কলকাতা, 23 ডিসেম্বর: নতুন বাড়ি বা ফ্ল্যাট কেনার ক্ষেত্রে বকেয়া করের টাকা থেকে মুক্তি পেতে চলেছেন ক্রেতারা ৷ এতদিন প্রোমোটারদের থেকে সম্পত্তি কেনার ক্ষেত্রে করের বোঝা চাপত ক্রেতাদের উপরেই ৷ যার ফলে নাকানি-চোবানি খেতে হত ৷ এবার কলকাতা পৌরনিগমের নতুন নিয়মে স্বস্তি পেতে চলেছেন ক্রেতারা ৷ কলকাতা পৌরনিগমের সম্পত্তি কর বিভাগ এই ব্যাপারে নতুন সিদ্ধান্ত নিয়েছে ৷ বিল্ডিংয়ের সিসি বা কমপ্লিশন সার্টিফিকেট দেওয়ার সঙ্গেই সম্পত্তি করের মূল্যায়ণ করবে কলকাতা পৌরনিগম। এতে ফ্ল্যাট বিক্রিতে গ্রাহকের হয়রানি কমবে, বকেয়া কর মেটাতে 'দায়বদ্ধ' থাকবেন প্রোমোটাররা।
মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, "সম্পত্তি কর মূল্যায়ণ বিভাগের তরফে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, শুধুমাত্র সিসি নিয়ে বা রেজিস্ট্রি করে হাত তুলতে পারবেন না প্রোমোটাররা। সিসির সময়েই ফ্ল্যাটের ক্রেতা বা মালিকের নাম কর্পোরেশনকে জানাতে হবে। না হলে করের টাকা গুনতে হবে তাঁকে। সিসি দেওয়ার সময়েই অ্যাসেসমেন্ট এবং মিউটেশন করে দেওয়া হবে।"
কলকাতা কর্পোরেশন সূত্রে খবর, সম্পত্তি কর বিভাগের একটি সাধারণ অভিযোগ, রেজিস্ট্রেশন হলেও কর মূল্যায়ণ হতে নানা অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয় ক্রেতাদের। নতুন ফ্ল্যাট কেনার পর ক্রেতা জানতে পারেন, তাঁর মাথায় চেপেছে পুরনো করের বোঝা। এবার এই সমস্যা নয়া নিয়মে সহজে মিটবে বলে আশাবাদী পৌর আধিকারিকরা। এক্ষেত্রে প্রোমোটারের দায় বাড়াতে চাইছে কর্পোরেশন। ফ্ল্যাট তৈরির সময় প্রোমোটার এবং জমির মালিকের মধ্যে 'রেজিস্টার ডেভেলপমেন্ট এগ্রিমেন্ট' হয়। একই সঙ্গে মালিক প্রোমোটারকে একটি 'পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি' দেন। ওই এগ্রিমেন্টের মধ্যেই ফ্ল্যাট বিক্রি হওয়ার আগে পর্যন্ত করের টাকা যাতে প্রোমোটার মেটায়, সেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
ফ্ল্যাটের নির্মাণ কাজ শেষে কমপ্লিশন সার্টিফিকেট (সিসি) দেওয়ার সময়েই সংশ্লিষ্ট সম্পত্তি কর মূল্যায়ণ করবে কর্পোরেশন। প্রতিটি ফ্ল্যাটের অ্যাসেসমেন্ট নম্বর দেওয়া হবে। একই সঙ্গে হয়ে যাবে মিউটেশনও। সিসি নেওয়ার সময় অবিক্রিত ফ্ল্যাট থাকলে প্রোমোটারের নামেই হবে মিউটেশন ও দেওয়া হবে অ্যাসেসমেন্ট নম্বর। ফ্ল্যাট বিক্রি হওয়া পর্যন্ত করের টাকা মেটাতে হবে প্রোমোটারকেই। এমনকী, সিসি নেওয়া থেকে বিক্রি হওয়ার আগে পর্যন্ত সম্পূর্ণ কর মেটাতে বাধ্য থাকবেন প্রোমোটাররা। নতুন বছর থেকেই কলকাতাজুড়ে এই নিয়ম চালু হচ্ছে। এর ফলে আইনি ফাঁকফোকর দিয়ে প্রোমোটারদের বিরুদ্ধে কর ফাঁকি যে অভিযোগ উঠত বা ক্রেতাদের উপর যে করের বোঝা চাপত, সেই সমস্যার সমাধান হতে চলেছে ৷