পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

দাবিদাওয়া নিয়ে প্রার্থীদের দ্বারে যাবেন যৌনকর্মীরা - kolkata

"আমরাও এই সমাজের অঙ্গ। তাহলে আমাদের কষ্টের কথা কেন কেউ ভাববে না। আমরা তো কোনও চুরি, ছিনতাই করছি না। তাহলে আমরা কেন সমাজে স্বীকৃতি পাব না।" এইকথা বলেন সোনাগাছির যৌনকর্মীরা।

প্রাক্তন যৌনকর্মী বিশাখা নস্কর

By

Published : Apr 9, 2019, 3:24 PM IST

Updated : Apr 9, 2019, 3:34 PM IST


কলকাতা, 9 এপ্রিল : এবার নিজেদের দাবিদাওয়া নিয়ে সোনাগাছির যৌনকর্মীরা রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের দ্বারে যাবেন। তাঁরা বলেন, "আমাদের দাবি না মানলে প্রতিটি ভোট পড়বে NOTA-য়।" কোনও প্রার্থীকে পছন্দ না হলে ভোটাররা NOTA (None of the above)-য় ভোট দিতে পারেন।

পৃথিবীর প্রাচীনতম পেশাগুলির মধ্যে যৌন ব্যবসা অন্যতম। যৌনকর্মীদের দাবি, এই পেশার স্বীকৃতি দিতে হবে। আর তাই তাঁরা নিজেদের দাবি পূরণের জন্য রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের সঙ্গে দেখা করবেন। কারণ, নির্বাচনের দামামা বেজে ওঠা মাত্রই সবকটি রাজনৈতিক দল একেবারে কোমর বেঁধে মাঠে নেমে পড়েছে। প্রচার কাজ চলছে পুরো দমে। জয়ী হলে সাধারণ মানুষের জন্য কে কী করবেন তাও যেমন বলছেন আবার অন্য দিকে আমজনতার বিভিন্ন ক্ষোভের কথাও শুনছেন খুব মন দিয়ে। প্রতি পাঁচ বছর অন্তর নির্বাচনে এক সরকার আসে, এক সরকার চলে যায়। তবুও যৌনকর্মীদের অবস্থার কোনও বদল হয় না। সমাজের একেবারে প্রান্তিক মানুষ এই যৌনকর্মীরা। নামেই কর্মী। আজ পর্যন্ত কর্মী বলে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি।

ভিডিয়োয় শুনুন বক্তব্য

এইবছর দুর্বারের সঙ্গে যোগ দিয়েছে অল ইন্ডিয়া নেটওয়ার্ক অফ সেক্স ওয়ার্কার্স। দুর্বার মহিলা সমন্বয় কমিটির মুখ্য উপদেষ্টা চিকিৎসক স্বরোজিৎ জানা বলেন, "যৌনকর্মীদের পাশে প্রার্থীরা রয়েছেন কি না সেই বিষয় নিয়ে মূলত বৈঠক করা হবে। দাবিগুলোর পক্ষে যাঁরা রয়েছেন তাঁদের সই সংগ্রহ করা হবে। শ্রম দপ্তরে পেশার যে তালিকা রয়েছে সেখানে যৌন পেশাকে স্থান দিতে হবে। আমাদের দেশে যে আইনটির দ্বারা যৌন পেশায় যুক্ত মানুষদের নিয়ন্ত্রণ করা হয় সেটি হল ইম্মরাল ট্রাফিক প্রিভেনশন অ্যাক্ট (আইটিপিএ)। এই আইনের বেশ কয়েকটি ধারা যৌনকর্মী ও তাঁদের সন্তানদেরও অন্যদের থেকে পৃথক করে। তাঁদের শোষণ করে। তাই সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী এই আইনটি বদল করতে হবে। মা যৌনকর্মী বলে স্কুলে যথেষ্ট হেনস্থার মুখে পড়তে হয় সন্তানদের। পরিশ্রমের তুলনায় পারিশ্রমিক নিতান্ত নগণ্য বলে সংসার ও সন্তানের পড়াশোনার খরচ মিটিয়ে হাতে প্রায় কিছুই থাকে না। তাই বৃদ্ধ বয়সে একেবারে সম্বলহীন হয়ে পড়েন এই যৌনকর্মীরা। যৌনকর্মীরা যে স্বশাসিত বোর্ড গঠন করেছেন তাকে সরকারি স্বীকৃতি দিতে হবে। ইতিমধ্যে নিজেদের সাতটি দলের ভাগ করে এক এক দল এক এক প্রার্থীদের সঙ্গে দেখা করবেন।"

প্রাক্তন যৌনকর্মী তথা দুর্বারের কর্মী বিশাখা নস্কর বলেন, "আমরাও এই সমাজের অঙ্গ। তাহলে আমাদের কষ্টের কথা কেন কেউ ভাববে না। আমাদের সন্তানরা সর্বত্র বঞ্চিত হয়। নানা অছিলায় বিনা কারণে পুলিশ আমাদের ধরে নিয়ে গিয়ে অত্যাচার করে। এইসব দেখে আমাদের সন্তানের মনবল অনেক ছোট থেকেই ভেঙে যায়। আমরা তো কোনও চুরি, ছিনতাই করছি না। তাহলে আমরা কেন সমাজে স্বীকৃতি পাব না। এই বছর যদি আমাদের দাবি গুলো না মানা হয় তাহলে সোনাগাছির যৌনকর্মীরা কোনও প্রার্থীর পক্ষে বা বিপক্ষে ভোট দেবেন না। তাঁদের ভোট পড়বে NOTA-তেই।"


ঠিক নির্বাচনের আগের সময়টা বেছে নেওয়ার হল কেন সেই বিষয় বলতে গিয়ে স্বরোজিৎ জানা বলেন, "এই সময়ই প্রার্থীরা সাধারণ মানুষের কথা শোনেন মন দিয়ে। তাই এই সময়টাই উপযুক্ত সময়।"

Last Updated : Apr 9, 2019, 3:34 PM IST

For All Latest Updates

ABOUT THE AUTHOR

...view details