পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

সকলের টেস্ট না হওয়ায় ছড়িয়ে পড়ছে কোরোনা, মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি চিকিৎসক সংগঠনের

সার্ভিস ডক্টরস ফোরাম (SDF)-এর চিঠিতে জানানো হয়েছে , দুর্গাপুজোর আগে এবং দুর্গাপুজোর সময় যেভাবে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে বিভিন্ন জায়গায় জনসমাগম হতে দেখা গিয়েছে এবং আবহাওয়া পরিবর্তনের সময় যেভাবে জ্বর, সর্দি-কাশি, গলা ব্যথা নিয়ে অনেক বেশি সংখ্যক মানুষ ভুগছেন, এসব মিলিয়ে কোরোনা পরিস্থিতি আরও ভয়ংকর হতে চলেছে । এদিকে নিয়ম অনুসারে যাঁদের টেস্ট হওয়া উচিত , তাঁদের টেস্ট করানো হচ্ছে না ।

Kolkata
মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি চিকিৎসক সংগঠনের

By

Published : Oct 31, 2020, 6:41 AM IST

কলকাতা , 31 অক্টোবর : যাঁদের ক্ষেত্রে কোরোনা টেস্টের প্রয়োজন রয়েছে , তাঁদের সকলের টেস্ট করানো হচ্ছে না । তার উপর টেস্টের রিপোর্ট আসতেও বহু ক্ষেত্রে তিন থেকে চার দিন সময় লেগে যাচ্ছে । এভাবে রোগ নির্ণয় না হওয়া এবং রোগ নির্ণয় হতে দেরি হওয়ার কারণে বহু রোগীর মাধ‍্যমে আরও বেশি সংক্রমণ হচ্ছে । শুধুমাত্র তাই নয়, এর ফলে বিভিন্ন রোগীর ক্ষেত্রে যেমন সংক্রমণ জটিল হয়ে পড়ছে , তেমনই বিভিন্ন ক্ষেত্রে রোগীর মৃত‍্যুও হচ্ছে । এই ধরনের পরিস্থিতি দূর করতে কোরোনা টেস্টের সংখ্যা অন্তত দুই গুণ বাড়ানোর পাশাপাশি 24 ঘণ্টার মধ্যে টেস্টের রিপোর্ট দেওয়ার দাবি জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ‍্যোপাধ‍্যায়কে চিঠি দিল রাজ‍্যের সরকারি চিকিৎসকের একটি সংগঠন ।


সার্ভিস ডক্টরস ফোরাম (SDF)-এর চিঠিতে জানানো হয়েছে , দুর্গাপুজোর আগে এবং দুর্গাপুজোর সময় যেভাবে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে বিভিন্ন জায়গায় জনসমাগম হতে দেখা গিয়েছে এবং আবহাওয়া পরিবর্তনের সময় যেভাবে জ্বর, সর্দি-কাশি, গলা ব্যথা নিয়ে অনেক বেশি সংখ্যক মানুষ ভুগছেন, এসব মিলিয়ে কোরোনা পরিস্থিতি আরও ভয়ংকর হতে চলেছে । এদিকে নিয়ম অনুসারে যাঁদের টেস্ট হওয়া উচিত , তাঁদের সকলের টেস্ট করানো হচ্ছে না । প্রতিদিন টেস্টের সংখ্যা বেঁধে দেওয়ার কারণেই এই ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে । দুর্গাপুজোর আগে এবং পরে যত জনের টেস্ট হয়েছে, বাস্তবে তার থেকে অনেক বেশি টেস্টের প্রয়োজন ছিল । অথচ, প্রয়োজনীয় টেস্ট না হওয়ার ফলে বহু কোরোনা রোগী সমাজের মধ্যে থেকে গিয়ে এই রোগ আরও বেশি ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করছেন । অবিলম্বে প্রতিদিন টেস্টের সংখ্যা অন্ততপক্ষে দ্বিগুণ করা প্রয়োজন । যাতে সবাই কোরোনা পরীক্ষা করার সুযোগ পান ।



