কলকাতা, 6 এপ্রিল: নিউ গড়িয়া-এয়ারপোর্ট (মেট্রো লাইন- 6) মেট্রো প্রকল্পে মূলত রয়েছে দুটি রুট। একটি হল বিবাদীবাগ-জোকা এবং অপরটি হল গড়িয়া-বিমানবন্দর। এই অংশে রয়েছে মোট 9টি স্টেশন ৷ এদের নামকরণ নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে (City center 2 instead of Titumir)। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে প্রথমে চালু হবে গড়িয়া থেকে রুবি পর্যন্ত মেট্রো পরিষেবা। তারপর চালু করা হবে গড়িয়া থেকে বিমানবন্দর পরিষেবা। এই দুটি রুট মিলিয়ে রয়েছে মোট 30 কিলোমিটার পথ, যেখানে থাকছে মোট 24টি স্টেশন ৷
নিয়মানুসারে মেট্রো প্রকল্পের কাজ শুরু করার আগে কোথায় কোন স্টেশন হবে সেই জায়গা চিহ্নিত করা হয়। যেহেতু এই অংশের কাজের দ্বায়িত্বে রয়েছে রেলবিকাশ নিগম লিমিটেড (RVNL) সেই কারণে এই অংশে স্টেশনের প্রস্তাবিত নামকরণ করা হয় সংস্থার তরফেই। এই 24টি স্টেশনের মধ্যে 9টি স্টেশনের নামকরণ যা হয়েছিল তা হয়ত বদলে যেতে পারে। সূত্রের খবর, রাজ্য সরকারের তরফে 9টি স্টেশনের নাম বদলের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। আরভিএনএল-এর পক্ষ থেকে এই প্রস্তাব মেনে নেওয়া হয়েছে। নামকরণ চূড়ান্ত করার জন্য তা পাঠানো হয়েছে রেল বোর্ডের কাছে। তবে গোল বাঁধলো সিটি সেন্টার 2 স্টেশনের নামকরণ নিয়ে। কারণ প্রথমে এই স্টেশনের নামকরণ করা হয়েছিল স্বাধীনতা আন্দোলনে কৃষক নেতা তিতুমীরের নাম অনুসারে।
আরও পড়ুন :Price Hike in Market : জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির ছ্যাঁকা ভোজ্য তেলে, সবজি ও খাদ্যপণ্যের দামও আগুন
ভারতের ছাত্র ফেডারেশনের পক্ষ থেকে সম্পাদক আকাশ কর বলেন যে, "নিউ গড়িয়া-এয়ারপোর্ট (মেট্রো লাইন- 6) মেট্রো রুটে সিটি সেন্টার 2 সংলগ্ন মেট্রো স্টেশনটির নাম বাংলা তথা দেশের গর্ব, স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম সংগ্রামী তিতুমীরের নামে হবে জেনে আমরা খুশি হয়েছিলাম। তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়ােপাধ্যায়ের অনুরোধে নাকি ওই স্টেশনের নাম তিতুমীরের নামে না রেখে সিটি সেন্টার 2 রাখা হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে রেলমন্ত্রী থাকাকালীন বহু মেট্রো স্টেশনের নাম বেশ কিছু বিদ্বজন ও স্বাধীনতা সংগ্রামীর নামে রেখেছিলেন। তাহলে এখন মুখ্যমন্ত্রী এমন পরামর্শ কেন দিচ্ছেন ! আর রেল মন্ত্রকই বা কেন তা মেনে নিচ্ছে ! এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করে ফের তিতুমীরের নামেই ওই স্টেশনের নাম রাখার আবেদন জানাচ্ছি। নাহলে তা তিতুমীরের স্মৃতির প্রতি তো বটেই, এই দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে বাংলার গুরুত্বপূর্ণ অবদান এবং সার্বিকভাবে বাঙালির প্রতিই অপমানজনক সিদ্ধান্ত হিসেবে চিহ্নিত হবে।"
মেট্রাে স্টশনের নাম নিয়ে উঠছে প্রশ্ন ইতিমধ্যেই সংগঠনের পক্ষ থেকে বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করে দেখার আবেদন জানিয়ে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি অধ্যাপক রবিউল ইসলাম মনে করেন, "শেষ পর্যন্ত যদি নামটা সত্যিই বদল হয়ে যায় তবে তা খুবই হতাশাজনক। বাঙালিকে বাঙালির ইতিহাস ভুলিয়ে দেওয়া। এমনকি 'বঙ্গবাসী ' পত্রিকার সম্পাদক বিহারীলাল সরকারও তিতুমীরকে খারাপ বলেছিলেন। তিনি সর্বদাই বঞ্চিতদের দলে। আমাদের রাজ্যের কোনও সরকারই তাঁকে সম্মান দেননি।"
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলকাতা মেট্রো রেলের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক বলেন, "ওই অংশের মেট্রো চলাচল যতক্ষণ না শুরু হচ্ছে এই বিষয়ে কিছু মন্তব্য করব না ৷ মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ স্টেশনগুলির নাম চূড়ান্ত করলেই জানা যাবে কোন নামটি থাকল আর কোন নামটি বাদ দেওয়া হল।"