কলকাতা, 8 জুলাই : কখনও বিয়ের অনুষ্ঠানে নতুন পদ খাওয়ার আবদার । কখনও জন্মদিনে মোমের মূর্তিতে পেন গুঁজে দেওয়া । মুর্শিদাবাদের এক পরিবার তাঁর পুজোও করতেন । জ্যোতি বসু । আজ তাঁর 107 তম জন্মদিনে টুকরো টুকরো অনেক স্মৃতি ভেসে উঠছে রমলা চক্রবর্তীর কথায় । জ্যোতি বসুর মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ ক্রীড়া ও পরিবহন মন্ত্রী সুভাষ চক্রবর্তীর স্ত্রী রমলা চক্রবর্তী । দীর্ঘদিন জ্যোতি বসুর সঙ্গে পারিবারিক সম্পর্ক ছিল সুভাষ চক্রবর্তীর পরিবারের । জ্যোতিবাবু যখন রাজভবনে সপরিবারে থাকতেন সেই সময় থেকে । 11 বছর আগেও জ্যোতি বসুর শেষ জন্মদিন পালন করেছিলেন রমলা চক্রবর্তী । আজ নানা কথা ভিড় করে আসছে ।
মুর্শিদাবাদের এক ভদ্রমহিলার আসনে বহু দেবদেবীর সঙ্গে পূজিত হচ্ছেন পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু । তৎকালীন ক্রীড়া যুব কল্যাণ এবং পরিবহন দপ্তরের মন্ত্রী সুভাষ চক্রবর্তী বিশেষ কাজে মুর্শিদাবাদে গিয়ে দেখলেন এক মহিলা তাঁর ছোট্টো গোপালের সঙ্গে পাশের আসনে জ্যোতি বসুকে পুজো করছেন । গোপালের ভোগের সঙ্গে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রীকে মালায় চন্দনে ফুলে ভোগ নিবেদন করেছেন তিনি । রমলা চক্রবর্তীর কথায়, " ওই মহিলাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, আপনারা জ্যোতিবাবুকে পুজো করছেন কেন? পরে ওই মহিলা জানিয়েছিলেন, যিনি দুবেলা-দুমুঠো খাবার দিচ্ছেন, তিনি তো ভগবান । ওই ভদ্রমহিলার ছেলের জন্য এক টুকরো জমির ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন জ্যোতি বসু । ভূমি সংস্কারের আমূল পরিবর্তন এনে পশ্চিমবঙ্গে বহু গরিব মানুষের ভগবান হয়ে উঠেছিলেন তিনি ।"
ইন্দিরা ভবনে জন্মদিন পালনের কথা বলতে গিয়ে গলা জড়িয়ে এল রমলা দেবীর । বলেন, " এরকমই এক 8 জুলাই । জ্যোতিবাবুর জন্মদিনে ইন্দিরা ভবনে জ্যোতিবাবুরই মোমের মূর্তি তৈরি করে নিয়ে গেছিলাম আমরা । ইন্দিরা ভবনের বারান্দায় জ্যোতিবাবুর বসার চেয়ারের পাশে অবিকল জ্যোতিবাবুর আদলে তৈরি মোমের মূর্তি রাখা হয়েছিল । নিজের মূর্তি দেখে হতবাক তিনি । বললেন, আরে এ তো আমি । রমলা এই মোমের মূর্তিতে একটা জিনিসের অভাব রয়েছে । কী বলতো সেটা? সঙ্গে সঙ্গে সুভাষদা বললেন, জ্যোতিবাবু আপনি বলুন কী ঘাটতি রয়েছে । জ্যোতিবাবু স্বয়ং নিজের বাঁ দিকের বুক পকেট থেকে কলমটা তুলে মোমের মূর্তির পাঞ্জাবির বাঁদিকের পকেটে গুঁজে দিলেন । "