কলকাতা, 6 অগস্ট: তৃণমূল কংগ্রেসে এই মুহূর্তে বড় অস্বস্তির নাম হুমায়ুন কবীর । যদিও এই মুহূর্তে এক হুমায়ূন মুচলেকা দিয়ে দলকে মেনে চলার বার্তা দিয়েছেন । তবে অপর হুমায়ুন এখনও নিয়ন্ত্রণের বাইরে । দল তাঁর নিরাপত্তা প্রত্যাহার করায় যতদূর জানা যাচ্ছে বিরোধী বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকীর পথে হেঁটে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা চাইতে পারেন তিনি ৷ আদালতেরও দ্বারস্থ হতে পারেন ।
দলের অস্বস্তি হুমায়ুন: প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত নির্বাচন পরবর্তী সময়ে গত কয়েক দিন ধরেই দুই হুমায়ুন দলের অস্বস্তি বাড়িয়েছিল । প্রথমজন ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর, দ্বিতীয় জন ডেবরার বিধায়ক । ইতিমধ্যেই ভরতপুরের বিধায়ককে দলের তরফ থেকে কারণ দর্শানোর নোটিশ ধরানো হয়েছে । গত শনিবার তার জবাব দেন ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন । এরপর গতকালই তৃণমূল ভবনে তাঁকে নিয়ে আলোচনায় বসেছিল দল ।
সুব্রত বক্সির বার্তা: সেখানে মালদা ও মুর্শিদাবাদের জেলা নেতৃত্বও উপস্থিত ছিল । তখনই দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি তাঁকে বার্তা দিয়েছেন, কোনওভাবেই দলবিরোধী বক্তব্য রাখা যাবে না প্রকাশ্যে । এটাই শেষ সুযোগ । কাজ করতে গেলে মতানৈক্য হতে পারে । কিন্তু তা নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খোলা যাবে না । বলতে গেলে তা বলতে হবে দলের অন্দরেই । এ ক্ষেত্রে সুব্রত বক্সির স্পষ্ট বার্তা, কোনওভাবেই দলীয় নির্দেশ উপেক্ষা করা যাবে না । এ দিন অবশ্য হুমায়ুন কবীর দলকে অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলার বার্তাও দিয়েছেন । ফলে, মনে করা করা হচ্ছে, আপাতত তিনি নিয়ন্ত্রণেই রয়েছেন । তবে এই মুহূর্তে নিয়ন্ত্রণের বাইরে অপর হুমাযুন কবীর ।
আরও পড়ুন:হুমায়ুন কবির 'ঘরশত্রু বিভীষণ', কটাক্ষ তৃণমূল সাংসদ অপরূপার
বেসুরো ডেবরার বিধায়ক: রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী, ডেবরার বিধায়ক আদতে প্রাক্তন আইপিএস । একদা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যথেষ্ট আস্থাভাজন হিসাবেই পরিচিত ছিলেন তিনি । আর সেই কারণে চাকরি থেকে ভিআরএস নিয়ে দলে এসেছিলেন । দল প্রথমে তাঁকে মন্ত্রীও করে । কিন্তু সেই সুখ বেশিদিন স্থায়ী হয়নি । এ বার পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর থেকেই তিনি মুখ খুলতে শুরু করেন । পঞ্চয়েত নির্বাচনের পর পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সরব হয়েছিলেন এই তৃণমূল বিধায়ক । তারপর বাদল অধিবেশনে প্রায় প্রত্যেক দিন একটা না একটা প্রশ্ন করে দলকে বিব্রত করেছেন । সেখান থেকেই দলের রোষানলে পড়েন এই তৃণমূল বিধায়ক ।
দল তাঁকে নিয়ন্ত্রণে বিধায়ককে দেওয়া নিরপত্তা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয় । বিধায়কের নিরাপত্তা প্রত্যাহার প্রসঙ্গে তাঁর জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা বলেন, "দলের তরফে নিরাপত্তা প্রত্যাহারের বিষয়টি শুনেছি, মনে রাখতে হবে কেউ দলের ঊর্ধ্বে নয় । সবাইকেই দলীয় শৃঙ্খলা মেনে চলতে হয় । দলীয় নির্দেশ মেনে না চললে দল তো পদক্ষেপ করবেই ।"
কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা চাইবেন ? এরপর বিধায়কের ঘনিষ্ঠ সূত্র থেকে যতদূর জানা যাচ্ছে, এই অবস্থায় নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আদালতের দ্বারস্থ হতে পারেন তিনি । এমনটাও শোনা যাচ্ছে, আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকীর রাস্তায় হেঁটে, কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা চাইতে পারেন তিনিও । আর যদি তা হয়, কোনও সন্দেহ নেই রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের জন্য তা যথেষ্ট অস্বস্তির কারণ হবে । আর এই অবস্থায় দল তাঁর বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করে কি না সেটাই এখন দেখার ।