কলকাতা, 6 জানুয়ারি : নিউ আলিপুরের উদ্ধার হল যুবতির পচাগলা দেহ । বিজয় কুমার কাটনানি নামে এক বৃদ্ধের ফোনে বিষয়টি জানতে পারে পুলিশ । এরপর 9বি সাহাপুর রোডের একটি বহুতল থেকে যুবতির মৃতদেহ উদ্ধার করে নিউ আলিপুর থানার পুলিশ । ঘটনায় ওই যুবতির মায়ের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন উঠছে ৷
29 জানুয়ারি কাটিহার যাচ্ছিলেন নিউ আলিপুরের বাসিন্দা নিলম ধানানি । হাওড়া স্টেশনে তিনি অসুস্থ বোধ করেন । স্টেশন কর্তৃপক্ষ তাঁকে হাওড়া স্টেট জেনেরাল হাসপাতালে ভরতি করে । আজ নিলম তাঁর দাদা বিজয় কুমার কাটনানিকে ফোন করেন ৷ জানান তাঁর মেয়ে গুড্ডন ওরফে কাভি (26) আত্মহত্যা করেছে । বাড়িতেই রাখা রয়েছে মৃতদেহ । পুলিশ ওই যুবতির পচাগলা মৃতদেহ উদ্ধার করলেও মৃতদেহটি খাটের উপর যত্ন করে রাখা ছিল । পরনে ছিল পরিষ্কার জামাকাপড় । ঘর থেকে উদ্ধার হয় একটি সুইসাইড নোট । হাতের লেখা মিলিয়ে দেখা যায় সুইসাইড নোটে নিলম ধানানির হাতের লেখা । হাওড়া হাসপাতাল সূত্রে খবর নিলম ধানানির সেরিব্রাল অ্যাটাক হয়েছে ৷ কিডনিরও সমস্যা আছে ।
প্রাথমিকভাবে নিলম ধানানি জানিয়েছেন, দু'জনে একসঙ্গে আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন । সেই সূত্রেই সুইসাইড নোটটি লিখেছিলেন । পাশাপাশি ঘরের মধ্যে দেখা যায় সিলিং ফ্যানের সঙ্গে একটি দড়ি গলায় ফাঁস লাগানোর মত করে ঝোলানো রয়েছে ৷ যদিও প্রাথমিকভাবে পুলিশ ওই যুবতির গলায় কোনও ফাঁসের চিহ্ন পায়নি । আর এই সব থেকেই তৈরি হচ্ছে রহস্য ।
দু'জনে একসঙ্গে আত্মহত্যা করার কথা বলা হলে ওই মহিলা হাওড়া স্টেশনে গেলেন কীভাবে ৷ তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন, 23 ডিসেম্বর আত্মহত্যা করেছে গুড্ডন । যদি ধরে নেওয়া যায় মেয়ে আত্মহত্যা করার পর তিনি আর আত্মহত্যা করতে পারেননি, তবে তিনি ঘটনার প্রায় ছ'দিন পরে হাওড়া স্টেশনে গেলেন কীভাবে ? ওই মহিলা পুলিশকে ঘটনার কথা জানালেন না কেন? হাওড়া স্টেশনে তিনি অসুস্থ না হলে, এতদিনে কাটিহার পৌঁছে যেতেন ৷ মেয়ের মৃতদেহ ফেলে রেখে পালিয়ে যাচ্ছিলেন কেন? 23 থেকে 29 তারিখ পর্যন্ত তবে কি মেয়ের মৃতদেহ আগলে ছিলেন নিলম ধানানি? তবে কি আরও এক রবিনসন স্ট্রিট কাণ্ডের পুনরাবৃত্তি? পুরো বিষয়টি আপাতত রহস্যে মোড়া । আগামীকাল গুড্ডনের দেহের ময়নাতদন্ত হবে । তারপরেই জানা যাবে প্রথম প্রশ্নের উত্তর । আদৌ কি সুইসাইড করেছিলেন গুড্ডন? নাকি এ'টি খুনের ঘটনা ।