থান বদল হয়। পরে মুর্ত্তির রঙ বদল হয়। এক সময় প্রতিমার গায়ের রং ছিল কালো ৷ সাদা সোলার সাজ হতো । পরে বদলে হয় এই শ্যামা রূপ। একাধিক বার স্থান পরিবর্তন হলেও মূর্তির উচ্চতা একই থেকেছে মুকুট নিয়ে প্রায় ৩২ ফুটের বেশি।"