কলকাতা, 22 জুন : রাজ্য রাজনীতিতে এই মুহূর্তে সবচেয়ে চর্চিত বিষয় মুকুল রায়ের ভবিষ্যৎ । শুভেন্দু অধিকারী দলত্যাগ বিরোধী আইনে তাঁর বিধায়ক পদ খারিজ করতে বদ্ধপরিকর । অন্যদিকে শাসকদলের তরফ থেকে শোনা যাচ্ছে এখনই তাঁকে পদত্যাগ করতে বারণ করা হয়েছে । আর এসবের মধ্যেই জল্পনা বেড়েছে আগামী দিনে বিধানসভায় পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি বা পিএসির চেয়ারম্যান পদ দেওয়া হতে পারে মুকুল রায়কে । আর সেখান থেকেই তৈরি হয়েছে নতুন বিতর্ক । যদি তা বাস্তবায়িত হয় তাহলে অতীতে মানস ভুঁইয়া, শঙ্কর সিংহদের পথে হাঁটা হবে । যাঁরা নামে বিরোধী বিধায়ক ছিলেন কিন্তু বিরোধী দল ত্যাগ করে শাসক শিবিরে নাম লিখিয়েছিলেন তাঁরা ।
যদিও সাংবিধানিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাধারণত পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি বিরোধীদের দেওয়া হয় । পরিষদীয় রাজনীতিতে এটাই রীতি । তবে এর জন্য কোনও লিখিত নিয়ম নেই । অধ্যক্ষ চাইলেই অন্য কাউকে এই পদ দিতে পারেন । আইন অনুযায়ী, পিএসি-র চেয়ারম্যানের পদ বিরোধী দলকে দিতেই হবে— এমন কোনও আইনি বাধ্যবাধকতা নেই । পুরোটাই হয়ে আসছে রীতি এবং রেওয়াজের উপর ভিত্তি করে । দেশের সংসদীয় এবং রাজ্যের পরিষদীয় গণতন্ত্রে শাসক ও বিরোধীপক্ষের পরিষদীয় দলের আলোচনার ভিত্তিতে পিএসি-র চেয়ারম্যান পদটি বিরোধীপক্ষকে দেওয়া হয়ে থাকে । ঠিক যে ভাবে লোকসভায় পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান হয়েছেন কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতা অধীর চৌধুরী । কেন্দ্রের শাসক বিজেপি ওই রেওয়াজ না মানলেও অন্তত আইনগত দিক থেকে বিরোধী কংগ্রেসের কিছু বলার ছিল না ।
যেমন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভাতেও শাসক তৃণমূল যদি মনে করে, তাঁরা বিরোধী বিজেপিকে পদটি ছাড়বে না, তা হলে বিজেপিরও কিছু করণীয় থাকবে না । মনে রাখতে হবে, রাজ্যে পিএসি-র শীর্ষ পদ নিয়ে গত কয়েক বছরে টানাপড়েন হয়েছে বিস্তর । প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস 2016 সালে পিএসি-র চেয়ারম্যান পদ বামেদের দেওয়ার জন্য স্পিকারের কাছে সুপারিশ করেছিল । কিন্তু সুপারিশ এড়িয়েই স্পিকার তাঁর ক্ষমতাবলে কংগ্রেসের মানস ভুঁইয়াকে চেয়ারম্যান করে দেন । যার জেরে কংগ্রেসে প্রবল অন্তর্দ্বন্দ্ব বাঁধে । মানসবাবুকে বয়কট করেন কংগ্রেস বিধায়কেরা । শেষ পর্যন্ত মানসবাবু দল ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন । তাঁর পরে চেয়ারম্যান করা হয় শঙ্করবাবুকে । অথচ তিনিও যোগ দেন তৃণমূলে !