কলকাতা, 2 মার্চ: সকাল দশটা বাজলেই উপচে পড়ছে ভিড় । সামাজিক দূরত্ব না মেনেই লাইনে দাঁড়িয়ে গ্রাহকরা । লকডাউন চললেও শহরের ব্যাঙ্কগুলির এই চেনা ছবিটা এখনও বদলায়নি । টাকা তুলতে, জমা দিতে এবং পেনশন তোলার লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেল প্রবীণদেরও । আর এতেই কোরোনা সংক্রমণের ভয় জাঁকিয়ে বসেছে ব্যাঙ্ক কর্মীদের মধ্যে ।
আর্থিক বছর শেষের মাস । বিভিন্ন ব্যাঙ্কের শাখাগুলিতে সকাল থেকেই গ্রাহকরা ভিড় জমাচ্ছেন । এতে দিশেহারা ব্যাঙ্কের কর্মীরা । এভাবে কোরোনা ভাইরাস সংক্রমণের আশঙ্কায় ভুগছেন তাঁরা । অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক অফিসার কনফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় দাস আশঙ্কার কথা জানিয়ে বলেন, "ব্যাঙ্কগুলিতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তাকর্মী নেই । একসঙ্গে বহু মানুষ লাইনে দাঁড়াচ্ছেন । এক মিটার ব্যবধান মেনে চলছেন না । সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখেই ব্যাঙ্কগুলিতে সকাল থেকেই দীর্ঘ লাইন । অফিসার এবং কর্মীরা নিজেদের কাজ নিয়ে ব্যস্ত । সুরক্ষার বিষয়টি খেয়াল রাখা তাদের পক্ষে সম্ভব নয় ।"
শুক্র ও শনিবার ভিড় আরও বাড়ার আশঙ্কা করছেন ব্যাঙ্ক কর্মীরা । বেতন তোলা, প্রবীণ নাগরিকদের পেনশন, লাইফ সার্টিফিকেট জমা দেওয়া তো আছেই, তার উপর প্রধানমন্ত্রীর গরিব কল্যাণ যোজনার টাকা দেওয়াও রয়েছে । এই যোজনায় 500 টাকা করে দরিদ্রদের দেওয়া হচ্ছে ব্যাঙ্কের মাধ্যমে । সেই টাকা নিতে অন্তত আড়াই লাখেরও বেশি মানুষ শহরের বিভিন্ন ব্যাঙ্কের শাখায় আগামী দু'দিন ভিড় করবেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ব্যাঙ্ক অফিসার এবং কর্মচারীরা ।
ব্যাঙ্ক অফিসার সংগঠনের নেতৃত্ব এই নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে ইতিমধ্যেই আলোচনা করেছে । বৃহস্পতিবার ব্যাঙ্কের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ইউনিয়নের নেতৃত্ব কথা বলেছে । কীভাবে কোরোনা ভাইরাস সংক্রমণের থেকে ব্যাঙ্ক কর্মীদের বাঁচানো যায় তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে । যদিও সমাধান এখনও মেলেনি । রাজ্যের বিভিন্ন ব্যাঙ্কের বিভিন্ন শাখায় এত মানুষের জনসমাগম লকডাউনকে উপেক্ষা করার সমান বলে মনে করছেন ব্যাঙ্ক অফিসার সংগঠনের সদস্যরা ।
এই পরিস্থিতিতে ব্যাঙ্ক অফিসাররা সাধারণ মানুষের কাছে সারা মাস জুড়ে ধীরে সুস্থে লেনদেন করার আবেদন করছেন । যেহেতু কাজের সময় সকাল দশটা থেকে বিকেল চারটে, তাই একসঙ্গে সকলে ভিড় না করে সারা মাস জুড়ে ধীরে ধীরে অর্থের লেনদেন করার কথা বলা হচ্ছে । এতে কিছুটা হলেও ভাইরাসের সংক্রমণ এড়ানো যাবে ।