কলকাতা, 16 মে:পূর্ব মেদিনীপুরের এগরায় এক বেআইনি বাজি কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণে মঙ্গলবার মৃত্যু হয়েছে একাধিক জনের ৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন মৃতের সংখ্যা 5 ৷ আহত 7 জন ৷ এগরার খাদিকুল গ্রামের এই ঘটনা মনে করিয়ে দিচ্ছে 2014 সালের পূর্ব বর্ধমানের খাগড়াগড়ের ঘটনা ৷ সে বছর 2 অক্টোবরে দুর্গাপুজোর অষ্টমীর এক দুপুরে বর্ধমান শহর লাগোয়া খাগড়াগড়ে একটি বাড়িতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে ৷ প্রথমে মনে করা হয়েছিল গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে এই বিস্ফোরণ হয় ৷ কিন্তু তার পর এনআইএ তদন্তে জানা যায়, এই বিস্ফোরণের নেপথ্যে রয়েছে বাংলাদেশি জঙ্গি সংগঠন জামাত-উল-মুজাহিদিনের যোগ ।
তবে মঙ্গলবারের ঘটনার পর প্রশ্ন উঠছে, অবৈধ বাজি কারখানার নেপথ্যে কি এবার পঞ্চায়েত নির্বাচন অশান্তি করার প্রস্তুতি সারছে বহিরাগত দুষ্কৃতীরা? বিষয়টি নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন রাজ্য পুলিশের প্রাক্তন এডিজি নজরুল ইসলাম। এদিন পূর্ব মেদিনীপুরের এগরায় খাদিকুল গ্রামে একটি বাজি কারখানায় বিধ্বংসী বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণের তীব্রতায় রাস্তায় যত্রতত্রভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়তে থাকতে দেখা গিয়েছে ওই বাজি কারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের দেহাংশ ৷
এ বিষয়ে রাজ্য পুলিশের প্রাক্তন অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর জেনারেল অফ পুলিশ নজরুল ইসলাম ইটিভি ভারতকে জানিয়েছেন, রাজ্য পুলিশের কাছে এবং রাজ্য গোয়েন্দা বিভাগের কাছে কোন এলাকায় কী কী বেআইনি বাজি কারখানা গজিয়ে উঠছে তার প্রত্যেকটি খবরাখবর থাকে । কিন্তু তাঁর অভিযোগ, শাসকদলের চোখ রাঙানির ভয়ে পুলিশ নিজের কাজ করতে পারে না। তার ফলেই এই প্রকারের ঘটনা ক্রমশ সামনে আসছে। এই ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনার তদন্ত কোন পথে এগোতে পারে সেই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি সাফ জানান, এই ঘটনার ভয়াবহতা এতটাই বেশি যে খুব শিগগিরই এই ঘটনার তদন্তভার ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি বা এনআইএ'র হাতে চলে যেতে পারে । এই প্রকারের কোনও বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে রাজ্য প্রশাসনকে একটি বিস্তারিত রিপোর্ট জানাতে হয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ'কে ৷
আরও পড়ুন: এগরায় বাজি কারখানায় বিধ্বংসী বিস্ফোরণ, বেশ কয়েকজনের মৃত্যু
তবে এদিন পূর্ব মেদিনীপুরের এগরায় এই ভয়াবহ বিস্ফোরণকাণ্ডে রাজ্য পুলিশের কোনও বড় কর্তা মন্তব্য করতে চাননি। তবে এই বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজ্য পুলিশের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানিয়েছেন, কম সময়ে বেশি মুনাফা লাভের জন্য বেশ কিছু বাড়িওয়ালা তাদের বাড়ি বিভিন্ন অচেনা ব্যক্তিদের ভাড়া দিয়ে দেন। এমনকী তাদের থেকে কোনও বৈধ কাগজপত্র যাচাই করে দেখা হয় না। পুলিশ মহলের একাংশ দাবি, এই সকল ভাড়াটিয়া ব্যক্তিরা নিজের পরিচয় গোপন রেখে স্লিপার সেল বা অবৈধ কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত থাকে। ফলে বিভিন্ন জেলায় আগাছার মতো গজিয়ে উঠছে অবৈধ বাজি কারখানা। আশঙ্কা, আর এই বাজি কারখানার নেপথ্যে রমরমিয়ে চলছে বিস্ফোরক তৈরির কাজ ।