মুখ্যমন্ত্রীকে পাঠানো ওই চিঠিতে SDF-এর সভাপতি চিকিৎসক প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সাধারণ সম্পাদক চিকিৎসক সজল বিশ্বাস যৌথভাবে জানিয়েছেন , কোরোনা টেস্টের রিপোর্ট পেতে বহু ক্ষেত্রেই তিন থেকে চার দিন সময় লাগছে । এর ফলেও বহু রোগীর মাধ‍্যমে রোগ ছড়িয়ে পড়ছে এবং দেরিতে চিকিৎসা শুরু হওয়ার কারণে অনেকেই বিভিন্ন জটিলতার সম্মুখীন হচ্ছেন । অনেকে অকালে প্রাণ-ও হারাচ্ছেন । এই ধরনের সমস্যা দূর করতে আরও টেস্টিং সেন্টার চালু এবং 24 ঘণ্টার মধ‍্যে টেস্টের রিপোর্ট দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি ।

পাশাপাশি চিঠিতে তাঁরা জানিয়েছেন, প্রতিদিন টেস্টের সংখ্যা কত হবে, কোন জ়োনে কত পরীক্ষা হবে এবং কোথায় কোন ধরনের পরীক্ষা হবে, এই সব বিষয়ে যাবতীয় সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি মানা হচ্ছে না । এক্ষেত্রে কোনও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ বা ভাইরোলজিস্টদের মতামত নেওয়া হচ্ছে না । কেবলমাত্র প্রশাসনিক সিদ্ধান্তেই এগুলি পরিচালিত হচ্ছে । ফলে, রেড জ়োনে যেখানে বেশি সংখ্যক টেস্ট করানোর কথা, সেখানে কম টেস্ট করে গ্রিন জ়োনে প্রচুর পরিমাণে টেস্ট করানো হচ্ছে । এতে পূর্ব নির্ধারিত কোরোনা পজ়িটিভের সংখ্যা হয়ত কমেছে , কিন্তু বাস্তব চিত্রের সঙ্গে তা কখনও মিলছে না ।



মুখ্যমন্ত্রীকে পাঠানো SDF-এর চিঠিতে দাবি জানানো হয়েছে : (1) কোরোনা পরীক্ষার স্ট্র‍্যাটেজি ঠিক করতে রাজ‍্য ও জেলাস্তরে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতামতকেই প্রাধান্য দিতে হবে । অবৈজ্ঞানিক প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের উপর এটা পরিচালনা করা যাবে না । (2) COVID-19-এর সংক্রমণ দ্রুত নির্ণয়ের জন্য র‍্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট বহু ক্ষেত্রেই প্রশাসনিক সিদ্ধান্তে হাসপাতালে না করিয়ে গ্রিন জ়োনে করানো হচ্ছে । ফলে, হাসপাতালে এই রোগ ছড়িয়ে পড়ছে এবং পরিষেবা ব‍্যাহত হচ্ছে । এই টেস্ট কোথায় করানো হবে, তা গাইডলাইন অনুযায়ী বিজ্ঞানভিত্তিকভাবে ঠিক করতে হবে । পজ়িটিভ কেসের সংখ্যা কমিয়ে দেখানো চলবে না । (3) সেরো সার্ভিল‍্যান্সের রিপোর্ট জনসমক্ষে প্রকাশ করতে হবে যাতে মানুষ বুঝতে পারেন তাঁর ইমিউন স্ট্যাটাস কোন অবস্থায় রয়েছে ।

মুখ্যমন্ত্রীকে শুক্রবার পাঠানো এই চিঠির বিষয়ে প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং চিকিৎসক সজল বিশ্বাস যৌথভাবে জানান, কোরোনার সাম্প্রতিক পরিস্থিতি থেকে রাজ‍্যবাসীকে রক্ষা করার জন্য আমাদের দাবিগুলির বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী দ্রুত হস্তক্ষেপ করবেন বলে আশা করছি আমরা ।
_________

ABOUT THE AUTHOR

...view details