কলকাতা, 15 অক্টোবর: দলীয় সদস্যদের 'ত্রুটি সংশোধন অভিযান'-এর পর এবার ধর্ম সম্পর্কে বাম-কর্মীদের অবস্থান জানতে চায় দল ৷ সিপিএম মনে করে দলের বিভিন্ন এরিয়া কমিটির বহু সদস্যই ধর্মে বিশ্বাস করেন ৷ ধর্মীয় আচরণ মেনেও চলেন। কখনও কখনও পারিবারিক অথবা সামাজিক চাপে পড়ে দলীয় সদস্যদের বেশ ঘটা করেই ধর্মের নানা আচার পালন করতে হয় ৷ এমতাবস্থায় বাস্তব পরিস্থিতি ঠিক কী তা জানতে তৎপর হল দল।
নেতা-কর্মী বা সমর্থকরা ধর্মাচরণ করবেন কি না, তা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিতর্ক চলছে সিপিএমের অন্দরে ৷ কমবেশি দু'দশক আগে তৎকালীন রাজ্য সম্পাদক অনিল বিশ্বাস কার্যত ঠারেঠোরে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন দলীয় নেতা-কর্মীদের পুজোর সঙ্গে যুক্ত হওয়া দল ভালোভাবে মেনে নেয় না ৷ দলীর নেতার হাতে পুজোর উদ্বোধনও তাঁদের কাছে কাম্য বিষয় নয়। শুধু তাই নয়, দুর্গাপুজো না-বলে দলীয় স্তরে শুধু শারদোৎসব বলা যায় কি না এমন আলোচনাও একটা সময় হয়েছে আলিমুদ্দিনে ৷
তবে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী সুভাষ চক্রবর্তীর মতো কেউ কেউ প্রকাশ্যেই এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন ৷ পদে থাকাকালীন রাজ্যের এই প্রাক্তন পরিবহণ মন্ত্রী দুর্গাপুজোর উদ্বোধনও করেছেন ৷ তাঁর যুক্তি ছিল, তিনি বাঙালি ৷ দুর্গাপুজো বাঙালির সর্বশ্রেষ্ঠ উৎসব ৷ তাই তা থেকে নিজেকে দূরে রাখার কোনও যুক্তিগ্রাহ্য কারণ নেই ৷ অতীতের সেই বিতর্ক যে এখনও দলের অন্দরে প্রাসঙ্গিক তা সিপিএমের এই নয়া সমীক্ষা অভিযান থেকেই স্পষ্ট বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল ৷
বর্তমানে সার্বিক পরিস্থিতি এমন যে, কম-বেশি প্রায় প্রতিটি এরিয়া কমিটিতেই বস্তুবাদী নাস্তিকদের সংখ্যা কমেছে ৷ আলিমুদ্দিন স্ট্রিট সূত্রে খবর, আগামী নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে হাওড়ায় সিপিএম রাজ্য কমিটির বর্ধিত বৈঠক হবে ৷ সেই বৈঠকেই দু'টি সংশোধন অভিযানের যাবতীয় রিপোর্ট নিয়ে কাটাছেঁড়া চলবে ৷ মাস দেড়েক আগে সিপিএম পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটি জেলায় জেলায় দলীয় সদস্যদের 'ত্রুটি সংশোধন অভিযান' চালায় ৷