কলকাতা, 17 জানুয়ারি: কলেজ স্ট্রিট এলাকার 33 নম্বর হ্যারিসন স্ট্রিট, বর্তমানের 33 নম্বর এমজি রোড ৷ ওই গলিতে ঢুকেই ডানদিকে বড় তিনতলা বাড়ি ৷ শতবর্ষ প্রাচীন বাড়ির দেওয়ালে নুইয়ে পরা বহুকালের পুরনো সাইন বোর্ড ‘প্রেসিডেন্সি বোর্ডিং হাউস’ ৷ এক সময় এই বাড়ির তিনতলায় থাকতেন ব্যোমকেশ বক্সী (Byomkesh Bakshi), অজিত বন্দ্যোপাধ্যায় ! মানে ব্যোমকেশের স্রষ্টা শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় (Presidency Boarding House History of Bengali Literature) ৷ এই মেসের ঘরে বসেই তাঁর কল্পনার কলমে রূপ পেয়েছে গত কয়েক প্রজন্মের প্রিয় ব্যোমকেশের একাধিক কাহিনী ৷ তবে, সেই বাড়ির অস্তিত্ব আর কতদিন, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে ৷ জল্পনা তৈরি হয়েছে, ভগ্নপ্রায় এই বাড়ির জায়গায় আধুনিক বহুতল তৈরি হতে পারে বলে জল্পনা ৷
শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের গল্পের মতে, এখানেই ব্যোমকেশ বক্সী একের পর এক তাঁর রহস্যভেদ করেছেন ৷ আর তার সম্পূর্ণ ঘটনার বর্ণনা সুন্দরভাবে লেখায় তুলে ধরেছেন অজিত বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ শুধু শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় নন ৷ এই মেসেই থাকতেন কবি জীবনানন্দ দাশ ৷ তবে সেই মেস বাড়ি আজ জীর্ণ, ভঙ্গুর ৷ সেখানে বর্তমানে আর কেউ থাকেন না ৷ বলা চলে আর কাউকে সেখানে থাকতে দেওয়া হয় না ৷ যে কোনও দিন ওই ভগ্ন বাড়ি ভেঙে মাথা তুলতে পারে আধুনিক বহুতল ৷ ধুলোয় মিশতে পারে বাঙালির ইতিহাস ও সাহিত্যের স্মৃতিবিজড়িত এই বাড়ি ৷ এমনই জল্পনা তৈরি হয়েছে ৷
পুরো বিষয়টি নিয়ে, বাড়ির বর্তমান মালিক সন্দীপ দত্ত কী বলছেন ? এনিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে ক্যামেরার সামনে তিনি কিছুই বলতে চাননি ৷ বর্তমানে মেস বাড়িতে কেউ না-থাকলেও, সেখানে হোটেল চালান নন্দলাল দত্তের নাতি ৷ নীচতলায় এক কোনে দু’টি ঘর নিয়ে ‘মহল হোটেল’ চালাচ্ছেন সন্দীপ দত্ত ৷ 1917 সালে তিনতলা এই মেস বাড়ি তৈরি করেন নন্দলাল দত্ত ৷ পুরো বাড়িতে তিরিশটি ঘর আছে ৷ নাম দিয়েছিলেন, ‘প্রেসিডেন্সি বোর্ডিং হাউস’ ৷