কলকাতা, 18 মে : ঘূর্ণিঝড় আমফান আরও কিছুটা শক্তি বৃদ্ধি করে সুপার সাইক্লোনে পরিণত হয়েছে । এই মুহূর্তে দিঘা থেকে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে 920 কিলোমিটার দূরে বঙ্গোপসাগরের উপর অবস্থান করছে । আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, 20 মে বিকেলে অথবা সন্ধ্যের দিকে এটি পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করবে ।
দিঘা ও সুন্দরবনের কাছ থেকে অতিক্রম করার সময় এই সুপার সাইক্লোন আমফানের তীব্রতা অনেক বেশি থাকবে । সেই সময় গতিবেগ থাকবে 165-175 কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা । আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের অধিকর্তা সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, "20 মে আবহাওয়া অত্যন্ত খারাপ থাকবে । দুপুরের পর থেকে ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়া না পর্যন্ত উত্তর ও দক্ষিণ 24 পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, কলকাতা, হাওড়া ও হুগলিতে ঝোড়ো হাওয়ার দাপট সব থেকে বেশি থাকবে । 165-175 কিলোমিটার বেগে ঝড় বইবে । সর্বোচ্চ 195 কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা বেগে ঝোড়ো হাওয়ার দাপট চলতে পারে । এই ঘূর্ণিঝড়ের ফলে সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস ঘটবে । ঘূর্ণিঝড় যখন আছড়ে পড়বে তখন সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস ঘটে । উত্তর 24 পরগনার ক্ষেত্রে এই জলোচ্ছ্বাস 4 থেকে 5.5 মিটার পর্যন্ত হতে পারে । পূর্ব মেদিনীপুরের ক্ষেত্রে 3 থেকে 4 মিটার পর্যন্ত জলোচ্ছ্বাসের সম্ভাবনা রয়েছে ।"
আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের সতর্কবার্তা :
উত্তর ও দক্ষিণ 24 পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়া ও হুগলি এবং কলকাতায় আগামীকাল দুপুরের পর থেকেই হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি শুরু হবে । উত্তর ও দক্ষিণ 24 পরগনার উপকূলবর্তী এলাকায় ভারী বৃষ্টি হতে পারে । আগামীকাল দুপুরের পর থেকেই উপকূলের জেলাগুলোতে ঝোড়ো হাওয়ার দাপটও শুরু হয়ে যাবে । যার গতিবেগ থাকবে 55-65 কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা । সর্বোচ্চ ঝোড়ো হাওয়ার গতি থাকবে 75 কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা । 20 মে বৃষ্টির পরিমাণ বেশ খানিকটা বৃদ্ধি পাবে । দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সব জেলাতেই বৃষ্টি হবে । তবে বেশ কয়েকটি জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সর্তকতা দেওয়া হয়েছে ।
উত্তর ও দক্ষিণ 24 পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়া ও হুগলি এবং কলকাতায় অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে । 20 মে এই ঝোড়ো হাওয়ার দাপট আরও বৃদ্ধি পাবে । 20 মে সকালে এই ঝোড়ো হাওয়ার দাপট বেড়ে পৌঁছে যাবে 75-85 কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায় এবং সর্বোচ্চ 95 কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায় । হাওয়ার দাপট বেশি থাকবে এই জেলাগুলিতে । উত্তরবঙ্গের ক্ষেত্রে মালদা ও দুই দিনাজপুরে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হবে 20 মে । বিক্ষিপ্তভাবে ভারী বৃষ্টিও হতে পারে । 21 তারিখ থেকে উত্তরবঙ্গে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়বে । উত্তরবঙ্গের প্রায় সমস্ত জেলাতেই বৃষ্টি হবে এবং বেশ কয়েকটি জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে ।
ঘূর্ণিঝড় আমফানের বর্তমান অবস্থান মৎস্যজীবীদের আজ থেকেই সমুদ্র যেতে নিষেধ করা হয়েছে । যাঁরা সমুদ্রে গিয়েছিলেন তাঁদের ইতিমধ্যেই ফিরে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । কৃষকদের জন্য ফসল দ্রুত সরিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর । আগামী কয়েকদিন নতুন করে গাছপালা বপন করতে নিষেধ করা হয়েছে । যাঁরা মাটির বাড়িতে আছেন অথবা নিচু জায়গায় আছেন তাঁদেরকে উঁচু ও নিরাপদ জায়গায় সরে যেতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ।
এই সময় বড় গাছ টেলিফোনের তার ও বিদ্যুতের খুঁটির উপর পড়ার সম্ভাবনা আছে তাই নিরাপদ দূরত্বে থাকার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ।