কলকাতা, 14 ডিসেম্বর: বগটুই কাণ্ডে (Bogtui Massacre) প্রধান অভিযুক্ত লালন শেখের অস্বাভাবিক মৃত্যুর (Lalan Sheikh Death) তদন্তে আদালতের নির্দেশ ছাড়া সিবিআই (CBI) অফিসারদের বিরুদ্ধে কোনও কঠোর পদক্ষেপ করতে পারবে না সিআইডি (CID) ৷ বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত এই নির্দেশ দিয়েছেন ৷ একই সঙ্গে তিনি লালন শেখের মৃতদেহের দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন ৷
একই সঙ্গে আদালতের নির্দেশ, লালন শেখের মৃত্যুর ঘটনায় আপাতত সিআইডি তদন্ত চালিয়ে যাবে । সমস্ত তদন্তের ভিডিয়োগ্রাফি করতে হবে । লালন শেখের মৃতদেহের দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত করতে হবে এইমস কল্যাণীতে । তবে এর জন্য অনুমতি নিতে হবে লালনের স্ত্রীর ৷
আদালতের আরও নির্দেশ, এই মামলায় সব পক্ষের বক্তব্য শোনা দরকার । কিন্তু সিবিআই অভিযোগকারীকে মামলায় যুক্তই করেনি । লালন শেখের স্ত্রী রয়েছে । লালন শেখের স্ত্রীর বক্তব্য শোনা দরকার । তাঁকে মামলায় যুক্ত করা হয়নি কেন, জানতে চান বিচারপতি । লালন শেখের স্ত্রীকে যুক্ত করতে হবে মামলায়, এমনই নির্দেশ দিয়েছে আদালত ।
এই মামলায় সিবিআইয়ের তরফে অনুমান করা হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জন্য এফআইআর করা হয়েছে, যা যুক্তিযুক্ত নয় । এদিন সিবিআইয়ের তরফে শুনানিতে বলা হয়, লালন শেখের আত্মহত্যার পর সুশান্ত ভট্টাচার্য, স্বরূপ দে নামে দুই সিবিআই অফিসারের নামে এফআইআর করা হয়েছে ৷ তাঁদের সঙ্গে বগটুই মামলার যোগ নেই । তাঁরা গরুপাচার মামলায় তদন্ত করছেন ৷
সিবিআইয়ের তরফে জানানো হয়, তারা এখন এই মামলা দিল্লিতে সরিয়ে নিয়ে যেতে চায় । বগটুই গ্রামে ভয়ংকর ঘটনা ঘটেছিল । এই নারকীয় ঘটনার দেশব্যাপী প্রভাব রয়েছে । দীর্ঘদিন পালিয়ে বেড়াচ্ছিল অভিযুক্ত । 3 ডিসেম্বর তাকে গ্রেফতার করা হয় । 12 তারিখ সে আত্মহত্যা করে । গামছা এবং অন্তর্বাস পরে সে বাথরুমে যায় । সেখানেই গামছা দিয়ে ঝুলে পড়ে । সঙ্গে সঙ্গে তাকে রেসকিউ করার চেষ্টা করা হয় । তারপর হাসপাতালে পাঠানো হয় ময়নাতদন্তের জন্য । সিবিআই যেহেতু গুরুত্বপূর্ণ অনেক মামলায় তদন্ত করছে, সেই কারণে সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে প্রতিহিংসার পন্থা নেওয়া হয়েছে, যাতে তারা সিরিয়াসলি তদন্ত না করে ।
এদিকে রাজ্যের তরফে আইনজীবী অনির্বাণ রায় প্রশ্ন তোলেন, সিবিআই কি এই ভাবে মামলা করতে পারে ? নাকি যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁদের মামলা করার কথা ? কেন এই মামলার তদন্ত স্থানান্তর করা হবে সে ব্যাপারে কোনো কিছু উল্লেখ নেই মামলায় । ধরে নেওয়া গেল সিআইডি অত্যন্ত খারাপ তদন্ত করে । কিন্তু সেই বক্তব্য কোথায় মামলায় ?
এছাড়া রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল বলেন, ‘‘সিবিআই হাইকোর্টে একাধিক রিপোর্ট দিয়েছে তদন্তের । কিন্তু কোথাও বলা হয়নি, তাদের তদন্তে বাধা দেওয়া হচ্ছে । অনেক মামলা সিট-কে দিয়েছে তারা । এখন হঠাৎ করে তাদের কেন তদন্ত স্থনান্তর করার প্রয়োজন পড়ছে ? দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেওয়া হোক লালন শেখের দেহের ।
তার পরই দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেয় আদালত ৷ একই সঙ্গে এই মামলার বিস্তারিত শুনানি প্রয়োজন বলে আদালত জানিয়েছে । আগামী বুধবার ফের শুনানির জন্য রাখা হল এই মামলা । তার আগে যত দ্রুত সম্ভব দেহের ময়নাতদন্তের নির্দেশ দিয়েছে আদালত ।
আরও পড়ুন:'আত্মহত্যা করেছে লালন শেখ', হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়ে দাবি সিবিআইয়ের