পোস্তার ফুটপাথে ছাতু খেলেন রাজ্যপাল কলকাতা, 6 এপ্রিল: আচমকায় সংবাদ শিরোনামে ফুটপাতের ছাতু ব্যবসায়ী চিত্তরঞ্জন প্রসাদ । বৃহস্পতিবার বেলা বারোটার পর থেকে জাতীয় এবং আঞ্চলিক সংবাদমাধ্যমের পর্দায় দেখা গিয়েছে তাঁর ছবি । কারণটা কী ? আসলে, চিত্তরঞ্জনের দোকান থেকে তাঁরই হাতে তৈরি ছাতু খেয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ । দিয়েছেন কড়কড়ে 100 টাকার নোট । সেই 100 টাকা আপাতত অন্যান্য টাকার সঙ্গে না মিশিয়ে আলাদাভাবে ভাঁজ করে রেখেছেন চিত্তরঞ্জন প্রসাদ ।
40 বছরের ছাতু ব্যবসায় জীবনে আজকের এই দিনটা যে অন্যরকমভাবে স্মরণীয় থাকবে সে কথা নিজেই জানিয়েছেন ইটিভি ভারতকে । চিত্তরঞ্জন প্রসাদ বলেন, "আমার তো ভালোই লাগছে । আমি তো স্বপ্নেও ভাবিনি কখনও রাজ্যপাল আসবেন আমার দোকানে ৷ আবার আমার দোকান থেকে ছাতুও খাবেন ৷ তিনি আমার কাছে এসে নাম জিজ্ঞাসা করলেন । কী তৈরি করছি সেটাও জানতে চাইলেন । ছাতুর কথা বলতেই এক গ্লাস চেয়ে বসলেন । হালকা মসলা এবং লবণ দিয়ে ছাতু তৈরি করে দিলাম । আমি টাকা নিতে চাইনি । কিন্তু, উনি জোর করে আমার হাতে 100 টাকা ধরিয়ে দিলেন ।"
এদিকে দোকানে রাজ্যপাল ছাতু খেয়ে গিয়েছেন, এই কথা জানাজানি হওয়ার পর থেকেই পরিচিত অনেকেই ছাতুর দাম বাড়ানোর পরামর্শ দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন চিত্তরঞ্জনবাবু । তিনি বলেন, "পরিচিত লোকজন তো ছাতুর দাম বাড়িয়ে গ্লাস প্রতি 100 টাকা করে দেওয়ার কথা বলেছেন । কিন্তু 100 টাকা ছাতুর গ্লাস হলে তা আর বিক্রি হবে না ।" পাশাপাশি, রাজ্যপালকে ছাতু খাওয়ানোর আনন্দ পরিবারের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছেন চিত্তরঞ্জন । তিনি বলেন, "ছেলেমেয়েরা টিভিতে, মোবাইলে, ছবি ভিডিয়ো দেখে আপ্লুত । বউকে বলেছি । সকলেই খুশি ।"
আরও পড়ুন: হনুমান জয়ন্তীতে লেকটাউনের মন্দিরে পুজো রাজ্যপালের
মূলত হনুমান জয়ন্তীতে যাতে কোনওরকম বিশৃঙ্খলা পরিস্থিতি তৈরি না হয়, তার জন্য প্রশাসন কী ব্যবস্থা নিয়েছে, তা দেখতেই পোস্তা এলাকায় এসেছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস । সেই সুযোগে এলাকা পরিদর্শনের মাঝে ছাতুও খান তিনি । দীর্ঘ 40 বছরের অভিজ্ঞতা থেকে চিত্তরঞ্জন প্রসাদ বলেন, "হনুমান জয়ন্তীকে ঘিরে এলাকায় আগে কোনওরকম অশান্তি হয়নি । এবারও হবে বলে মনে হয় না । কারণ আমি 40 বছর ব্যবসা করার আগে আমার বাবা এখানে ব্যবসা করতেন । তাঁর কাছ থেকে কখনও অশান্তির খবর জানতে পারিনি । তারপরেও রাজ্যপাল এসে খতিয়ে দেখে গিয়েছেন । কড়া পুলিশি ব্যবস্থা করা হয়েছে । এতে আমরা সকলেই খুশি ।"