কলকাতা, 7 ডিসেম্বর: রূপান্তরকামী হওয়ায় ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েও পোহাতে হয়েছিল একাধিক সমস্যা । তাই তারই বন্ধু অলকানন্দা রায়ের মাথায় এল নতুন ভাবনা । কলকাতার শহরের অন্যতম বৃহৎ বেসরকারি হাসপাতালে গড়ে উঠলো তাদের জন্য পৃথক ওয়ার্ড । মুকুন্দপুরের এই বেসরকারি হাসপাতালে গেলেই চিকিৎসার পাশাপাশি চিকিৎসা স্বার্থেই একাধিক সুবিধা পাবেন এবার তারা । যা এই রাজ্যে প্রথম ।
এর আগে এমআর বাঙুরে একটি বেড তৈরি করা হয়েছিল ৷ কিন্তু তারপর সেটি কোনওভাবে ব্যবহার হয়েছিল কি না, তা অজানা ৷ মুকুন্দপুরের এই বেসরকারি হাসপাতালে কোনও রূপান্তরকামী গেলে বেশ কিছু বাড়তি পরিষেবা দেওয়া হবে । হাসপাতাল সূত্রে খবর, সেই পরিষেবার মধ্যে থাকছে পৃথক আউটডোর ক্লিনিক । সেটি আপাতত সোম, বুধ ও শুক্রবার সন্ধ্যা ছ'টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত চালু হলেও আগামিদিনে রবিবার বাদে প্রতিদিনই খোলা রাখার পরিকল্পনা রয়েছে। 2 শয্যার একটি ইন্ডোর ওয়ার্ড থাকছে । তাদের চিকিৎসার জন্য ব্যাবহার করা হবে বিশেষ ধরনের শয্যা । রূপান্তরকামীদের পরিষেবা দেওয়ার জন্য থাকছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, প্রশিক্ষিত নার্স ও অন্য স্বাস্থ্যকর্মীরা । এছাড়াও বিভিন্ন প্যাথলজিক্যাল ও ডায়গনস্টিক পরীক্ষায় থাকছে বিশেষ ছাড়ের ব্যবস্থা ।
এছাড়াও থাকছে আরও বেশ কিছু ব্যবস্থা । রূপান্তরকামী কোনও রোগে আক্রান্ত তা সম্পূর্ণ গোপন রাখা হবে । শুধুমাত্র রোগী ও তাঁর কাছের মানুষদেরকে রোগ সম্পর্কে অবগত করা হবে । হাসপাতালে ভর্তি করতে গেলে যাতে কোনও ঝক্কি যাতে পোহাতে না হয়, তাই পৃথক হেল্প ডেস্কের ব্যবস্থা করা হয়েছে । এছাড়াও দ্রুত যাতে তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করানো যায় সেই বিষয়টাও নজরদারি করবে কর্তৃপক্ষ । বেসরকারি হাসপাতালের প্রধান রূপক বড়ুয়া জানান, "আপাতত দু'টি বেড দিয়ে এই পরিষেবা চালু হলেও আগামিদিনে বাড়বে শয্যা সংখ্যা । পাশাপাশি আমরা মুকুন্দপুরের সঙ্গে ঢাকুরিয়া ও সল্টলেক ক্যাম্পাসেও ভবিষ্যতে চালু হবে একই পরিষেবা ।"
হাসপাতালের উদ্যোগ প্রসঙ্গে রূপান্তরকামী ও সমাজকর্মী অলকানন্দা রায় বলেন, "অনুপ্রভা যখন কিছু সময় আগে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিল, তখন আমাদের জন্য যথাযথ স্বাস্থ্যসেবা পরিষেবার অভাবের তীব্রতা বুঝতে পেরেছিলাম । রূপান্তরকামী হওয়ায় আমরা যথাযথ চিকিৎসা পেতে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলাম । ফলে এই হাসপাতাল যে পদক্ষেপ নিচ্ছে তা শুধু গুরুত্বপূর্ণ নয়, এটি অন্যান্য হাসপাতালের বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতেও এই ধরনের সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেবে ।" বেসরকারি হাসপাতালে এই উদ্যোগে পাশে দাঁড়িয়েছে ইনার-হুইল (ডিস্ট্রিক্ট 329) নামে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও ।
আরও পড়ুন: