কলকাতা, 31 অগাস্ট : কোরোনা পরিস্থিতির মাঝেও অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা নিয়ে বারবার একাধিক অভিযোগ উঠে এসেছে ৷ কোথাও কোরোনা আক্রান্তকে নিয়ে মাত্র কয়েক কিলোমিটার যাওয়ার জন্য হাজার হাজার টাকা চাইছেন অনেক চালক আবার অনেক ক্ষেত্রে অ্যাম্বুলেন্সে না তোলারও অভিযোগও উঠেছে ৷ তবে ভাড়া বেঁধে দেওয়ার কথা না বললেও অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানানো হয়েছে স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফে ৷
জুলাইয়ে পার্কসার্কাসের একটি হাসপাতাল থেকে কোরোনা আক্রান্ত দুই শিশুকে কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য 9 হাজার টাকা দাবি করে একটি বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স ৷ পরে অন্য একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে পার্কসার্কাস থেকে মাত্র ছয় কিলোমিটার দূরে কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ওই দুই শিশুকে নিয়ে যাওয়ার জন্য সাড়ে চার হাজার টাকা দিতে হয় তাদের পরিবারকে । জানা যায়, বেসরকারি আরও কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্সের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছিল । তবে কোরোনা রোগীকে নিয়ে যেতে রাজি হয়নি ওই অ্যাম্বুলেন্সগুলি ।
কয়েকদিন আগে সল্টলেক থেকে 7 কিলোমিটার দূরে অবস্থিত কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে এক কোরোনা রোগীকে নিয়ে যাওয়ার জন্য বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সের বিরুদ্ধে নয় হাজার টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠে । জুলাইয়ে কামারহাটিতে অবস্থিত কলেজ অব মেডিসিন অ্যান্ড সাগর দত্ত হসপিটাল থেকে কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে এক যুবককে নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করতে পারছিলেন না রোগীর পরিজনরা । ওই যুবক কোরোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন বলে জানিয়েছিল বেসরকারি একটি নার্সিংহোম । অবশেষে অনেক বেশি টাকা ভাড়া দিয়ে একটি ক্লাবের অ্যাম্বুলেন্সে করে ওই যুবককে কলকাতা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ ৷ এমনই বিভিন্ন ক্ষেত্রে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সের বিরুদ্ধে কখনও অনেক বেশি ভাড়ার দাবি আবার কখনও কোরোনা রোগীকে নিতে না চাওয়ার অভিযোগ উঠছে ।
বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগের জেরে নানা মহলে নানা প্রশ্ন উঠছে ৷ হাসপাতাল সরকারি হোক অথবা বেসরকারি, চিকিৎসা পরিষেবা না দিয়ে কোনও রোগীকে ফেরানো হলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছে সরকার । বেসরকারি হাসপাতালে কোরোনা রোগীর চিকিৎসার জন্য খরচও (টেস্ট, চিকিৎসক এবং, COVID-19 প্রতিরোধের জন্য খরচ) বেঁধে দেওয়া হয়েছে । তাহলে কোরোনা রোগীকে নিতে অস্বীকার করলে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সের বিরুদ্ধে কেন আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে না ? রোগীকে নিয়ে যাওয়ার জন্য ভাড়া হিসেবে অনেক বেশি টাকা চাওয়া হচ্ছে । তাই বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সের ভাড়া কেন বেঁধে দেওয়া হবে না?
এই বিষয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগমের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, "স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে প্রতিটি কোরোনা রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে । প্রতিদিন 400-500 মানুষকে সাহায্য করা হচ্ছে । কারও যদি কোনও সমস্যা থাকে, আমাদের 24 ঘণ্টার জন্য অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস রয়েছে সেখানে যোগাযোগ করলে পেয়ে যাবেন ।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘এমনিতেই এই বিষয়ে বিভিন্ন জেলাশাসককে নজর রাখতে বলা হয়েছে । এই ধরনের অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানানো হয়েছে ।’’ বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সের ভাড়া বেঁধে দেওয়া হতে পারে? স্বাস্থ্যসচিব বলেন, ‘‘অ্যাম্বুলেন্সের ভাড়া বেঁধে দেওয়া হতে পারে কি না এই বিষয়ে পরিবহন দপ্তর বলতে পারবে ।’’