কলকাতা,22 ডিসেম্বর: স্বাস্থ্য দপ্তর বলছে, কোরোনার সংক্রমণ কমছে, যার জেরে হাসপাতালে ভরতির সংখ্যাও কমছে । তাই রাজ্যজুড়ে 13টি বেসরকারি হাসপাতালের 748টি বেডকে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালগুলিকে ফিরিয়ে দেওয়া হল । কোরোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য এই বেডগুলি নিয়েছিল স্বাস্থ্য দপ্তর । এই বিষয়ে রাজ্যের সরকারি চিকিৎসকরা বলেন, কোরোনার সংক্রমণ কমে গিয়েছে কি না তা বোঝা মুশকিল। কারণ কোরোনা পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানো হয়নি। কোরোনা আর এখন সরকারের অগ্রাধিকারের মধ্যে আছে কি না তা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা । কারণ কোরানার বিরুদ্ধে জারি যুদ্ধ থেকে সরকার ক্রমশ সরে আসছে বলে তাঁরা মনে করছেন ।
কোরোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন পর্যায়ে রাজ্যের বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালের বেড নিয়ে ওই হাসপাতালগুলিকে কোরোনা হাসপাতাল হিসেবে চিহ্ণিত করেছে স্বাস্থ্য দপ্তর। জেনারেল বেডের পাশাপাশি ওই বেডগুলির মধ্যে সিসিইউ এবং এইচডিইউ-এর বেডও রয়েছে। এদিকে স্বাস্থ্য দপ্তরের সাম্প্রতিক এক নির্দেশে জানানো হয়েছে, এই রাজ্যে কোরোনার সংক্রমণ এখন কমছে। যে কারণে বিভিন্ন হাসপাতালে কোরোনা রোগীদের ভরতির সংখ্যাও কমছে । এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালের যে সব বেড কোরোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়েছিল ওই সব বেড হাসপাতালগুলিকে ফিরিয়ে দেওয়া হবে । ফলে ফিরিয়ে দেওয়া ওই বেডগুলি নিজেদের কাজে লাগাতে পারবে ওই হাসপাতালগুলি । এই নির্দেশে প্রাথমিক পর্যায়ে কলকাতা সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের মোট 13টি বেসরকারি হাসপাতালের 748টি বেডকে হাসপাতালকে ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে । এই 13টি হাসপাতাল মিলিয়ে মোট 1448টি বেড নেওয়া হয়েছিল। 748টি বেড ফিরিয়ে দেওয়ার ফলে এখন এই 13টি হাসপাতালের 700টি বেডে কোরোনা রোগীদের চিকিৎসা হবে । স্বাস্থ্য দপ্তরের নির্দেশ অনুযায়ী, এই 700 টি বেডকেও পর্যায়ক্রমে ফেরানো হবে । তবে, একই সঙ্গে ওই নির্দেশে জানানো হয়েছে, যদি প্রয়োজন দেখা দেয়, তা হলে তিন দিনের নোটিশে ফিরিয়ে দেওয়া এই বেডগুলিকে আবার কোরোনা চিকিৎসার জন্য নেবে স্বাস্থ্য দপ্তর । স্বাস্থ্য দপ্তরের এই নির্দেশের বিষয়ে সার্ভিস ডক্টরস ফোরাম-এর সাধারণ সম্পাদক চিকিৎসক সজল বিশ্বাস বলেন, "এরাজ্যে কোরোনার সংক্রমণ কমছে কি না তা বোঝা মুশকিল। কারণ কোরোনা পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানো হয়নি। তার উপর কোরোনা সংক্রমণের হার পরিকল্পিতভাবে 8 শতাংশের বেশি দেখানো হবে না, তার জন্য কোরোনা পরীক্ষার রিপোর্টে কোথায় কতটা পজ়িটিভ, কোথায় কতটা নেগেটিভ আসবে সেটার সংখ্যা নির্ধারণ করে পরিকল্পিতভাবে যেভাবে পরীক্ষা করানো হচ্ছে, সেটা কখনই বাস্তব অবস্থার প্রতিফলন নয় । বাস্তব অবস্থা আলাদা । বাস্তবে যদি সত্যিই টেস্টের হার কমে যেত, তা হলে খুবই ভালো হত ।" তিনি বলেন, "কিন্তু, বাস্তব অবস্থা যেহেতু বুঝতে পারছি না, সেই জন্য কোরোনা সংক্রমণের প্রকৃত চিত্র আমাদের জানা নেই ।"
এই সংক্রান্ত আরও পড়ুন :রাজ্যে কমছে দৈনিক সংক্রমণ