কলকাতা, 4 ফেব্রুয়ারি: আমেরিকায় প্রতারণা করে কলকাতায় আত্মগোপন ৷ কিন্তু, শেষরক্ষা হল না ৷ মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন বা এফবিআই'য়ের দেওয়া তথ্যের ভিত্তি লালবাজারের সাইবার শাখার গোয়েন্দারা অভিযুক্ত 3 প্রতারককে গ্রেফতার করেছে (Fraud Committed in America and Hiding in Kolkata) ৷ জানা গিয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের প্রতারণার জালে ফাঁসিয়ে কোটি কোটি টাকা লুঠ করেছিল তাঁরা ৷ এফবিআই'য়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সেই মামলায় মূল অভিযুক্ত-সহ 3 জনকে গ্রেফতার করেছে লালবাজার ৷
পুলিশ সূত্রে খবর, এই তিনজনের মধ্যে 2 জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল আগেই ৷ কিন্তু, তৃতীয় তথা মূল অভিযুক্তকে কিছুতেই বাগে আনতে পারছিলেন না গোয়েন্দারা ৷ রাজস্থানের আজমেঢ়ে 10 দিনের বেশি পালিয়ে বেড়ায় ওই প্রতারক ৷ তবে, সম্প্রতি একটি হোটেলের বাইরে থেকে সঙ্গিনী-সহ ধরা পড়ে মূল অভিযুক্ত ৷ এই বিষয়ে কলকাতা পুলিশের ডিসি সাইবার অতুল ভি, জানিয়েছেন ধৃতদের নাম সাইজান আলি হায়দর, মহম্মদ আতিফ, সাবতিন আলি হায়দর ৷
ধৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে একাধিক ইলেকট্রনিক সামগ্রী ৷ যেমন, পেনড্রাইভ, মোবাইল ফোন সিম কার্ড-সহ একাধিক পাসপোর্ট ৷ তবে, এই ঘটনায় যুক্ত থাকার সন্দেহে মহম্মদ আতিফ এবং সাইজান আলি হায়দরকে প্রথমেই গ্রেফতার করা হয় ৷ কিন্তু, খোঁজ মিল ছিল না এই প্রতারণা কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত সাবতিন আলি হায়দরের ৷
লালবাজার সূত্রে খবর, মূলত আমেরিকা নিবাসী বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের বিভিন্ন কৌশলে নিজেদের জালে জড়াত এরা ৷ এরপর কোটি কোটি টাকার প্রতারণা করত এই অভিযুক্তরা ৷ যেহেতু ঘটনাটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ঘটে, ফলে তদন্তভার চলে যায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা বিভাগ ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনের হাতে ৷ কিন্তু, অভিযুক্তদের ব্যবহার করা একাধিক মোবাইল ফোনের লোকেশন ট্র্যাক করে এফবিআই গোয়েন্দারা জানতে পারেন, অভিযুক্তরা ভারতের কলকাতায় গা-ঢাকা দিয়ে রয়েছে ৷
এরপরেই মার্কিন দূতাবাসের সাহায্য কলকাতা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে এফবিআই ৷ কলকাতা ও পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে পুলিশ সাইজান আলি হায়দর, মহম্মদ আতিফকে গ্রেফতার করে ৷ কিন্তু, খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না তৃতীয় ব্যক্তি তথা মূল অভিযুক্ত সাবতিন আলি হায়দরের ৷ এরপরেই কলকাতা পুলিশের নগরপাল বিনীত গোয়েলের নির্দেশে তদন্তভার নেয় সাইবার ক্রাইম বিভাগ ৷ তদন্তে নেমে সরাসরি এফবিআই আধিকারিকদের সঙ্গে দফায় দফায় ভার্চুয়াল বৈঠক করেন লালবাজারের গোয়েন্দারা ৷ এই কেস সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য আদান প্রদান করেন তাঁরা ৷