কলকাতা, 21 এপ্রিল : কেন্দ্রীয় দলের রাজ্যে আসা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এত আতঙ্ক কেন ? এত ভয় পেয়েছেন কেন ? আসল সমস্যা থেকে দৃষ্টি ঘোরাতেই অহেতুক বিতর্ক তৈরি করছে BJP ও তৃণমূল ৷ এমনই মন্তব্য করলেন CPI(M) বিধায়ক তন্ময় ভট্টাচার্য ৷ তিনি বলেন, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার গট আপ গেম চালাচ্ছে ৷ তাঁর মতে, কেন্দ্রীয় দল এরাজ্যে এসেছে ৷ কোরোনা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে রাজ্যের সাতটি জেলায় তারা যাবে । মুখ্যমন্ত্রী যে ফিরিস্তি দিয়েছেন তাতে তো ভয় পাওয়ার কিছু নেই । কোরোনা মোকাবিলায় যথার্থ কাজ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, পর্যাপ্ত N95 মাস্ক, PPE, হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার-সহ রাজ্যে বেশ কিছু হাসপাতালকে কোরোনা চিকিৎসার জন্য নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন । তাহলে ভয় কিসের মুখ্যমন্ত্রীর? প্রশ্ন করেন তন্ময় ভট্টাচার্য ।
কেন্দ্রীয় দল রাজ্যে আসায় মুখ্যমন্ত্রীর আতঙ্ক কেন ? প্রশ্ন CPI(M) বিধায়কের
রাজ্যের সমস্যাগুলি থেকে দৃষ্টি ঘোরাতেই বিতর্ক তৈরি করছে BJP ও তৃণমূল ৷ যদি তিনি নিজে ঠিক থাকেন তাহলে কেন্দ্রীয় দল রাজ্যে আসার পর এত ভয় পেয়েছেন কেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ? প্রশ্ন করলেন CPI(M) বিধায়ক তন্ময় ভট্টাচার্য ৷
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ মুখ্যমন্ত্রীকে দুপুর একটার সময় ফোন করে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় দল পশ্চিমবঙ্গে যাচ্ছে । আর মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, সকালবেলা কেন্দ্রীয় দল কলকাতায় ঢুকে পড়েছে । কোরোনা মোকাবিলায় রাজ্য সরকারের ব্যর্থতা এবং কেন্দ্রীয় সরকারের অপদার্থতা ঢাকতেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এমন একটি বিতর্কের সৃষ্টি করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তন্ময় ভট্টাচার্য । BJP এবং তৃণমূল দৃষ্টি ঘোরানোর জন্য, কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের বিরোধ দেখানোর জন্য, উভয় সরকার যৌথ প্রয়াস নিয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি । মুখ্যমন্ত্রী তথ্য গোপন করেছেন বলে একাধিকবার অভিযোগ করেছে রাজ্যের বিরোধী দলগুলি । তন্ময় ভট্টাচার্যের কথায়, "মুখ্যমন্ত্রীর ভয় কীসের? উনি তো তথ্য গোপন করেননি । মুখ্য সচিবকে দিয়ে প্রতিদিন কোরোনা আক্রান্তের সংখ্যা, মৃতের সংখ্যা জানাচ্ছেন । MR বাঙুর হাসপাতালে মৃতদেহ থেকে পচা গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে । সেই গন্ধ যদি কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকের নাকে যায় তাহলে মুখ্যমন্ত্রীর পরিণতি কী হবে, সেই ভেবেই কি আতঙ্কিত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? মুখ্য সচিবকে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী প্রতিদিন অসত্য কথা বলাচ্ছেন । নাইসেডের টেস্ট কিট ব্যবহার করা হচ্ছে না । পর্যাপ্ত সুরক্ষা সরঞ্জাম মজুত রয়েছে বলে মুখ্যমন্ত্রী দাবি করছেন । আদতে সবটাই ভুয়ো । কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক দল যদি দেখে ফেলে আসল সত্য কী, সেই ভয়ে মুখ্যমন্ত্রী নাটক করছেন ।"
কেন্দ্রীয় দলে কোনও রাজনীতির লোক নেই । প্রত্যেকে বিশেষজ্ঞ । রাজ্যের প্রতিনিধিরাও পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে থাকবেন । প্রকৃত সত্য মানুষের কাছে আসতে দিতে অসুবিধা কোথায়, মন্তব্য তন্ময় ভট্টাচার্যের । নিয়মিত লকডাউন ভাঙা হচ্ছে, পুলিশ মদত দিয়ে মদের দোকান খোলাচ্ছে, সরকারের ভাঁড়ারে কর পৌঁছে দেওয়ার জন্য । কার্যত সরকারি উদ্যোগ নেই লকডাউন সফল করার । বাজারে এখনও ভিড় দেখা যায় । রেশন দোকানে খাদ্যদ্রব্য অপ্রতুল । এসব কেন্দ্রীয় দল দেখে ফেললে বিপদে পড়ে যাবেন এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ৷ তন্ময় ভট্টাচার্যের অভিযোগ, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের নাম পুড়েছে । পশ্চিমবঙ্গ ভয়ংকর জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছে । কোরোনা মোকাবিলায় ব্যর্থতা প্রকট থেকে প্রকটতর হচ্ছে । অপদার্থ সরকার রাজ্যে ন্যূনতম স্বাস্থ্যপরিষেবা বা স্বাস্থ্য পরিষেবার কাঠামো দিতে পারেনি । একাধিকবার বিরোধীরা জানিয়েছিল সহযোগিতা করবে রাজ্য সরকারকে । মুখ্যমন্ত্রী বিরোধীদের বিশ্বাস করতে পারেননি ।