কলকাতা, 9 জানুয়ারি: স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের হাতে কলকাতা থেকে আইসিস জঙ্গি সন্দেহে ধৃত আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্র মহম্মদ সাদ্দাম ওরফে সাদ্দাম মালিক ওরফে আবদুল মালিক এবং সইদ আহমেদ মূলত সোশাল মিডিয়া বা সামাজিক মাধ্যমে নিজেদের পরিচয় গোপন রেখে বিভিন্ন উসকানিমূলক এবং হত্যাকাণ্ডের মতো ভিডিয়ো ভাইরাল করার কাজে নিয়োজিত ছিল । তাদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করার পর এই তথ্যই পেয়েছেন কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের গোয়েন্দারা (ISIS Suspected Terrorists in Kolkata) ।
এছাড়াও এই দুই জঙ্গি সন্দেহে ধৃত যুবকের কাছ থেকে বেশ কিছু সাংকেতিক বিবরণ পাওয়া গিয়েছে ৷ যার মধ্যে বেশ কিছু সাংকেতিক কথাবার্তা এখনও বোঝা সম্ভব হয়নি তদন্তকারীদের পক্ষে । এবার তা ল্যাবরেটরিতে পাঠানোর ব্যবস্থা করছে লালবাজার । মূলত জঙ্গি সন্দেহে ধৃত 2 যুবক শহরের নামি প্রতিষ্ঠান এবং সংস্থার সঙ্গে যুক্ত হয়ে যুবক-যুবতীদের ভারত বিরোধী মনোভাবে আকৃষ্ট করত এবং বেশ কয়েকজন যুবক-যুবতীকে তারা ইতিমধ্যেই বাইরের রাজ্যে জঙ্গি সংগঠনের কার্যকলাপে লিপ্ত হওয়ার জন্য পাঠিয়েছে বলেও জানা গিয়েছে ।
আরও পড়ুন :কর্ণাটকে জঙ্গি সন্দেহে গ্রেফতার কংগ্রেস নেতারা ছেলে
এই বিষয়ে কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন যে, রাজস্থানের উদয়পুরে যেভাবে এক দর্জিকে গলা কেটে খুন করা হয়েছিল এবং সেই ছবি সামাজিক মাধ্যমে নিমেষেই ভাইরাল করা হয়েছিল ঠিক সেই রকম প্ল্যানিং চালাচ্ছিল সাদ্দাম ও সইদ ৷ তাদের উদ্দেশ্য ছিল, বিভিন্ন সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা এবং নৃশংস হত্যাকাণ্ড যার সঙ্গে এই রাজ্য তথা দেশের কোনও সম্পর্ক নেই সেই সকল ভিডিয়োকে সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল করে দেশ এবং রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলাকে উত্তপ্ত করা ।
জানা গিয়েছে, 2016 সালে সাদ্দাম ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করার পর একাধিক জঙ্গি সংগঠনের নেতা-নেত্রীদের সঙ্গে আড়ালে যোগাযোগ রাখত । তারপরেই পাকাপাকিভাবে সে জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়ে । ধৃতদের মোবাইল ঘেঁটে তদন্তকারী আধিকারিকরা 20-টিরও বেশি টেলিগ্রাম চ্যানেলের যোগ পেয়েছেন । জঙ্গি সন্দেহে ধৃত এই দুই যুবক পাকিস্তান এবং সৌদি আরবের একাধিক জঙ্গি সংগঠনের নেতা-নেত্রীদের সঙ্গে নিয়মিত টেলিগ্রামের মাধ্যমে যোগাযোগ রাখত এবং তাদের থেকে অ্যাসাইনমেন্ট পেয়ে তা এই রাজ্য তথা দেশের উপর প্রয়োগ করায় এদের একমাত্র লক্ষ্য ছিল ।
গত শনিবার আইএসআইএস জঙ্গি সন্দেহে এই দুই যুবককে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের গোয়েন্দারা । দু'জনেই হাওড়ার টিকিয়াপাড়া এলাকায় একটি ভাড়া বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে আত্মগোপন করেছিল বলে পুলিশের অভিযোগ । কলকাতার খিদিরপুরে একটি গোপন বৈঠক করার আগে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ তাদের গ্রেফতার করে । এরপর তাদের সঙ্গে নিয়ে হাওড়া টিকিয়াপাড়ার বাড়িতে গিয়ে বিপুল পরিমাণ সামগ্রী উদ্ধার করে ৷
আরও পড়ুন :আইএস জঙ্গি সন্দেহে গ্রেফতার আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র