পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক, কাল কলেজে যাবেন বৈশাখি

এবারে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের মাধ্যমে সমাধান সূত্র খোঁজার চেষ্টা মিল্লি আল-আমিন কলেজের৷ আজ বিকাশ ভবনে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক হয়৷ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন টিচার ইনচার্জ বৈশাখি বন্দ্যোপাধ্যায়ও৷

By

Published : Feb 6, 2020, 11:46 PM IST

baisakhi_partha_meet
বৈশাখি বন্দ্যোপাধ্যায়

কলকাতা, 6 ফেব্রুয়ারি : মিল্লি আল-আমিন কলেজের সমস্যা মেটাতে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক বিকাশ ভবনে। আজ শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সঙ্গে এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মিল্লি আল-আমিন কলেজের টিচার ইনচার্জ বৈশাখি বন্দ্যোপাধ্যায় ও মিল্লি আল আমিন কলেজ কর্তৃপক্ষ। মিল্লি আল-আমিন কলেজে টিচার ইনচার্জ বৈশাখি বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাজে যোগদান নিয়ে যে সমস্যা দেখা দিয়েছিল, আজকের এই ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে সেই সমস্যা সমাধানের প্রক্রিয়া শুরু হল বলে মনে করা হচ্ছে। বৈঠকে দুই পক্ষই শিক্ষামন্ত্রীর কাছে নিজেদের বক্তব্য পেশ করেন। শিক্ষামন্ত্রী তাঁদের বক্তব্য শুনে বিবেচনা করার আশ্বাস দিয়েছেন। আগামীকাল আবার কলেজে যাবেন বলে জানিয়েছেন বৈশাখি বন্দ্যোপাধ্যায়।

মিল্লি আল-আমিন কলেজের সমস্যা মেটাতে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক


মিল্লি আল-আমিন কলেজে টিচার ইনচার্জ বৈশাখি বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে টানাপোড়েন অনেকদিন ধরেই চলছে। সেই টানাপোড়েনের জেরে তিনি একাধিকবার ইস্তফাও দিয়েছেন। কিন্তু কোনওবারই তাঁর ইস্তফাপত্র গ্রহণ করেননি শিক্ষামন্ত্রী। কিন্তু, গত 17 ডিসেম্বর হঠাৎ তাঁর ইস্তফাপত্র গ্রহণ করে নেয় কলেজের অ্যাড-হক পরিচালন সমিতি। তার কিছুদিন পরেই অবশ্য উচ্চ শিক্ষা দপ্তর সেই অ্যাড-হক পরিচালন সমিতি এবং সেই পরিচালন সমিতির ইস্তফা গ্রহণের সিদ্ধান্তকে অবৈধ বলে ঘোষণা করে। টিচার ইনচার্জ পদে পুনর্বহাল করা হয় বৈশাখি বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সেই মর্মে 28 জানুয়ারি উচ্চ শিক্ষা দপ্তরের তরফ থেকে একটি চিঠিও পান বৈশাখি বন্দ্যোপাধ্যায়।

শিক্ষা দপ্তরের নির্দেশ অনুযায়ী গত সোমবার আবার কলেজে গিয়ে কাজে যোগ দেন বৈশাখি বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি কলেজে আসলে অশান্তির পরিবেশ তৈরি হতে পারে এই আশঙ্কায় আগে থেকেই মোতায়েন করা ছিল পুলিশ। তারপরও টিচার ইনচার্জ ও দপ্তর দ্বারা গঠিত পরিচালন সমিতির সম্পাদিকা হিসাবে তিনি একটি বৈঠক ডাকলে সেই এই বৈঠককে কেন্দ্র করে তুমুল উত্তেজনা ও অশান্তির পরিবেশ তৈরি হয় কলেজে। বৈশাখি বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, যে পরিচালন সমিতিকে সরকার অবৈধ ঘোষণা করেছেন সেই সমিতির লোকজন তাকে টিচার ইনচার্জ হিসেবে মানতে রাজি নয়। সেই সমিতির তরফেও সাংবাদিক বৈঠক করে দাবি করা হয়, বৈশাখি বন্দ্যোপাধ্যায়কে পুনর্বহাল করার অধিকার শিক্ষা দপ্তরের নেই। তাঁকে পুনর্বহাল করার অধিকার একমাত্র পরিচালন সমিতির এবং সমিতি তাঁকে পুনর্বহাল করেনি। বরং তাঁর ইস্তফাপত্র গ্রহণ করে নিয়েছে। সোমবার পরিস্থিতির এতটাই অবনতি ঘটে যে মোট 13 জনের বিরুদ্ধে বেনিয়াপুকুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন বৈশাখি বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর মঙ্গলবার সকালে শিক্ষামন্ত্রীর বাড়িতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন বৈশাখি বন্দ্যোপাধ্যায়। সমস্যা সমাধানের জন্য আজ বিকাশ ভবনে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

