কলকাতা, 24 ডিসেম্বর: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে রবিবার 'সমাবর্তন' অনুষ্ঠান কার্যত নির্বিঘ্নেই হল ৷ অন্তর্বর্তী উপাচার্য পদ থেকে গতকাল রাতে বুদ্ধদেব সাউকে হঠাৎই সরিয়ে দেন আচার্য সিভি আনন্দ বোস ৷ ফলে সমাবর্তন নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছিল ৷ তবে, 'সমাবর্তন' হয়েছে ৷ যা নিয়ে এ বার রাজ্যপাল তথা আচার্য এবং রাজ্য সরকার, দুই পক্ষকেই নিশানা করলেন সিপিআইএম নেতা তথা যাদবপুরের প্রাক্তনী সুজন চক্রবর্তী ৷ তিনি অভিযোগ করলেন, পরিকল্পিতভাবে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানকে পণ্ড করতে চেয়েছিলেন আচার্য ৷ সেই কারণেই, আগের রাতে অন্তর্বর্তী উপাচার্যকে সাসপেন্ড করেছেন তিনি ৷
এ প্রসঙ্গে সুজন অধ্যাপক বুদ্ধদেব সাউয়ের নিয়োগ ইস্যুকেও টেনে আনেন ৷ সেই সময় সিপিআইএম নেতা বলেছিলেন, বুদ্ধদেব সাউয়ের উপাচার্য পদে বসার ক্ষেত্রে যোগ্যতা নেই ৷ অর্থাৎ, অধ্যাপনা এবং উইজিসি-র নিয়মে তিনি উপাচার্য হতে পারেন না ৷ কিন্তু, রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস নিজের পছন্দের এবং তাঁর কথা শুনে চলবেন, এমন লোককে উপাচার্য করেছেন বলে অভিযোগ তোলেন সুজন ৷ এ দিন বুদ্ধদেবের অপসারণ নিয়েও, সেই একই কথা বলতে শোনা গেল তাঁকে ৷
সঙ্গে যোগ করলেন, ‘‘রাজ্যপাল ভেবেছিলেন তাঁর কথা অনুযায়ী কাজ করবেন ৷ কিন্তু, হয়তো আচার্যের কথা শুনছেন না তিনি ৷ তাই সমাবর্তনের আগের দিনেই ইচ্ছে করে সরিয়ে দিলেন ৷’’ আচার্য ইচ্ছাকৃতভাবে যাদবপুরের সমাবর্তন বন্ধ করতেই শেষ মুহূর্তে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে অভিযোগ সুজনের ৷ এই ইস্যুতে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার অবনতির অভিযোগ তোলেন তিনি ৷ যার জন্য তৃণমূল এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দায়ী করেছেন সুজন ৷
তাঁর বক্তব্য, ‘‘রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নিজে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্য হতে চেয়েছিলেন ৷ আর সেই মুখ্যমন্ত্রীর থেকে হাতেখড়ি নিয়েছেন রাজ্যপাল ৷ তাই তিনিও সমাবর্তনটাকে নষ্ট করার চেষ্টা করেছিলেন ৷ কিন্তু, তা সফল হয়নি ৷ 'সমাবর্তন' হয়েছে ৷’’ উল্লেখ্য, উপাচার্য হিসেবে কেউ বর্তমানে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে নেই ৷ তাই ইউজিসি আইন অনুযায়ী, সমাবর্তন অনুষ্ঠান সম্ভব নয় ৷ সেক্ষেত্রে এই অনুষ্ঠানকে 'ডিগ্রি অ্যাওয়ার্ডিং সেরিমনি' নাম দেওয়া হয়েছে ৷ সেই কারণেই হয়তো অধ্যাপক বুদ্ধদেব সাউ মঞ্চে থাকলেও, কোনও পড়ুয়াকে শংসাপত্র তুলে দেননি ৷ সেই কাজটা করেছেন সহ-উপাচার্য ৷