কলকাতা, 10 অগস্ট : পরাধীন ভারতের নানা ইতিহাসের সাক্ষী রাইটার্স বিল্ডিং । স্বাধীন ভারতে কংগ্রেস থেকে যুক্তফ্রন্ট, পরে বামফ্রন্ট সরকারের যাবতীয় কাজকর্ম পরিচালনা হত এখান থেকে। 2011 সালে রাজ্যে ঐতিহাসিক পালাবদল ঘটে ৷ দীর্ঘ 34 বছরের বাম জমানার অবসান ঘটে তৃণমূল সরকারের হাত ধরে ৷ এই পরিবর্তনের পর তৃণমূল কংগ্রেসের মন্ত্রিসভা সামান্য কিছুদিন মহাকরণে চলেছিল । এরপর রাইটার্স বিল্ডিং সংস্কারের উদ্যোগ নেন তিনি । এরপরই রাজ্য মন্ত্রিসভার দফতর নবান্নে স্থানান্তরিত করেন । বর্তমানে মহাকরণে সংস্কারের কাজ চলছে । ইতিমধ্যেই আট বছর পার হলেও সংস্কারের প্রায় 50 শতাংশ কাজও শেষ হয়নি রাইটার্সে ।
ইতিহাস বলছে, 1776 সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ক্লার্ক বা রাইটারদের থাকার জন্য লালদিঘি পাড়ে তৈরি হয় এই ভবন। নাম দেওয়া হয় রাইটার্স বিল্ডিং। নির্মাণকাজ চলেছিল 1777 থেকে 1780 সাল পর্যন্ত । পরে ধাপে ধাপে 1821, 1889 এবং 1906 সালে এর সম্প্রসারণ করা হয় । স্বাধীনতার পর থেকে রাজ্য সরকারের সদর দফতর ছিল এই ভবন । 2013 সালের 8 অগস্ট তা স্থানান্তরিত হয় গঙ্গার ওপারে নবান্নে। তখন থেকেই মহাকরণে শুরু হয় সংস্কারের কাজ ।
এক সময়ে মহাকরণে প্রবেশের অনুমতি পেতে কালঘাম ছুটত সাধারণ মানুষের। নিরাপত্তার কড়াকড়িতে মন্ত্রীর সুপারিশ ছাড়া সাধারণ মানুষের প্রবেশে অনুমতি মিলত না । বর্তমানে ঐতিহাসিক এই রাইটার্স বিল্ডিংয়ে আগের মতাে নেই কড়াকড়ি, নেই পুলিশের কড়া নজরদারিও। অধিকাংশ গেটই বন্ধ রয়েছে । কেবলমাত্র 6 নম্বর গেট দিয়ে মন্ত্রী থেকে আমলা কিংবা সাধারণ মানুষের প্রবেশের অনুমতি রয়েছে। তবে মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয় কিংবা অন্যান্য মন্ত্রী না থাকায় কড়াকড়ি অনেকটাই শিথিল হয়েছে। বর্তমানে সংখ্যালঘু মন্ত্রীর দফতর নবান্নে থাকলেও বেশিরভাগ সময় দেন রাইটার্সে । সাধারণ মানুষের অভাব-অভিযােগের বিষয়গুলি সেখানে বসেই সমাধানের চেষ্টা করেন । রাইটার্সে বসেন রাজ্যের আরও এক মন্ত্রী মলয় ঘটক । তিনি রাজ্যের আইনমন্ত্রী। নিয়মিত রাইটার্স বিল্ডিংয়ে বসেন । এ ছাড়াও ল ' ডিপার্টমেন্টের একটি বড় অংশ এখনও মহারণে রয়েছে ।