কলকাতা, 27 ডিসেম্বর: মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন খাদ্যভবনে সার্ভিস রিভলবার দিয়ে আত্মঘাতী হওয়া পুলিশ কনস্টেবল ! এমনটাই খবর লালবাজার সূত্রে ৷ বড়দিনের রাতের ওই ঘটনায় মৃত কনস্টেবল তাপস দাসের ছয় জন সহকর্মীকে মঙ্গলবার লালবাজারে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে ৷ এমনকি তাঁর পরিবারের সদস্যদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করেন লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগের আধিকারিকরা ৷ তাঁদের দাবি, সেই জিজ্ঞাসাবাদ থেকে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন যে, পারিবারিক অশান্তিতে জেরবার ছিলেন তাপস দাস ৷
লালবাজার সূত্রে খবর, তদন্তে জানা গিয়েছে, বাজার থেকে এবং সহকর্মীদের কাছে বেশ কিছু টাকা ধার নিয়েছিলেন কলকাতা পুলিশের রিজার্ভ ফোর্সের কনস্টেবল তাপস দাস ৷ মঙ্গলবার রাতে তাঁর ছয় জন সহকর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরেই নাকি মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন তিনি ৷ আর তাই মাঝেমধ্যেই বলতেন, "আর বেঁচে থাকতে ইচ্ছে করে না ৷" সহকর্মীদের দাবি, তাঁরা কখনওই এই কথাগুলি সেভাবে গুরুত্ব দেননি ৷ ভেবেছিলেন, কাজের চাপে বিরক্তি থেকে হয়তো এমনটা বলছেন তাপস ৷
সূত্রে খবর, তাপস দাস যদি এতটাই মানসিকভাবে বিধ্বস্ত ছিলেন, তাহলে তাঁরা তা উচ্চপদস্থ আধিকারিককে জানাননি কেন ? এই প্রশ্নের জবাবে ওই ছয় জন পুলিশকর্মী জানিয়েছেন, বিষয়টি যে এতটা গুরুতর হয়ে যাবে, তা তাঁরা ভাবতে পারেননি ৷ সম্প্রতি 14 দিনের ছুটি নিয়ে বাড়ি গিয়েছিলেন তাপস দাস ৷ কিন্তু, কয়েকদিন পরেই তিনি রহস্যজনকভাবে ছুটি বাতিল করে কাজে যোগ দেন ৷ আর তারপর থেকেই তাপস দাসের শারীরিক ভাষা বদলে গিয়েছিল ৷ এমনকি পুলিশ ব্যারাক ও মেসে থাকা-খাওয়ার জন্য যে খরচ দিতে হয়, তাও অগ্রিম মিটিয়ে দিয়েছিলেন ৷
কিন্তু, হঠাৎ করে এমন বদলের কারণ কী ? তদন্তকারীরা এই প্রশ্নের উত্তর পেতে পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ৷ সেই সূত্রে জানা গিয়েছে, বাড়িতেও সাম্প্রতিক সময়ে অশান্তি চলছিল ৷ যা নিয়ে বিধ্বস্ত ছিলেন তাপস দাস ৷ এমনকি দীর্ঘদিন ধরে তিনি স্নায়ুর রোগে ভুগছিলেন ৷ এত সমস্যার কারণেই তিনি মানসিকভাবে অবসাদে ভুগছিলেন বলে অনুমান তদন্তকারীদের ৷ এই ঘটনার পর প্রশ্ন উঠছে, পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের মানসিক এবং শারীরিক স্বাস্থ্যের কথা ভাবা হয় ৷ কিন্তু, নিচুতলার পুলিশ কর্মীদের নিয়ে কেন এত গা-ছাড়া মনোভাব প্রশাসনের ?
আরও পড়ুন:
- আত্মহত্যা রুখতে পুলিশকর্মীদের মানসিক স্বাস্থ্যের খোঁজ নেওয়া উচিত, বলছেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ
- খাদ্যভবনের ভিতরে সার্ভিস রিভলভার থেকে গুলি চালিয়ে আত্মঘাতী কলকাতা পুলিশের কনস্টেবল