বেঙ্গল ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক অসীম বসুর প্রতিক্রিয়া কলকাতা, 5 অগস্ট: কলকাতার অতি পরিচিত হলুদ ট্যাক্সির যাত্রী পরিবহণের হাল ফেরাতে সম্প্রতি পরীক্ষামূলকভাবে চালু হয়েছে 'যাত্রী সাথী' অ্যাপ । আরও ভালো করে বললে পরিবহণ দফতরের উদ্যোগে অ্যাপের আওতায় আনা হয়েছে হলুদ ট্যাক্সিকে । প্রাথমিকভাবে 1 হাজার ট্যাক্সিকে এই 'যাত্রী সাথী' অ্যাপের আওয়তায় আনা হলেও যাত্রীদের মধ্যে কেমন সাড়া মিলছে তা দেখেই ধাপে ধাপে বাকি ট্যাক্সিকেও যুক্ত করা হবে এই অ্যাপে । প্রাথমিকভাবে এই অ্যাপ নিয়ে ট্যাক্সি মালিক পক্ষের থেকে মিশ্র প্রতিক্রিয়া মিলেছে । এখন রাস্তায় বেরোলেই কিছু কিছু হলুদ ট্যাক্সির সামনে বা পিছনে একটি করে হলুদ স্টিকার লাগানো দেখা যাবে ।
অর্থাৎ, যেসব ট্যাক্সিতে এই স্টিকার লাগানো হয়েছে সেগুলিকে এই অ্যাপের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে । জানা গিয়েছে, প্রাথমিকভাবে হাওড়া, শিয়ালদা, কলকাতা স্টেশন এবং বিমানবন্দরের বাইরে যে প্রিপেড ট্যাক্সিগুলি থাকে প্রাথমিকভাবে সেগুলিকেই এই অ্যাপের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে ৷ এই প্রসঙ্গে বেঙ্গল ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক অসীম বসু জানিয়েছে, যেসব ট্যাক্সি চালক এবং মালিকরা এই অ্যাপটি ব্যাবহার করা শুরু করেছেন তাঁরা উপকৃত হয়েছেন বলেই জানিয়েছেন । তবে একটা কিছু শুরু হলে প্রথম দিকে কিছু সমস্যা থাকে, তবে এই পাইলট প্রোজেক্টের মধ্য দিয়ে সেগুলিকে সংশোধন করা হবে । যেহেতু 2018 সালের পরে হলুদ ট্যাক্সির ভাড়া আর বাড়েনি তাই রাজ্য সরকারও চাইছে যাতে এই অ্যাপের মাধ্যমে হলুদ ট্যাক্সির হাল আবার ফেরান যায় । তাই এই অ্যাপটি পাকাপাকিভাবে চালু হয়ে গেলে ভাড়া পিছু কমিশনও অনেক কম করা হবে বলেও জানিয়েছে রাজ্য পরিবহণ দফতর, এমনটাই দাবি অসীম বসুর ।
রাজ্য সরকার নিজস্ব অ্যাপ ক্যাব বাজারে এনে অন্যান্য বেসরকারি অ্যাপ ক্যাব সংস্থাগুলির দৌরাত্ম্য নিয়ন্ত্রণ করার কথাও মাথায় রেখেছে । বর্তমানে 'যাত্রী সাথী' অ্যাপের মাধ্যমে হলুদ ট্যাক্সি বুক করা হলে চালকদের থেকে কোনও কমিশন কাটা হচ্ছে না । এমনটাই জানিয়েছেন অসীম বসু । পাশাপাশি, প্রোগ্রেসিভ ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে শম্ভুনাথ দে জানান, সবেমাত্র এই অ্যাপটি শুরু হয়েছে । আরও কিছুদিন গেলে পুরো চিত্রটা পরিষ্কার হবে । তবে যেহেতু আপাতত প্রিপেড ট্যাক্সিকে এই অ্যাপের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে তাই শহরের অন্যত্র যদি কোনও যাত্রী এই অ্যাপ ব্যবহার করে গাড়ি বুক করার চেষ্টা করেন তাহলে অনেক ক্ষেত্রেই তারা ট্যাক্সি পাচ্ছেন না । এছাড়াও অনেক যাত্রী যাঁরা প্রিপেড লাইনে দাঁড়িয়ে ট্যাক্সি নিতে চাইছেন তাঁরা অ্যাপ ডাউনলোড করে তারপর সেই অ্যাপের মাধ্যমে ট্যাক্সি বুক করার ঝক্কি পোহাতে চাইছেন না । তিনি আরও জানান, যেহেতু এই অ্যাপে এখনও অনলাইনে টাকা মেটানোর ব্যবস্থা নেই তাই এই অ্যাপ ব্যবহার করতে চাইছেন না অনেকে । স্টেশন বা বিমানবন্দরের দিকে অনেক স্মার্ট ফোন ব্যাবহারকারীদের নেটওয়ার্ক পেতেও সমস্যা হচ্ছে ৷ ফলে অনেকেই ধৈর্য্য হারাচ্ছেন ৷
আরও পড়ুন: কোন অ্যাপ থেকে বুক করবেন 'স্মার্ট' হলুদ ট্যাক্সি, জেনে নিন
অন্যদিকে, এআইটিইউসি অনুমোদিত ওয়েস্টবেঙ্গল ট্যাক্সি অপারেটরস কোর্ডিনেশন কমিটির কনভেনার নাওয়াল কিশোর শ্রীবাস্তবও বলেন,"হলুদ ট্যাক্সির হাল ফেরানোর জন্য রাজ্য সরকারের এই পদক্ষেপকে স্বাগত এবং সাধুবাদ জানাই । তবে সরকারের পক্ষ থেকে এই অ্যাপটির তেমনভাবে প্রচার হয়নি । তাই যাত্রীদের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে । যাত্রীরা জানতে চাইছেন যে কেন তাঁদের ট্যাক্সিতে চরার জন্য হঠাৎ করে একটি নতুন অ্যাপ ডাউনলোড করতে হবে । অন্যদিকে ট্যাক্সি চালকদের মধ্যে বেশিরভাগ তেমনভাবে পড়াশোনা জানেন না । অনেকের কাছে আবার স্মার্টফোন নেই । তাই এই অ্যাপটি সঙ্গে যুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে তাঁদের পক্ষে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে । তাঁদেরকে বাড়তি খরচ করে স্মার্টফোন কিনে আবার এই অ্যাপটি ডাউনলোড করতে হবে ।"