কলকাতা, 9 মে : রাজ্যে কনটেনমেন্ট জ়োন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আরও তৎপর হয়েছে প্রশাসন । একাধিক পরিকল্পনা রয়েছে । বড়বাজারের লরি পার্কিং ব্যবস্থা শহরের বাইরে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে প্রশাসন । তবে শহরের বাইরে হাজারের বেশি লরি পার্ক করার জন্য প্রয়োজনীয় স্থানের অভাব রয়েছে । রয়েছে সঠিক পরিকাঠামোর অভাবও । উল্লেখ্য, রাজ্যের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার বড়বাজার ।
পোস্তা ট্রাক কো-অর্ডিনেশন কমিটির চেয়ারম্যান কৃষ্ণ প্রসাদ সিং বলেন, “52টি পট্টি নিয়ে তৈরি হয়েছে এত বড় একটা বাজার । ডালহৌসি থেকে শুরু করে চাঁদনি থেকে ক্যানিং স্ট্রিট হয়ে বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিট হয়ে পোস্তা পর্যন্ত এলাকা জুড়ে রয়েছে বড়বাজার । বড়বাজার তো একটা ছোটো জায়গা নয় । তাই বাজারের ঠিক কোন অংশে বিকল্প পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে সেই বিষয়টি স্পষ্ট নয় । যদিও প্রশাসনের তরফে আমাদের এখনও কিছু জানানো হয়নি ।”
সাধারণত প্রতিদিন ছোটো বড় লরি মিলিয়ে বড়বাজারে যাতায়াত করে প্রায় ছয় থেকে সাত হাজার লরি । যেহেতু বড়বাজারে কোনও নির্দিষ্ট পার্কিংয়ের জায়গা নেই তাই পট্টিগুলির বাইরে এই লরি দাঁড়ায় । লরি সংগঠনের মতে, কলকাতার বাইরে এত হাজার লরি একসাথে পার্কিং করার মতো জায়গা পাওয়া মুশকিল । তবে কোনও এক্সপ্রেসওয়ের ধারে যে পার্কিং ব্যবস্থা রয়েছে সেখানে পার্কিংয়ের বন্দোবস্ত করা হতে পারে । এই বিষয়ে কৃষ্ণ প্রসাদ বলেন, "তা যদি হয়ও তবে সেখানে ছয় থেকে সাত হাজার গাড়ির পার্কিং ব্যবস্থা করা কোনওমতেই সম্ভব নয় । এছাড়া পার্কিং অঞ্চলের পাশে গ্যারেজ ও আরও অন্যান্য প্রয়োজনীয় দোকানপাটের প্রয়োজন হয় । সেই পরিকাঠামো নেই । এছাড়া বর্তমানে শহরের বাইরে এমন কোনও জায়গা নেই যেখানে একসঙ্গে এতগুলি ট্রাক পার্ক করার সুবিধা পাওয়া যাবে । পাশাপাশি আনলোডের জন্য ছোটো ছোটো গাড়িগুলির পার্কিংয়ের ব্যবস্থাও করতে হবে । একটি 14 চাকার মালগাড়ি শহরের বাইরে পার্ক করার ব্যবস্থা করলে মাল বড়বাজারে নিয়ে আসার জন্য অনেকগুলি ছোটো গাড়ির প্রয়োজন পড়বে । সেক্ষেত্রে অতগুলি গাড়ির চালক ও সহকারীদের ভিড় হবে বড়বাজারে । সংক্রমণের সম্ভাবনা আরও বেড়ে যাবে ।”
অন্যদিকে পোস্তা গুডস ট্রান্সপোর্ট অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সঞ্জয় উপাধ্যায় বলেন, “যদিও সরকারের তরফে এই বিষয় আমাদের সঙ্গে এখনও কোনও আলোচনা হয়নি । তবে আমার মনে হয় যাঁরা মাল নিয়ে যাতায়াত করবেন তাঁদের জন্য অসুবিধাজনক হবে । তেমনই এতে অনেক বেশি সময় লেগে যাবে ।”
নতুন করে সংক্রমণ দেখা দিয়েছে বড়বাজার এলাকায় । সম্প্রতি পৌর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, বড়বাজার এলাকায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পণ্যবাহী লরি আসে । চলে লোডিং ও আনলোডিং-এর কাজ । ভিন রাজ্য থেকে আসা এই লরি চালকদের থেকে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার একটা সম্ভাবনা থেকেই যায় । তাই বড়বাজারে যেসব লরির লোডিং ও আনলোডিং হয় সেগুলি শহরের বাইরে কোনও জায়গায় করা সম্ভব কি না তা নিয়ে প্রশাসনিক স্তরে চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে । পুলিশের তরফে খোঁজা হচ্ছে বিকল্প পার্কিং-এর জায়গা ।