কলকাতা , 20 সেপ্টেম্বর : ঝাড়গ্রামের সরকারি হাসপাতালের এক চিকিৎসককে নিগ্রহের ঘটনায় অবিলম্বে সরকারের হস্তক্ষেপ চাইল চিকিৎসকদের একটি সংগঠন । এই ঘটনায় দোষীদের শাস্তির পাশাপাশি হাসপাতালের পরিকাঠামোগত উন্নয়নের দাবিতে স্বাস্থ্য দপ্তরে একটি স্মারকলিপি জমা দিয়েছে তারা । শুধু তাই নয়, ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক ও মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকাররিককেও একটি স্মারকলিপি দিয়েছে তারা ৷
সার্ভিস ডক্টরস ফোরামের তরফে স্বাস্থ্য দপ্তরে পেশ করা স্মারকলিপিতে বিভিন্ন দাবি পূরণের কথাও বলা হয়েছে । তাদের দাবিগুলি হল-দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে, রোগী সংখ্যার অনুপাতে চিকিৎসক, নার্স এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ করতে হবে । কোরোনা হাসপাতাল পরিচালনার জন্য জেলার সব চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীকে যুক্ত করে একটি জেনেরাল ডিউটি-রস্টার তৈরি করতে হবে ৷ প্রত্যেককে ডিউটি শেষে 14 দিনের কোয়ারানটিনে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তরফে । কোরোনার ডিউটি চলাকালীন স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্মীদের থাকা, খাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। ঝাড়গ্রামের নাইট শেল্টার , যেটা কোভিড হাসপাতাল নামে পরিচিত সেটা আসলে জেলা হাসপাতালের রোগীর পরিজনদের থাকার জায়গা হিসেবে নির্মিত হয়েছিল । ওখানে লিফটের কোনও ব্যবস্থা নেই ৷ আশঙ্কাজনক রোগীকে কীভাবে ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়া হবে তার ব্যবস্থা করতে হবে । ঝাড়গ্রামের কোরোনা হাসতাপাতালের CCU-তে সেন্ট্রাল অক্সিজেন , সাকশন , হেপা ফিল্টার , সেন্ট্রাল মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে ।
ঝাড়গ্রামে চিকিৎসক নিগ্রহের ঘটনায় সরকারের দ্রুত হস্তক্ষেপের দাবি চিকিৎসক সংগঠনের - harassment of a doctor in Jhargram
শুক্রবার ঝাড়গ্রামের হাসপাতালে কোরোনা রোগীর মৃত্যুতে চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখান পরিজনরা ৷ এমনকী হাসপাতালের এক চিকিৎসককে তারা মারধর করে বলে অভিযোগ ৷ এরপরই এই ঘটনায় দোষীদের শাস্তির দাবিতে সরকারের দ্রুত হস্তক্ষেপ চেয়েছে রাজ্যের চিকিৎসক সংগঠন ৷
![ঝাড়গ্রামে চিকিৎসক নিগ্রহের ঘটনায় সরকারের দ্রুত হস্তক্ষেপের দাবি চিকিৎসক সংগঠনের Jhargram](https://etvbharatimages.akamaized.net/etvbharat/prod-images/768-512-wb-kol-02a-violence-on-doc-pic-7203421-20092020063955-2009f-1600564195-806.jpg)
শুক্রবার রাতে এক কোরোনা রোগীর মৃত্যুতে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে ঝাড়গ্রামের ওই হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন পরিজনরা । শনিবার সকালেও তাঁরা দফায় দফায় ঝাড়গ্রাম-বাঁকুড়া পাঁচ নম্বর রাজ্য সড়ক অবরোধ করেন । দু'টি রাজনৈতিক দলের কর্মী-সমর্থকরাও ওই পথ অবরোধে সামিল হন । যদিও পুলিশের আশ্বাসের পর ওই পথ অবরোধ তুলে নেওয়া হয় । জানা গিয়েছে, এরপর আচমকা মৃত ওই রোগীর পরিজনরা ঝাড়গ্রামের হাসপাতালের এক চিকিৎসককে মারধর করে বলে অভিযোগ । এর জেরে বারবার চিকিৎসক নিগ্রহের ঘটনায় দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানিয়ে ওই হাসপাতালের জরুরি বিভাগ ছাড়া অন্য সব বিভাগের চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীরা অবস্থান-বিক্ষোভ শুরু করেন । হাসপাতালের সুপারও এই অবস্থান-বিক্ষোভে ছিলেন । চিকিৎসক নিগ্রহের ঘটনায় চিকিৎসকদের বিভিন্ন সংগঠনও প্রতিবাদে সামিল হয়েছে।
এদিকে এই ঘটনায় রাজ্যের চিকিৎসকদের অন্য একটি সংগঠন ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টরস ফোরামের তরফে জানানো হয়েছে, ঘটনাটিকে রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিবের নজরে এনে অবিলম্বে এই ঘটনায় সরকারের হস্তক্ষেপ চাওয়া হয়েছে । সংগঠনের তরফে আরও জানিয়েছে, রাজ্যের মধ্যে ঝাড়গ্রাম একমাত্র জেলা যেখানে মাত্র 75 বেডের লেভেল-4-এর একটি কোভিড সেন্টার রয়েছে । সেক্ষেত্রে কোরোনা পরিস্থিতি মোকাবিলার ক্ষেত্রে জেলার প্রশাসন-সহ স্বাস্থ্য প্রশাসন চূড়ান্ত ব্যর্থ । কোনও পক্ষপাতিত্ব না রেখে চিকিৎসক নিগ্রহের এই ঘটনায় অবিলম্বে দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টরস ফোরাম ।