কলকাতা, 21 অক্টোবর:পার্কসার্কাস বেকবাগান ট্রাম ডিপোর উল্টো দিকের রাস্তাটা পরিচিত দিলখুশ স্ট্রিট নামে । রাস্তাটি গিয়ে মিশেছে ঝাউতলা লেনে । ঠিক এখানেই আগে ছিল সিপিআই-এর পত্রিকা 'কালান্তর'-এর অফিস । এই এলাকায় সিংহভাগ বসতি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের । তবে এই অঞ্চলের ছবিটাই প্রমাণ করে 'ধর্ম যার যার, উৎসব সবার'। তাই মসজিদের দরজার ঠিক পাশেই তৈরি হয় মা দুর্গার মণ্ডপ ৷
শুধু চলতি বছরই নয়, এই ছবি প্রায় পাঁচ যুগ পুরনো । এই পুজোর বয়স প্রায় 60 বছর ৷ হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপুজো ৷ আর এই উৎসবের আয়োজনে হাত লাগান শুধু মুসলিমরা নন, খ্রীষ্টান তথা চিনের মানুষও । সাম্প্রদায়িক সম্প্রতির বার্তা দিতে গিয়ে কবীর সুমন লিখেছিলেন, 'গির্জার ঘণ্টায় মিলে যাওয়া ভোরের আজান/ প্রতি আহ্বানে খোঁজা তোমার যোগ্য় কোনও গান ৷' সেই অমোঘ লাইন একটু বদলে নিয়ে আজ বোধহয় বলাই যায়, পুজোর চণ্ডীপাঠে মিলে গেল ভোরের আজান ৷
তিলোত্তমা পরিচিত তার কসমোপলিটন সংষ্কৃতির জন্য ৷ তার মধ্যে দিলখুশ স্ট্রিট যেন শহরের ধর্মীয় সংষ্কৃতির আয়না হয়ে দাঁড়াল । এই পুজোর আয়োজক ফ্রেন্ডস ক্লাব । আয়োজক কমিটির সভাপতি ইস্তেয়াক আহমেদ বলেন, "আমাদের এই অঞ্চলের একটা ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্র আছে । একটা সময় প্রায় বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল এই পুজোটা । ছোটবেলা থেকে এখানে পুজো হতে দেখেছি । পুজোটা বন্ধ হয়ে যাবে শুনে পাশে দাঁড়ানোর ব্যাপারে দ্বিতীয়বার চিন্তা করিনি । অনিন্দ্য দত্ত পুজোর সচিব, কোষাধ্যক্ষ চন্দন দত্ত । এছাড়াও দেব মালিক,কৃষাঙ্কুর বন্দ্যোপাধ্যায়,সুব্রত দে-রা সকলেই এক সঙ্গে হাত লাগাই এই আয়োজন । এখানে কোনও ধর্মীয় ভেদাভেদ নেই । মসজিদের ঠিক গায়েই দুর্গাপুজোর মণ্ডপ তৈরি হয়েছে । ঈদের উৎসবের আয়োজনও আমরা সবাই মিলে করি । একবছর এত বৃষ্টি হয়েছিল যে নমাজের আয়োজন দুর্গা মণ্ডপের ভেতর করতে হয়েছিল । এই ঘটনা এখানে স্বাভাবিক ।"