পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

By

Published : May 29, 2021, 5:57 PM IST

ETV Bharat / state

ক্ষুদ্র শিল্প ও শ্রমজীবীদের জন্য কঠিন সময়, উত্তরণের পথ খুঁজছে রাজ্য

গত বছর লকডাউনে কঠিন সময় কেটেছে পরিযায়ী শ্রমিকদের ৷ এক বছর পরও খেপে খেপে ফের লকডাউন চলছে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে ৷ পশ্চিমবঙ্গেও চলছে কড়া করোনা বিধি-নিষেধ, যা কার্যত লকডাউনের সমান ৷ এই অবস্থায় এই সমস্ত কাজ হারানো মানুষগুলির জন্য ঠিক কী পদক্ষেপ করা হচ্ছে তা জানাতে না পারলেও সরকারের বিভিন্ন বিভাগ, দফতর বা সংগঠনের প্রতিনিধিরা জানাচ্ছেন তাঁরা এই অসহায় মানুষের পাশে আছেন ৷ এই কঠিন পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের পথ খুঁজছেন তাঁরা ৷

পরিযায়ী শ্রমিক
পরিযায়ী শ্রমিক

কলকাতা, 29 মে : 'কেরল থেকে বেলপাহাড়ি/ আমার গাঁয়ের বসতবাড়ি/ পায়ে হেঁটে তার অনেক দিনের পথ...' ইউটিউবে ইদানিং শোনা যাচ্ছে এই গান ৷ গানের মূল প্রতিপাদ্য পরিযায়ী শ্রমিকদের হয়রানি ৷ গত বছর লকডাউনে পরিযায়ী শ্রমিকদের কথা মনে আছে সকলেরই ৷ মাইলের পর মাইল হেঁটে তাঁরা রওনা হয়েছিলেন বাড়ির দিকে । কারো কারো আবার বাড়ি ফেরা হয়নি । বেঘোরে প্রাণ দিতে হয়েছিল রেললাইনে, পথদুর্ঘটনায় । অথবা সেই ছবিটা যেখানে ক্লান্ত মা বাক্সের উপরে করে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন ঘুমন্ত বাচ্চাকে ৷ গত বছরের এই ছবি এখনও জ্বলজ্বল করছে ৷ গোটা একটি বছর কেটে গেলেও ৷

বছর ঘুরে আবার লকডাউন পরিস্থিতি বিভিন্ন রাজ্যে । সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই করোনার দ্বিতীয় ঝড় সামলাতে কার্যত লকডাউনেরই বিধি-নিষেধের পথে হেঁটেছে রাজ্য সরকার । এই অবস্থাতেই প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে কাজ হারানো ওই সমস্ত মানুষের ভাগ্য ।

গতবছর রাজ্য সরকারের তরফ থেকে এই পরিযায়ী শ্রমিকদের নথিভুক্তিকরণের জন্য একটা প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছিলেন । রাজ্যের বাইরে কাজ করতে যাওয়া মানুষের একটা তথ্যপঞ্জি তৈরি হবে । প্রয়োজনে কীভাবে তাঁদের রাজ্যের বিভিন্ন কাজে লাগানো যায় তার চেষ্টা করা হবে । ঢাক-ঢোল পিটিয়ে সেই কাজ শুরু করেছিল রাজ্যের শ্রম দফতর ।

ক্ষুদ্র শিল্প ও শ্রমজীবীদের জন্য কঠিন সময়, উত্তরণের পথ খুঁজছে রাজ্য

কিন্তু পরিতাপের বিষয়, রাজ্যের নয়া শ্রমমন্ত্রী বেচারাম মান্নার কাছে এবিষয়ে কোনও তথ্য নেই । সে কারণেই কার্যত লকডাউন পরিস্থিতির মধ্যে রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিকদের প্রকৃত অবস্থা কী সরকারের তা অজানা । আজও সরকারের ঘরে রাজ্যে নথিভুক্ত পরিযায়ী শ্রমিকের সংখ্যা কত সে সংখ্যা স্পষ্ট করে বলতে পারছেন না বর্তমান শ্রমমন্ত্রী । যদিও সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত হিসাবে মন্ত্রীকে খুব একটা দোষও দেওয়া যায় না । তবে তিনি জানিয়েছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিক তথা খেটে খাওয়া মানুষ কী অবস্থায় রয়েছেন তার সমীক্ষা শুরু হয়েছে । এই সমীক্ষার ফল হাতে পাওয়ার পর এবিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে ।

যদিও রাজ্যের শাসকদল বর্তমান করোনা বিধি-নিষেধ চলাকালীন শ্রমজীবী মানুষ অভুক্ত আছেন সেকথা মানছে না । তবে তাঁদের একটা অংশের আয়ের সংস্থান যে সংকটের মধ্যে পড়েছে তা মেনে নিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসির সভানেত্রী তথা সাংসদ দোলা সেন । তিনি জানিয়েছেন, গতবছর যে লকডাউন ঘোষণা হয়েছিল সে সময় যাতে রাজ্যের খেটে খাওয়া মানুষ বা পরিযায়ী শ্রমিকরা অভুক্ত না থাকেন তার জন্য বিনামূল্যে রেশন দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । তৎকালীন পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য প্রকল্পও এনেছিল রাজ্য সরকার । এবার তার সঙ্গে বাড়তি সুবিধা হিসাবে আগামী পয়লা জুন থেকে বাড়ির মহিলারা 500 টাকা করে প্রতিমাসে পাবেন । এতে সাধারণ শ্রমজীবী মানুষের সামান্য হলেও সুবিধা হবে ।

আসলে গত বছর থেকে একটা বড় সময় লকডাউন যেকোনও শিল্পের জন্য কঠিন সময় হয়ে দাঁড়িয়েছে । পশ্চিমবঙ্গও তার বাইরে নয় । কিন্তু এই কঠিন সময়ে বিকল্প দিশা খুঁজে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন অনেকেই । রাজ্য সরকার এই অবস্থায় তাঁদের পাশে আছে । অন্তত সেই কথাই বলছেন রাজ্যের ক্ষুদ্র, মাঝারি ও কুটির শিল্প দফতরের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা । তিনি বলেছেন, "এই সময়টা কঠিন কিন্তু সাধারণ মানুষ এবং আমাদের হাতে হাত মিলিয়ে এই কঠিন পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার রাস্তা খুঁজতে হবে । লকডাউন বা আপাত লকডাউন যাই বলুন না কেন, আমরা মানুষের পাশেই আছি । আজ এই অবস্থা থেকে উত্তরণের চেষ্টা করছি ।"

আরও পড়ুন : সাংগঠনিক শক্তি বাড়াতে 5 জুন বর্ধিত কোর কমিটির বৈঠক ডাকলেন মমতা

ABOUT THE AUTHOR

...view details