কলকাতা, 12 মে: প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় 36 হাজার চাকরি বাতিল করেছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায় ৷ এক সঙ্গে এত চাকরি বাতিল হয়ে যাওয়ায় হইচই পড়ে গিয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে ৷ অনেকেই মনে করছেন, এই রায়ের প্রভাব সুদূরপ্রসারী হবে ৷ প্রভাব পড়তে পারে ভোটেও ৷ এমনকি, সরকার বিরোধী জনমতও গড়ে উঠতে পারে এই রায়ের ফলে ৷
এ দিন এই নিয়ে বিশিষ্ট সমাজকর্মী মীরাতুন নাহার বলেন, "এই সিদ্ধান্তের ফলে বহু পরিবারের উপর দুর্ভাগ্য নেমে আসবে । তবে এরা বহু যোগ্য পদপ্রার্থীদের বঞ্চিত করে এদের চাকরি পেয়েছিলেন । প্রভাবশালীদের সহায়তায় চাকরি পেয়েছেন । অপরাধ করেছেন, তার শাস্তি পাচ্ছেন । তাই আমার এদের জন্য কোনও কষ্ট হচ্ছে না ।"
কিন্তু এতজনের চাকরি যেতে বসেছে, তাঁদেরও পরিবার আছে, এর প্রভাব কি জনমানসে পড়বে না ? জবাবে তিনি বলেন, ‘‘এর অবশ্যই একটা প্রভাব আছে । কী বিপুল দুর্নীতি এই সরকারের আমলে হয়েছে, তা মানুষের কাছে স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে । সেটা সরকারকেও নাড়িয়ে দিতে পারে ।’’
একই ভাবে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন রেজিস্ট্রার রাজা গোপাল ধর চক্রবর্তী বলেন, ''আইনি প্রক্রিয়ায় শেষ পর্যন্ত উচ্চ আদালত পর্যন্ত গড়াবে বিষয়টি । তাতে কী ফল দাঁড়াবে, এখনই বলা মুশকিল । কিন্তু এদিনের রায়ে একটা জিনিস স্পষ্ট হয়েছে 42 হাজারের প্যানেলের যখন 36 হাজারের নিয়োগ বাতিল করতে হয়, এর সঙ্গে কতটা দুর্নীতি জড়িয়ে রয়েছে । তা মানুষের কাছে চলে এসেছে ।’’
তাহলে কি এই রায়ে রাজনৈতিক প্রভাব পড়বে ? এই বিষয়টি অবশ্য এই নিয়ে রাজ্যের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির ভূমিকার উপর নির্ভর করছে বলে তিনি মনে করেন ৷ তাঁর কথায়, ‘‘এই বিষয়টি সরকারকে শেষ পর্যন্ত নাড়িয়ে দিতে পারবে কি না, তা সবটাই নির্ভর করছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির উপর ।’’
একই সঙ্গে তিনি বলছেন, ‘‘অতীতে দুর্নীতির কারণে এত বিপুলসংখ্যক মানুষের চাকরি গিয়েছে বলে আমি অন্তত মনে করতে পারছি না । এক্ষেত্রে ভোট বাক্সে এই দুর্নীতি সরকার বিরোধী একটা জনমত তৈরি করতে পারে । তবে বাস্তবে তা কতটা কার্যকারী হবে, সে বিষয়ে সন্দেহ আছে ।’’
আরও পড়ুন:36 হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বাতিলের নির্দেশ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের