পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

writers building : ঐতিহাসিক রাইটার্স বিল্ডিং কি তার গুরুত্ব হারাচ্ছে?

একসময় মহাকরণ মন্ত্রী, আমলা, সাধারণ মানুষে গমগম করত ৷ সেইসঙ্গে কড়া নিরাপত্তা ৷ কিন্তু, এখন কোথায় কী ? 2013 সাল থেকে সংস্কার চলছে ৷ এখনও পর্যন্ত 50 শতাংশ কাজ শেষ হয়নি ৷ বর্তমানে রাজ্য সরকারের সদর দফতরের ঠিকানা নবান্ন ৷ মাত্র কয়েকটি বিভাগের কাজ এখান থেকে হয় ৷

Writers' Building
রাইটার্স বিল্ডিং

By

Published : Aug 10, 2021, 10:34 PM IST

কলকাতা, 10 অগস্ট : পরাধীন ভারতের নানা ইতিহাসের সাক্ষী রাইটার্স বিল্ডিং । স্বাধীন ভারতে কংগ্রেস থেকে যুক্তফ্রন্ট, পরে বামফ্রন্ট সরকারের যাবতীয় কাজকর্ম পরিচালনা হত এখান থেকে। 2011 সালে রাজ্যে ঐতিহাসিক পালাবদল ঘটে ৷ দীর্ঘ 34 বছরের বাম জমানার অবসান ঘটে তৃণমূল সরকারের হাত ধরে ৷ এই পরিবর্তনের পর তৃণমূল কংগ্রেসের মন্ত্রিসভা সামান্য কিছুদিন মহাকরণে চলেছিল । এরপর রাইটার্স বিল্ডিং সংস্কারের উদ্যোগ নেন তিনি । এরপরই রাজ্য মন্ত্রিসভার দফতর নবান্নে স্থানান্তরিত করেন । বর্তমানে মহাকরণে সংস্কারের কাজ চলছে । ইতিমধ্যেই আট বছর পার হলেও সংস্কারের প্রায় 50 শতাংশ কাজও শেষ হয়নি রাইটার্সে ।

ইতিহাস বলছে, 1776 সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ক্লার্ক বা রাইটারদের থাকার জন্য লালদিঘি পাড়ে তৈরি হয় এই ভবন। নাম দেওয়া হয় রাইটার্স বিল্ডিং। নির্মাণকাজ চলেছিল 1777 থেকে 1780 সাল পর্যন্ত । পরে ধাপে ধাপে 1821, 1889 এবং 1906 সালে এর সম্প্রসারণ করা হয় । স্বাধীনতার পর থেকে রাজ্য সরকারের সদর দফতর ছিল এই ভবন । 2013 সালের 8 অগস্ট তা স্থানান্তরিত হয় গঙ্গার ওপারে নবান্নে। তখন থেকেই মহাকরণে শুরু হয় সংস্কারের কাজ ।

রাইটার্স বিল্ডিং

এক সময়ে মহাকরণে প্রবেশের অনুমতি পেতে কালঘাম ছুটত সাধারণ মানুষের। নিরাপত্তার কড়াকড়িতে মন্ত্রীর সুপারিশ ছাড়া সাধারণ মানুষের প্রবেশে অনুমতি মিলত না । বর্তমানে ঐতিহাসিক এই রাইটার্স বিল্ডিংয়ে আগের মতাে নেই কড়াকড়ি, নেই পুলিশের কড়া নজরদারিও। অধিকাংশ গেটই বন্ধ রয়েছে । কেবলমাত্র 6 নম্বর গেট দিয়ে মন্ত্রী থেকে আমলা কিংবা সাধারণ মানুষের প্রবেশের অনুমতি রয়েছে। তবে মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয় কিংবা অন্যান্য মন্ত্রী না থাকায় কড়াকড়ি অনেকটাই শিথিল হয়েছে। বর্তমানে সংখ্যালঘু মন্ত্রীর দফতর নবান্নে থাকলেও বেশিরভাগ সময় দেন রাইটার্সে । সাধারণ মানুষের অভাব-অভিযােগের বিষয়গুলি সেখানে বসেই সমাধানের চেষ্টা করেন । রাইটার্সে বসেন রাজ্যের আরও এক মন্ত্রী মলয় ঘটক । তিনি রাজ্যের আইনমন্ত্রী। নিয়মিত রাইটার্স বিল্ডিংয়ে বসেন । এ ছাড়াও ল ' ডিপার্টমেন্টের একটি বড় অংশ এখনও মহারণে রয়েছে ।

আরও পড়ুন, Electoral Bonds : ইলেক্টরাল বন্ডের বাজারেও গেরুয়া ঝড়, বিজেপির ঘরে 75 শতাংশ টাকা

পরিবহণ মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, পুর ও নগরােন্নয়ন মন্ত্রী থাকাকালীন সপ্তাহে দু’দিন মহাকরণে বসতেন । তিনি এখন পরিবহণ দফতরের মন্ত্রী হওয়ার পরও রাইটার্স বিল্ডিংয়েই বসেন । সপ্তাহে 2 দিন তিনি এখান থেকে নানা কাজ করেন । পৌরসভা, পরিবহণ-সহ নানা গুরুত্বপূর্ণ কাজ তিনি এখনও রাইটার্স বিল্ডিং থেকেই দেখাশােনা করেন । তিনি যে সমস্ত দিনে রাইটার্স বিল্ডিংয়ে বসেন, জনসমাগম হয় বেশ ভাল । রাজ্য শ্রম দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী বেচারাম মান্না নিয়মিত রাইটার্সে বসেন । রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এখান থেকে কিছু কাজকর্ম করেন । ঐতিহাসিক রাইটার্স বিল্ডিংয়ে রাজ্যের আমলাদের সার্ভিস রেকর্ড ডিপার্টমেন্টের সমস্ত কাজ এখনও এখান থেকেই হয় । এ ছাড়াও রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ দফতর পূর্ত বিভাগের কাজ এই রাইটার্স বিল্ডিং থেকেই হচ্ছে ।

তবে প্রায় আড়াইশাে বছরের পুরানাে ঐতিহাসিক এই লালবাড়ির সংস্কার এখনও কেন অসম্পূর্ণ ? পুরনাে সেই ছন্দ আদৌ কি ফিরবে ব্রিটিশদের তৈরি লালবাড়িতে ? হয়তাে তার জন্য আরও বেশ কয়েক বছর অপেক্ষা করতে হবে ।

ABOUT THE AUTHOR

...view details