কলকাতা, ১ মার্চ : নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বিরোধী মিছিলে যোগ দেওয়ার পর পোল্যান্ডের এক পড়ুয়াকে ভারত ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হল। কলকাতার ফরেনার রিজ়িওনাল রেজিস্ট্রেশন অফিস এই নির্দেশ দেয়। ওই ছাত্রর নাম কামিল সিডসিনস্কি। তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক সাহিত্যের ছাত্র। একটি সর্বভারতীয় সংবাদসংস্থা সূত্রে এই খবর পাওয়া গেছে।
দিনকয়েক আগে কামিলকে FRRO-র কলকাতার অফিসে দেখা করতে বলা হয় । ২২ ফেব্রুয়ারি তিনি অফিসে গিয়ে দেখা করেন । সংবাদসংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, FRRO তাঁকে একটি নোটিস দেয় । ভারতে তিনি ছাত্র ভিসায় থেকে অনুপযুক্ত কাজ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে । নির্দেশিকা পাওয়ার 15 দিনের মধ্যে তাঁকে ভারত ছাড়তে বলা হয়েছে ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের একাংশ জানায়, গতবছর ডিসেম্বরে মৌলালিতে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বিরোধী মিছিল করেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বামপন্থী পড়ুয়ারা এবং কয়েকজন অধ্যাপক । কামিল সেই মিছিলে যোগ দিয়েছিলেন । এরপর স্থানীয় একটি সংবাদপত্র তাঁর সাক্ষাৎকার নেয় এবং তা প্রকাশ করে । যদিও রাজনীতির সঙ্গে তাঁর প্রত্যক্ষ যোগ নেই । তিনি মিছিলে যোগ দিয়ে ছবি তুলেছিলেন। সেই অংশগ্রহণেরই মাশুল কামিলকে চোকাতে হচ্ছে বলে দাবি ওই পড়ুয়াদের।
"সরকার বিরোধী" কাজ, বাংলাদেশি ছাত্রীকে ভারত ছাড়ার নির্দেশ কেন্দ্রের
তুলনামূলক সাহিত্যের ছাত্র কামিলের এবছর থার্ড সেমেস্টারের পরীক্ষা দেওয়ার কথা। এর আগে তিনি বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা নিয়ে পড়াশোনা করেছেন । সংশ্লিষ্ট সংবাদসংস্থার তরফে চেষ্টা করেও তাঁর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা যায়নি । যোগাযোগ করা যায়নি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস এবং রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসুকেও ।
কয়েকদিন আগে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বাংলাদেশ ছাত্রী আফসারা অনিকা মিমকে ভারত ছাড়ার নির্দেশ পাঠিয়েছিল FRRO । ফেব্রুয়ারির 14 তারিখে তাঁকে নির্দেশিকা পাঠানো হয় । সেখানে উল্লেখ ছিল, তিনি "সরকার বিরোধী" কাজ করেছেন যা তাঁর ভিসাবিরোধী । নির্দেশিকা পাঠানোর 15 দিনের মধ্যে তাঁকে ভারত ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল । তাঁর সহপাঠীরা জানিয়েছিলেন, আফসারা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন এর প্রতিবাদে যোগ দিয়েছিলেন । তার ছবি সোশাল মিডিয়ায় পোস্টও করেছিলেন । তারপরেই তাঁকে নির্দেশিকা পাঠায় কেন্দ্র ।
যদিও দুই পড়ুয়াই FRRO-র কাছে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়েছেন। ভবিষ্যতে তাঁরা এধরনের প্রতিবাদে শামিল হবেন না বলে কথাও দিয়েছেন। এনিয়ে অবশ্য শেষ সিদ্ধান্ত দিল্লি থেকে নেওয়া হবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে FRRO-র তরফে।