কলকাতা, 9 জুন: বৃহস্পতিবার ঘোষণা হয়েছে রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিনক্ষণ। আর শুক্রবার থেকে শুরু হয়ে গিয়েছে মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া। চলবে আগামী 15 জুন পর্যন্ত। তবে প্রথমদিনের মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন জেলায় উত্তেজনা এবং অশান্তির খবর সামনে এসেছে ৷ এই আবহে এদিনই কলকাতা হাইকোর্টে প্রধান বিচারপতির এজলাসে একপ্রস্থ শুনানি হয়েছে পঞ্চায়েত মামলা নিয়ে ৷ আর এরপরই রাজ্য নির্বাচন কমিশনের তরফে জানা গিয়েছে, মনোনয়ন জমা দেওয়ার মেয়াদ বৃদ্ধি করায় আপত্তি নেই ৷ অবশ্য এক্ষেত্রে আদালতের নির্দেশের দিকেই তাকিয়ে আছে কমিশন ৷
এদিন মনোনয়ন জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে একাধিক জেলায় হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে শাসক এবং বিরোধীদলের কর্মী-সমর্থকরা ৷ বিভিন্ন জায়গা থেকেই অশান্তির খবর এসেছে। ইতিমধ্যেই কংগ্রেস রাজ্য নির্বাচন কমিশনে এসে বিষয়টি নিয়ে নালিশও জানিয়েছে। বিরোধীদের দাবি, একদিকে যেমন প্রায় 72 হাজার মনোনয়ন জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে সময়সীমা অনেক কম। অন্যদিকে, মনোনয়ন জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে কমিশনের বেঁধে দেওয়া সময় অর্থাৎ বেলা তিনটে পর্যন্ত, তাও অত্যন্ত কম। এই সময় বাড়িয়ে বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত করার দাবি জানিয়েছে বিরোধীরা। কমিশন সূত্রে খবর, যে মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার দিন বৃদ্ধি করা হবে কি না, তা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে যে মামলা করা হয়েছে তার পরবর্তী শুনানি আগামী সোমবার। তাই আগামী সোমবার আদালতের তরফে যা নির্দেশ দেওয়া হবে সেই মত কাজ করবে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। এক্ষেত্রে যদি আদালত সময়সীমা বৃদ্ধি করার নির্দেশ দেয়, তবে দিন বাড়াতে কমিশনের আপত্তি থাকার কথা নয় বলেও জানাচ্ছেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকরা ৷
কমিশন সূত্রে খবর, মনোনয়ন পত্র জমা করার ক্ষেত্রে বেলা তিনটের পরিবর্তে বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত করা হবে না। সেক্ষেত্রে দিন বাড়ানো হবে ৷ এমনটাই জানা গিয়েছে কমিশনের তরফে। কারণ হিসাবে কমিশনের দাবি, আইন অনুসারে মনোনয়ন পত্র বেলা তিনটে পর্যন্তই জমা করা যায়। ইতিপূর্বে কখনও পাঁচটা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা করার উদাহরণ নেই। পাশাপাশি এদিন রাজ্যের মুখ্যসচিব এবং রাজ্য পুলিশের ডিজির সঙ্গে রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের বৈঠক হয় ৷ মূলত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েই আলোচনা হয় তাঁদের মধ্যে। রাজ্যের স্পশকাতর বুথগুলিতে কত ফোর্স মজুত করা হবে, প্রতিটি বুথে সিসিটি থাকবে কি না, এছাড়াও একাধিক বিষয় নিয়ে এদিন আলোচনা হয়েছে তাঁদের। অন্যদিকে, এদিন সমস্ত জেলাশাসকদের সঙ্গেও ভার্চুয়ালি বৈঠক করেন কমিশনের আধিকারিকরা। তবে সবকটি বুথে সিসিটিভি নজরদারি থাকবে কি না, সেটা এখনই বলতে পারছেন না রাজ্য নির্বাচন কমিশন ৷ তবে কমিশন সূত্রে খবর, 100 শতাংশ বুথে সিসিটিভি নজরদারি থাকার সম্ভবনা কম। কারণ, পূর্বের ভোটেও কখনও 100 শতাংশ বুথে ছিল না সিসিটিভি। অন্যদিকে নির্বাচনের সঙ্গে যাঁরা যুক্ত আছেন তাঁদের দুটি প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এই মাস থেকেই চালু হয়ে যাবে সেই প্রশিক্ষণ।
আরও পড়ুন:পঞ্চায়েত ভোটের আবহেই অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকে শুভেন্দু
অন্যদিকে, সর্বদলীয় বৈঠক কবে হবে কিংবা আদৌ হবে কি না, সেটা এখনই স্পষ্ট করে জন্য যায়নি। অন্যদিকে আগামিকাল থেকে গোটা রাজ্যে পুলিশ কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। এই বিষয় ইতিমধ্যেই বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। সমস্ত জেলার প্রশাসনকে তা জানিয়েছে অ্যাডিশনাল ডিজিপি (আইনশৃঙ্খলা) ৷ পঞ্চায়েত ভোট শেষ না হওয়া পর্যন্ত পুলিশ কর্মীদের ছুটি বাতিল থাকবে বলে জানা গিয়েছে। তবে জরুরি পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে ছুটি দেওয়া হবে বলেও জানা গিয়েছে। এছাড়াও আজ পাঁচটি জেলা থেকে অভিযোগ এসেছে। কমিশনের তরফ থেকে 24 ঘণ্টার মধ্যে অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট তলব করা হয়েছে।