কলকাতা, 8 সেপ্টেম্বর : ভাবানীপুর উপনির্বাচনের (Bhawanipur Bypoll) নীল নকশা তৈরি করতে গতকাল নির্বাচন কমিটির বিশেষ বৈঠক হল বিজেপির হেস্টিংস অফিসে । বৈঠকে দক্ষিণ কলকাতা জেলা নেতৃত্বকে এই উপনির্বাচনে লড়ার বেশ কিছু ফর্মুলা দিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় সহকারী পর্যবেক্ষক তথা দলের আইটি সেলের প্রধান (Co-incharge West Bengal) অমিত মালব্য (Amit Malviya) ৷
এর আগে ভবানীপুর উপনির্বাচনে তৃণমূল নেত্রীকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে 6 সেপ্টেম্বর একটি টুইট করেন অমিত ৷ সেখানে তিনি লেখেন, "হেরে যাওয়ার কথা ভেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভবানীপুর ছেড়েছিলেন ৷ সেখানে বিজেপির শুভেন্দু অধিকারীর কাছে হারলেন ৷ এরপর কী ভাবে তিনি আশা করেন যে, তিনি ভবানীপুর থেকে জিতবেন ? এই উপনির্বাচনে তিনি নন্দীগ্রামের মতো ফের একই ফলাফলের মুখোমুখি হবেন ৷ এই লড়াইয়ে বিজেপি জিতবে ৷"
বিজেপি সূত্রে খবর, বিজেপির নির্বাচন কমিটি প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করে 6 টি নামের তালিকা দিল্লিতে পাঠিয়েছে । তথাগত রায় (Tathagata Roy), রুদ্রনীল ঘোষ (Rudranil Ghosh), অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায় (Anirban Ganguly) , প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায় (Pratap Banerjee), বিশ্বজিৎ সরকার (Biswajit Sarkar) ও প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়াল (Priyanka Tibrewal) । এর মধ্যে কাঁকুড়গাছির শহিদ পরিবারের সদস্য অভিজিৎ সরকারের দাদা বিশ্বজিৎ সরকারকে প্রার্থী করা হতে পারে বলে জল্পনা বাড়ছে ।
বৈঠকে অমিত মালব্য বলেন, "বিজেপি রাজ্যে বিরোধী দল । ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রার্থী হলেও তৃণমূলের বিরুদ্ধে সব ক'টি মণ্ডলের প্রচার কর্মসূচি শুরু করতে হবে । তবে, ভয় পেলে হবে না । দলীয় নেতৃত্বের নির্দেশ মেনে কাজ করুন ।"
আরও পড়ুন : By election : আগামীকাল ভবানীপুর আসনে প্রার্থী ঘোষণা, জানিয়ে দিলেন দিলীপ
ভবানীপুরে 288 টি বুথ । কিন্তু প্রচারের জন্য মাত্র 7 দিন সময় রয়েছে । তাই সব ক'টি বুথে প্রচার চালাবেন বিজেপি সাংসাদেরা । গতকালের বৈঠকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, "সব ক'টি বুথে বিজেপিকে পোলিং এজেন্ট দিতে হবে । যদি বুথ খালি হয়ে যায়, তা হলে তৃণমূল কংগ্রেস ছাপ্পা ভোট বা বুথ রিগিং করবে । তাই কোনও ভাবেই বুথ খালি রাখলে চলবে না । তাই ভবানীপুরের সমস্ত মণ্ডল সভাপতিকে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে, আপনারা দ্রুত পোলিং এজেন্টদের লিস্ট তৈরি করে জমা দিন ।" তিনিও বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের ভয় না পেয়ে ভবানীপুর উপনির্বাচনে সর্ব শক্তি দিয়েই ঝাঁপানোর জন্য উৎসাহিত করেন ।
গতকাল ভবানীপুরের সমস্ত মণ্ডল সভাপতি, মোর্চা সভাপতি, বুথ সভাপতিদের এই বৈঠকে ডাকা হয় । দলের কর্মীদের কী কী সমস্যা, সেই বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় । এছাড়া দল কী ভাবে লড়াই করবে, সে বিষয়ে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের পরামর্শ চাওয়া হয় । 8 টি ওয়ার্ডে 1 জন বিধায়ক-সহ বাকি 4 জন স্থানীয় নেতৃত্বকে নিয়ে দল গঠন করা হবে । 3 টি মণ্ডলে 3 জন সাংসদ দায়িত্ব নিচ্ছেন । সেটা গতকাল ভবানীপুরের বিজেপি নেতৃত্বকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে ।
বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু বলেন, "আমরা আজ ভবানীপুরের বিজেপি কর্মীদের উৎসাহ দিতেই বৈঠক ডেকেছি । আজ মূলত সাংগঠনিক বৈঠক ছিল । ভবানীপুর সংগঠনের বিস্তারিত রিপোর্ট নেওয়া হয় ৷"
সূত্রের খবর, ভবানীপুরে এই প্রচার এবার বিজেপির কাছে একটা বড় চ্যালেঞ্জ । কারণ তৃণমূলের প্রার্থী স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । এর আগে 2011-র উপনির্বাচনে ও 2016-র বিধানসভা নির্বাচনে ভবানীপুর থেকে প্রার্থী হয়ে জিতেছিলেন তৃণমূল নেত্রী ৷ ভবানীপুর শক্তিশালী ঘাঁটি । এছাড়া মুখ্যমন্ত্রীর সমর্থনে তৃণমূলের সব স্তরের নেতা-মন্ত্রীরা ঝাঁপিয়ে পড়বেন । তাই তাদের সঙ্গে পাল্টা প্রচার বিজেপি শেষ পর্যন্ত কতটা তাল মেলাতে পারে, সেটা এখন দেখার বিষয় ।