কলকাতা, 2 এপ্রিল : টানা একমাস ছুটি। এই সময়টাকে কাজে লাগিয়ে বহু বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ অনলাইন ক্লাস বা অনলাইন ব্যবস্থাকে কাজে লাগিয়ে স্টাডি মেটিরিয়াল পড়ুয়াদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে। কোরোনা ভাইরাস নিয়ে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তার শুরুতেই শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় রাজ্যের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে বৈঠক করে আবেদন করেছিলেন, যতটা সম্ভব অনলাইন ক্লাসের ব্যবস্থা করতে। কোন কোন প্রতিষ্ঠানে নেওয়া হচ্ছে অনলাইন ক্লাস? কবে থেকে নেওয়া হচ্ছে, কোন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করা হচ্ছে, কতটা পৌঁছানো গেছে। এখন এইসব তথ্য সংগ্রহ করছে উচ্চশিক্ষা দপ্তর। দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, অনলাইন ক্লাস নিয়ে স্টকটেকিং চলছে। তার জন্য রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজগুলির কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। উদ্দেশ্য, সংগৃহীত তথ্য পর্যালোচনা করে আগামী দিনে দপ্তর উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।
অনলাইন ক্লাস নিয়ে তথ্য সংগ্রহ উচ্চশিক্ষা দপ্তরের, চাওয়া হল বিস্তারিত রিপোর্ট
কোরোনা সর্তকতায় রাজ্যের স্কুল কলেজ বিশ্ব বিদ্যালয় গুলি আগামী 15 এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার ৷ এই সময় বহু বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ অনলাইন ক্লাস বা অনলাইন ব্যবস্থাকে কাজে লাগিয়ে স্টাডি মেটিরিয়াল পড়ুয়াদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে। কোন কোন প্রতিষ্ঠান অনলাইন ক্লাসের ব্য়বস্থা করা হয়েছে এবং কি প্যার্টানে পড়ানো হচ্ছে তা জানার জন্য় এইসব তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু করেছে উচ্চশিক্ষা দপ্তর।
কোরোনা ভাইরাস নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে 16 মার্চ থেকে রাজ্যের স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় সহ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। 15 এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে। কিন্তু, এখন রাজ্যের সব বিশ্ববিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় অধীনস্থ কলেজে চয়েস বেসড ক্রেডিট সিস্টেমের মাধ্যমে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরের কোর্সগুলি করানো হয়। CBCS ব্যবস্থায় সেমিস্টার ব্যবস্থাও চলে। ফলে, সময় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান এই CBCS ব্যবস্থায়। তার মধ্যে এই লম্বা ছুটিতে পড়াশোনা ব্যাহত হওয়ার এবং অ্যাকাডেমিক সিডিউল পিছিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রথম থেকেই রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সময়ের অপচয় যাতে না হয় তার জন্য প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও অনলাইনের মাধ্যমে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেছে বহু প্রতিষ্ঠান। যেমন, রাজ্য প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (MAKAUT) 16 মার্চ থেকেই অনলাইন ক্লাস চালু করে দিয়েছিল। পড়ুয়াদের শুধু অনলাইন ক্লাস করানো নয়, পড়ুয়াদের অনলাইন কোর্স, শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরও অনলাইন কোর্স করার ব্যবস্থা করা হয়েছে রাজ্য প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফ থেকে। রাজ্যের B.ED বিশ্ববিদ্যালয় ও সেই বিশ্ববিদ্যালয় অধীনস্থ কলেজগুলিও নিজেদের পরিকাঠামো অনুযায়ী অনলাইনে ক্লাস, হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে অনলাইন মেটেরিয়াল সরবরাহের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানগুলি। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়েরও বেশ কয়েকটি বিভাগের কয়েকজন অধ্যাপক নিজেদের উদ্যোগে অনলাইন ক্লাস নেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। বেশ কিছু কলেজেও অনলাইন ক্লাস করানো হচ্ছে ।
এর মধ্যেই রাজ্যের কলেজগুলি অনলাইন ক্লাস চালু করেছে কি না, অথবা চালুর উদ্যোগ নিয়েছে কি না, যদি করে থাকে তবে তা কবে থেকে হয়েছে, কেমন করে কার্যকর করা হয়েছে, না করা হয়ে থাকলে কবে থেকে শুরু করা হবে। এইসব তথ্য রাজ্যের কলেজের অধ্যক্ষদের কাছ থেকে চাওয়া হয়েছে উচ্চশিক্ষা দপ্তরের তরফ থেকে। তথ্য চাওয়া হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির কাছেও। এমনকী, কোন কোন বিষয় পড়ানো হচ্ছে, কতটা পড়ানো হয়েছে তাও জানাতে বলা হয়েছে দপ্তরের তরফ থেকে। এব্যাপারে বিস্তারিত রিপোর্ট পাঠাতে বলা হয়েছে দপ্তরে।
কিন্তু, কেন চাওয়া হচ্ছে অনলাইন ক্লাস সম্পর্কিত তথ্য? বিকাশ ভবন সূত্রে জানা গেছে, CBCS-এ সময় খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা উপাদান। যেহেতু, এই সময়ে একমাত্র অনলাইনের মাধ্যমেই পড়ুয়াদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব। সেক্ষেত্রে এই সময়টাকে কাজে লাগিয়ে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠান অনলাইন ক্লাসের উদ্যোগ নিয়েছে। তা নিয়েই উচ্চশিক্ষা দপ্তরে একটা স্টকটেকিং চলছে। সেটা নিয়ে দপ্তর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজগুলির কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। মূলত, কোন কোন কলেজ অনলাইন ক্লাস শুরু করেছে, কতটা পৌঁছানো গেছে, কোন কোন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করা হচ্ছে, কোন প্যাটার্নে অনলাইন ক্লাস করানো হচ্ছে। এইসব তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। তথ্য সংগ্রহের পর তা পর্যালোচনা করে আগামীদিনে উচ্চশিক্ষা দপ্তরের উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হবে। এই উদ্দেশ্যেই এইসব তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে বলে উচ্চশিক্ষা দপ্তর সূত্রে খবর।