কলকাতা, 17 ডিসেম্বর: কর্পোরেশনের আবাসন থেকে বসবাসকারীদের উচ্ছেদ করা নিয়ে উত্তপ্ত হাতিবাগান। গৌখানা হল কলকাতা কর্পোরেশনের অন্যতম বড় শ্রমিক আবাসন। বেআইনি বসবাসকারীদের ঘর ছাড়তে বলে বেশ কয়েকদিন ধরে নোটিশ লাগানো হয় আবাসনের ঘরের দরজা গুলোয়। মাত্র 7 দিন সময় দেওয়া হয় কর্পোরেশনের তরফে। আর এই নিয়ে রবিবার বিক্ষোভ ফেটে পড়েন আবসিকরা। নোটিশ ছিঁড়ে ফেলেন ৷ কয়েক হাজার মানুষ অরবিন্দ সরণি দীর্ঘক্ষণ ধরে অবরোধ করে থাকেন। পরে বড়তলা থানাও ঘেরাও করেন তাঁরা। এই নিয়েই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে হাতিবাগান।
কলকাতা কর্পোরেশনের বিভিন্ন শ্রমিক আবাসনে দখলমুক্ত করার কথা বেশ কিছুদিন আগেই জানিয়েছিলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। সেই মতো কলকাতার হাতিবাগান এলাকায় গৌখানা নামে পরিচিত অন্যতম বড় শ্রমিক আবাসনে কর্তৃপক্ষের তরফে নোটিশ দেওয়া হয়। নোটিশে স্পষ্ট বলা হয়, যারা বৈধভাবে থাকেন না তাঁদের 7 দিনের মধ্যে ঘর ছেড়ে দিতে হবে। আর এই নিয়েই উত্তেজনা ছড়ায় আবাসনে। এদিন ক্ষুব্ধ আবাসিকরা প্রথমে যান স্থানীয় কাউন্সিলর কলকাতার ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষের কাছে। তাঁরা অভিযোগ করেন, কাউন্সিলর জানান এই বিষয়ে তাঁর কিছু করার নেই ৷
এরপরেই প্রায় হাজার খানেক লোকজন ডালিমতলার সামনে অরবিন্দ সরণি অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে। এর জেরে খান্না থেকে হাতিবাগান যাওয়ার রাস্তার যান চলাচল থমকে যায় বেশ কিছু সময়। এরপর তাঁরা মিছিল করে বড়তলা থানা সামনে অবরোধ করেন। চারজনের প্রতিনিধি দল থানায় গিয়ে আধিকারিকদের সঙ্গে দেখা করেন। বেশ কিছু সময় চলে থানা ঘেরাও। ক্ষুব্ধ আবাসিকদের দাবি, তিন চার প্রজন্ম ধরে তাঁরা এখানে থাকেন। তাঁদের দুই প্রজন্ম কর্পোরেশনের স্থায়ী কর্মী ছিলেন।
তাঁরা মূলত সাফাইকর্মী। পরবর্তী প্রজন্ম স্থায়ী কর্মী নন কিন্তু এক কাজই করেন। ছেলে, মেয়ে, বউ, মা, বাবা নিয়ে একচিলতে ঘরে থাকেন। আচমকা উঠে যেতে বললে তাই আবার মাত্র 7 দিন সময় কী করে সম্ভব। সকলকেই পথে বসতে হবে। বিকল্প ব্যবস্থা কিছু বলেনি। তাই তাঁরা বাধ্য হয়ে অবরোধ বিক্ষোভের পথে। কলকাতা কর্পোরেশন সূত্রে খবর, দীর্ঘদিন জবরদখল করে আছে বহু পরিবার। বেআইনি দখলের জেরে ন্যায় প্রাপ্য যাদের তারা পাচ্ছেন না। অথচ যারা দখলকারী তারা বিনামূল্যে জল, বিদ্যুৎ সব পরিষেবা নিচ্ছেন। বেআইনি দখলদার মুক্ত করার নির্দেশ পেয়েছেন কর্তৃপক্ষ তাই শুরু হয়েছে আইনি পথে নিয়ম মেনে পদক্ষেপ। এখানে কম বেশি 200-300টি বৈধ শ্রমিক কোয়াটার। তবে বর্তমানে থাকে প্রায় 3000-4000 পরিবার।
আরও পড়ুন:
- নয়া পদক্ষেপ কর্পোরেশনের! এবার থেকে বেআইনি পার্কিংয়ের জরিমানা পৌঁছবে এসএমএসে
- শহরের পথে গাড়ি পার্কিং এজেন্সিদের তোলাবাজি চলছে রমরমিয়ে, চোখ বন্ধ প্রশাসনের
- আবাসনের নিকাশী ঠিকভাবে কাজ করছে তো? অন্যথায় হানা দেবে কর্পোরেশন