কলকাতা, 1 জুলাই: একইসঙ্গে দু’টি পেশার সঙ্গে যুক্ত থাকা অপ্রত্যাশিত ঘটনা নয় ৷ গায়ক-ইঞ্জিনিয়র, অভিনেতা-ইঞ্জিনিয়র, গায়ক-নায়কের পাশাপাশি ডাক্তার-অভিনেতার সংখ্যাও টলিউডে নেহাত কম নয় ৷ ডাক্তারির মতো একটি পেশা সামলে কীভাবে বিনোদন জগৎকে সমৃদ্ধ করেন তাঁরা ! আজ জাতীয় চিকিৎসক দিবসে তেমনি কয়েকজন ডাক্তার-অভিনেতার জীবনের কথা শুনল ইটিভি ভারত ৷
এই প্রসঙ্গে প্রথমেই আসে যাঁর কথা, তিনি টলিউডের প্রবাদপ্রতিম অভিনেতা শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায় ৷ বাবার ইচ্ছেতে ডাক্তারি পড়েছিলেন অভিনেতা ৷ তবে, শুরু থেকেই চেয়েছিলেন অভিনেতা হতে ৷ আর সেটাই হয়েছেন ৷ পাশাপাশি চলত কমবেশি প্র্যাকটিস ৷ প্রথমে সিভিল ডিফেন্সে তারপর কলকাতা পৌরনিগমে যোগ দেন কর্মসূত্রে ৷ এমবিবিএস ডাক্তারের উল্লেখযোগ্য ছবির মধ্যে রয়েছে 'ছদ্মবেশী', 'চিড়িয়াখানা', 'হংস মিথুন', 'চৌরঙ্গী', 'অরণ্যের দিনরাত্রি', 'কুহেলি', 'অমরসঙ্গী', 'দহন', 'আবার অরণ্যে', 'আপন পর'।
তেমনি বর্তমানে অভিনয়ের পাশাপাশি ডাক্তার এমন ব্যক্তিত্ব টালিগঞ্জে অনেক আছেন ৷ তাঁদের মধ্যে একজন হলেন, ডা: দীপান্বিতা হাজারি ৷ ইনি পেশায় স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ হলেও সমান দক্ষতার সঙ্গে চালিয়ে যাচ্ছেন সিনেমা, সিরিয়াল এবং মডেলিং ৷ এক স্বনামধন্য মহিলা পত্রিকায় এক সময় নিয়মিত লিখতেন তিনি ৷ এহেন চিকিৎসক ইটিভি ভারতকে বলেন, "আমার মনে হয় নিষ্ঠা আর ভালোবাসা থাকলে যে কোনও কাজই করা সম্ভব ৷ আমার কোনও পরিকল্পনাই ছিল না অভিনয় কিংবা মডেলিং করার ৷ একটি ম্যাগাজিনে আমি মেডিক্যাল জার্নালিজম করতাম ৷ অপর্ণা সেন সম্পাদক ছিলেন ৷’’
তিনি বলেন, ‘‘প্রচ্ছদ কাহিনি জমা দিয়ে আসার পর ফোন আসে আমাকেই মডেল হতে হবে ৷ আমি প্রথমে রাজি হইনি ৷ কেননা আমি তখন একটি হাসপাতালের প্রশাসনিক পদে কর্মরত ৷ সেখানকার অনুমতি দরকার ৷ আবার রিনা দি'কে মুখের উপর না বলাও কঠিন ৷ এরপর অফিস থেকে অনুমতি পেলাম ৷ মডেলিংটা করলাম ৷ তারপর থেকে আজ অবধি তো কাজ চলছেই সিনেমা, সিরিয়াল, বিজ্ঞাপনে ৷ হাসপাতালের চাকরি থেকে অবসর নিয়েছি ঠিকই ৷ ডাক্তারিটা বজায় রেখেছি আজও ৷ অভিনয়টাও চলছে ৷ এই জগৎ থেকেও অনেককিছুই শিখলাম ৷ আমার একটি বুটিকও আছে।"
দীপান্বিতা হাজারি পশ্চিমবঙ্গ মহিলা কমিশনের সদস্যাও বটে ৷ মাত্র 21 বছর বয়সে বিয়ে হয় তাঁর ৷ এর পরেই পাশ করেন ডাক্তারি ৷ সামাজিক এবং পারিবারিক নানান প্রতিকূলতা সামলে আজ তিনি সফল চিকিৎসক ৷ ডাক্তার যেদিন অভিনেত্রী হলেন, সেদিন ডাক্তার বন্ধুদের মধ্যে উঠেছিল গেল গেল রব ৷ আজ তাঁরাই গর্ব করেন তাঁকে নিয়ে ৷
আরও পড়ুন:সফল ফুসফুস প্রতিস্থাপনে নবজীবন পেল কিশোর, নজির গড়ল মেডিকা হাসপাতাল
ডা: অমিতাভ ভট্টাচার্য নাক, কান, গলা বিশেষজ্ঞ ৷ তিনি একাধারে লেখক এবং অভিনেতা ৷ নাটক, থিয়েটার, সিনেমা এবং সিরিয়াল সর্বত্র তাঁর অবাধ বিচরণ ৷ নেগেটিভ এবং পজিটিভ সবরকম রোলেই সিদ্ধহস্ত তিনি ৷ নাটকের দল পরিচালনা করেন ডাক্তারির পাশাপাশি ৷ ইটিভি ভারতকে বলেন, "ডাক্তারের অনেক আগে আমি অভিনেতা ৷ আমি এমন বিভাগের ডাক্তার হতে চেয়েছিলাম যে ডাক্তারির পাশাপাশি আমি অভিনয়টাও করতে পারব ৷ আর তাই আমি ইএনটি ৷ ফলে চাপটা অনেকটা কম ৷ তাই দুই দিক ব্যালান্স করতে পেরেছি ৷ এক্ষেত্রে দুই দিকের প্রতি তীব্র ভালোবাসা থাকাও জরুরি ৷"