কলকাতা, 2 এপ্রিল: আবারও একবার শিরোনামে উঠে এল আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ৷ নজিরবিহীনভাবে বন্ধ হয়ে গেল দেশের প্রথম সরকারি পয়জন ইনফর্মেশন সেন্টার। যাকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। জানা গিয়েছে, বর্তমানে বিশ্বে এই রকম 328টি পয়জন ইনফর্মেশন সেন্টার রয়েছে। যার মধ্য়ে ভারতে আছে মোট 9টি সেন্টার ৷ কিন্তু দেশের প্রথম কোনও সরকারি হাসপাতালে তৈরি হওয়া এই পয়জন ইনফর্মেশন সেন্টার এবার বন্ধ হয়ে গেল ৷
বিশ্বের সবগুলি পয়জন ইনফর্মেশন সেন্টারই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা দ্বারা অনুমোদিত। ভারতে এমন মোট নয়টি সেন্টার আছে। 2018 সালে আর জি কর হাসপাতালে শুরু হয়েছিল এই পরিষেবা। যা দেশের মধ্যে প্রথম কোনও সরকারি হাসপাতালে হয়েছিল বলে খবর। এবার সেটাই বন্ধ হয়ে গেল। আরজি করের পাশাপাশি সিএমসি ভেলোর, অমৃতা ইনস্টিটিউট, কস্তুরবা, জেএসএস, এইমস, মণিপাল, জিজি হাসপাতাল এবং আমেদাবাদের একটি হাসপাতালে এই কেন্দ্র চালু হয়।
উল্লেখ্য়, 2018 সাল থেকে শুরু হওয়ার পর আরজি করের কেন্দ্রটিতে এখনও পর্যন্ত 10 হাজারের বেশি মানুষ এখানকার টোল ফ্রি নম্বরে ফোন করে সাপের কামড় সহ নানা ধরনের বিষের বিষয়ে জানতে চেয়েছেন বলে খবর মিলেছে। কিন্তু পয়জন ইনফর্মেশন সেন্টারের সঙ্গেই বন্ধ হয়ে গেল বিষ সংক্রান্ত কোনও তথ্য জানার টোল ফ্রি ফোন পরিষেবাও। 2022 সালে দেশের সেরা পয়জন ইনফর্মেশন সেন্টারের সন্মান পায় আরজি করের কেন্দ্রটি।
সূত্রের খবর, কিছুদিন আগে এই সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা, ইনচার্জ তথা ফরেনসিক ও স্টেট মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডাঃ সোমনাথ দাসকে বদলি করা হয় বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে। তারপর থেকেই আর বিকল্প কোনও ব্যবস্থা করতে পারেনি আরজি কর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তার জেরেই এই সেন্টার বন্ধ হয়ে গেল বলেই প্রাথমিকভাবে জানাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। আরজি কর হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান ডাঃ শান্তনু সেন বলেন, "বিষয়টি সম্পর্কে আমরা অবহিত। দ্রুত ওই সেন্টার যাতে চালু করা যায়, তার জন্য় স্বাস্থ্যভবনকে অনুরোধও করেছি।"
আরও পড়ুন: মায়ের পচাগলা দেহ আগলে বসে ছেলে, দুর্গন্ধে টিকতে না-পেরে থানায় প্রতিবেশীরা
মূলত, উপসর্গ শুনে বিভিন্ন ধরনের সাপ এবং তার বিষের প্রকৃতি ও চিকিৎসা সম্পর্কে অবহিত করান, ফার্মাসিউটিক্যাল পয়জনিং বা ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার চটজলদি চিকিৎসা, বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক খেয়ে ফেললে সঙ্গে সঙ্গে কী করা উচিত, বোলতা, মৌমাছি সহ বিভিন্ন ধরনের পতঙ্গের কামড়ে কী করণীয়, বিষাক্ত মাকড়শা ও অন্যান্য কীটের কামড়ে কী করবেন, কী করবেন না—এরকম বিভিন্ন তথ্য টোল ফ্রি নম্বরে ফোন করে জেনে নিতে পারতেন মানুষ। কোভিড পর্বে অনেকে ভুল করে স্যানিটাইজার খেয়ে ফেলেছিলেন। এমনকী, স্যানিটাইজার খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টার ঘটনাও ঘটেছিল। তখনও বহু মানুষ এই কেন্দ্রে সরাসরি ফোন করে উপকৃত হয়েছিলেন। তবে এইবার কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় উঠছে প্রশ্ন।