কলকাতা, 21 এপ্রিল: বাংলা পঞ্জিকা মতে, চৈত্র মাসে কোনও শুভ কাজ হয় না। তারপরেই বৈশাখ, জৈষ্ঠ, আষাঢ় ও শ্রাবণ মাসের বিয়ের লগ্ন থাকে। অনেকেই আবার বর্ষার জন্য শ্রাবণ মাসে বিয়ের অনুষ্ঠান এড়িয়ে চলেন। তাই বৈশাখ ও জৈষ্ঠ মাসকেই বিয়ের জন্য অনেকেই বেছে নেন৷ তার তোড়জোড় শুরু হয়ে যায় প্রায় তিন থেকে চার মাস আগেই৷
গয়না কেনা থেকে শুরু করে অগ্রিম টাকাও দিয়ে রাখা হয় ক্যাটারিং ও অনুষ্ঠান বাড়ি গুলিতে৷ এখানেই শেষ নয়, অগ্রিম টাকা দিয়ে রাখা হয় ফুলওয়ালা, বিউটি পার্লার, মিষ্টি বিক্রেতা, ডেকোরেটর, পুরোহিত সহ আরও বিয়ের কাজের সঙ্গে যারা জড়িত থাকেন তাঁদেরও৷ চরম ব্যস্ততায় নিশ্বাস নেওয়ার সময় পাননা তাঁরা৷
তবে, এবারে লক ডাউনের জেরে সে সব বন্ধ ৷ কোরোনার প্রভাব এসে পড়েছে এখানেও ৷ কোরোনার জেরে যখন দেশজুড়ে লক ডাউন চলছে, তখন অন্যান্য সংস্থার মতো ক্ষতির মুখ দেখছেন তাঁরাও ৷ লক ডাউনের ফলে বাতিল হয়ে যাচ্ছে একের পর এক অনুষ্ঠান৷ শুধু তাই নয়, অনেককেই ফেরত দিতে হচ্ছে অগ্রিম টাকাও৷ যার ফলে সমস্যায় পড়েছেন ক্যাটারিং সার্ভিস থেকে শুরু করে ইভেন্টের লোকেরাও৷ কলকাতার অন্যতম ক্যাটারিং সার্ভিস 'বিজলিগ্রিলের' ডিরেক্টর তপন বারিক বলেন, "লকডাউনের জেরে শুধু এপ্রিল মাসেই বিয়ে, উপনয়ন ও আরও কয়েকটি ছোটো অনুষ্ঠান মিলিয়ে প্রায় 17টি কাজ স্থগিত হয়ে রয়েছে। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি কাজ বাতিলও হয়েছে। তবে, যেসব কাজ স্থগিত হয়ে গেল সেগুলির পরবর্তী তারিখ নিয়ে এখনও কোনও কথা হয়নি। এর ফলে আমরা ব্যাপক আর্থিক লোকসানের মধ্যে পড়েছি। সারা বছরই ছোটো-বড় বহু অনুষ্ঠান, কর্পোরেট কাজ, জন্মদিনের অনুষ্ঠান থাকলেও বিয়ে বাড়ির অনুষ্ঠানের দিকে আমরা বেশি জোর দিয়ে থাকি। সেগুলি সবই হাতছাড়া হয়ে গেল।"
কোরোনা পরিস্থিতি সারিয়ে আবার কবে ছন্দে ফিরবে শহর, সেবিষয়ে সন্দিহান সকলেই৷ পরিস্থিতি ঠিক হলেও মানুষের মন থেকে কোরোনার ভয় অতি সহজেই দূর হবে না৷ তাই, স্থগিত হয়ে যাওয়া কাজ আবার কবে হবে বা নতুন করে কোনও কাজ হবে কি না সেবিষয়ে কোনও দিশা পাচ্ছেন না তাঁরা৷ এপ্রসঙ্গে তিনি বলেন, "কোরোনার আতঙ্ক কাটিয়ে কবে আবার পরিস্থিতি স্বাভাবিকভবে তা এখন বলা যাচ্ছে না। আর্থিক ক্ষতির একটা দীর্ঘস্থায়ী ছাপ পড়বে। যাঁরা আমাদের কাঁচা মাল জোগান দেন তাঁদের অনেকেই আমরা আগাম টাকা দিয়ে রেখেছি। সেই টাকাও আমরা এখন ফেরত নিতে পারছিনা।"