প্রায় দু'ঘণ্টা ধরে চলা এই বৈঠক শেষে দপ্তর গঠিত পরিচালন সমিতির সভাপতি আমিরুদ্দিন ববি বলেন, " আমরা যা অসুবিধা সুবিধা ছিল তা ওনার সঙ্গে আলোচনা করেছি। উনি আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন যে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বসে আরেকটা বৈঠক করে এটা মিটমাট করবেন।" বৈশাখি বন্দ্যোপাধ্যায়কে আপনারা যে টিচার ইনচার্জ হিসেবে চাইছেন না, সেই বিষয়ে কি কোনও সুরাহা হল? এপ্রশ্নের উত্তরে আমিরুদ্দিন ববি বলেন, "ওনাকে নিয়ে আমাদের কোনও সমস্যা নেই। উনি আগেও টিচার ইনচার্জ ছিলেন, এখনও আছেন। এবারে মন্ত্রী সাহেব যে গাইডলাইন করবেন আমরা সেই ভাবেই চলব।" সমস্যার কি সমাধান হবে? আমিরুদ্দিন ববি বলেন, "100 শতাংশ হবে। এখানে উচ্চশিক্ষা দপ্তরে সমাধান হবে না তো কোথায় হবে? সমাধান এখানেই হবে।" প্রয়োজনে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এই রকম কথা শোনা গেছিল গত সোমবার‌। সে বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে আমিরুদ্দিন ববি বলেন, " এই দরজায় যদি না হয় তাহলে পরবর্তীকালে সেটা দেখা যাবে।" আপনাদের সমস্যা কোন জায়গায় হচ্ছে? মিল্লি আল আমিন কলেজ কলেজের ম্যানেজিং কমিটির তরফ থেকে জিয়াউদ্দিন হায়দার বলেন, "আমাদের সমস্যা হচ্ছে সুপ্রিম কোর্ট যেদিন এই রায় দিল, সেই সময় আমাদের যে নিয়ম ছিল, সেটাই আমরা বহাল চাইছি। আর ইনি 2017 আইন অনুযায়ী চাইছেন নিয়মটাকে করতে। সেটাও আমরা করেছি।"

বৈঠক শেষে বৈশাখি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "কলেজে যারা মাদার অর্গানাইজেশনে আছেন তাঁরা একটা অনড় মনোভাব নিয়ে চলছেন। কিন্তু, আমাদের মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী উনি বারবারই বলছেন, কলেজ তো শিক্ষার্থীদের জন্য। তাঁদের স্বার্থে ওনারা যদি স্বাভাবিকভাবে চলতে দেন। এবং সেটা সরকারি নিয়মনীতি মেনেই চলতে হবে। সে ব্যাপারে উনি খুব স্পষ্টতই কথা রেখেছেন ওনার। এখন কতদূর কলেজ কর্তৃপক্ষ তা শুনবেন সেটা দেখার। উনি তো বারবারই ওনার সিদ্ধান্তে অটল থেকেছেন। উনি যতটা কলেজের পক্ষ থেকে সরকারকে সাহায্য করা সম্ভব উনি সেটা করেছেন। কিন্তু, যেটা আইনের মধ্যে নেই সেটা তো উনি করতে পারেন না। এইখানে একটা অদ্ভুত অনড় মানসিকতা রাখছেন। কতদূর ওনারা শুনবেন সে ব্যাপারে আমি সন্দিহান।"

কলেজ কর্তৃপক্ষের বক্তব্য সমাধানের ইঙ্গিত মিলেছে। সে বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে বৈশাখি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "যদি সত্যিই ওনারা মনে করেন সমস্যার সমাধান হলো তাহলে এটা মিল্লি আল আমিন কলেজ এর জন্য একটা নতুন অধ্যায় রচনা হবে আজ থেকে। এতে আমার থেকে বেশি খুশি আর কেউ হবে না।" আপনি কি আবার কলেজে যাবেন? এপ্রশ্নের উত্তরে বৈশাখি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "আমাকে মন্ত্রী কলেজে যেতে বললেন। আমি উনাদের সামনেই জিজ্ঞেস করলাম, আমি কলেজে যেতে চাই। কিন্তু এইরকম কলুষিত পরিবেশে নয়। ওনারা তো মন্ত্রীর সামনে এক ধরনের প্রমিস করে যান, কালকে গেলে বুঝতে পারব ওনারা কতটা সেই প্রমিসে টিকে থাকছেন।"

For All Latest Updates

TAGGED:

ABOUT THE AUTHOR

...view details