কলকাতা, 10 মে: নগর সভ্যতার চাকা যত দ্রুত গতিতে ঘুরেছে ততই সবুজ ফিকে হয়েছে। সেই ছবি কমবেশি সব শহর এলাকার। তবে উন্নয়ন করতে গিয়ে বা দুর্যোগের কারণে গাছ কমলে তার পরিবর্তে শহুরে বনায়নে দীর্ঘদিন ধরেই জোর দিয়েছে হিডকো ও এনকেডিএ কর্তৃপক্ষ। তাই এবার পশু, পাখি বা শিশুর মতো গাছও যাতে নাগরিকরা দত্তক নিতে পারে সেই ব্যবস্থা করেছে তারা। যে কোনও নাগরিক চাইলে গাছ দত্তক নিতে পারবেন। গাছ পরিচর্যার জন্য থাকবে লোক। শুধু মাসে মূল্য ধরে দিলেই হবে।
বর্তমানে বিশ্ব উষ্ণায়ন ও দূষণ কমাতে গাছ বাড়ানো ছাড়া বিকল্প পথ নেই। তবে গাছ লাগানোর পর দেখা যায় নিয়মিত জল দেওয়া বা যত্ন না-নেওয়ার কারণে চারাগাছ মারা যায়। ফলে চেষ্টা করলেও সেটা বৃথা যায়। এবার সেই সমস্যার সুরাহা মিলল নিউটাউন রাজারহাট এলাকায়। গাছ লাগানো থেকে গাছের যত্ন নেওয়া, জল দেওয়া, গাছের পাতা ছাঁটা সবকিছু করার জন্য থাকবেন দক্ষ কর্মী। শুধু দত্তক নেওয়া গাছের জন্য মাসিক টাকা দিলেই হবে। ইকো পার্ক এলাকায় প্রায় এক একর জমিতে পোঁতা হয়েছে বিভিন্ন ধরনের গাছ।
সেই গাছ নাগরিকরা দত্তক নিতে পারবেন। গাছগুলোর দেখাশোনা করবে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। বনাঞ্চলের নাম দেওয়া হয়েছে 'আরভোরি'। এই উদ্যোগে ইতিবাচক ভূমিকা নিয়েছে হিডকো এবং এনকেডিএ কর্তৃপক্ষ। এখন গাছ লাগানোর ইচ্ছে থাকলেও কাজের চাপে সেটা করা হয় না। আবার গাছ লাগলেও যত্ন করার সময় মেলে না। তাই এই উদ্যোগ। মূলত আমলকি, অ্যালোভেরা-সহ নানা প্রজাতির গাছ লাগানো হয়েছে এই বনাঞ্চলে। নিউটাউন সবুজ নগরী হিসেবে গড়ে তোলার ইচ্ছেপ্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই ইচ্ছা বাস্তবায়ন হচ্ছে।
আরও পড়ুন:বৃক্ষ নিধন রুখতে গাছেদের বিয়ে ! বটের সঙ্গে অশ্বত্থের বিয়ে দিলেন বলাই
উল্লেখ্য, বিভিন্ন জেলায় এক একর জায়গায় বিভিন্ন প্রজাতির গাছ লাগানো শুরু হয়েছে। কলকাতার আশেপাশেও তা হয়েছে। গাছগুলো বড় হলে সবুজ ঘন হবে। পরে জিও ট্যাগিং করে পৃথিবীর যে কোনও জায়গা থেকে গাছগুলো কেমন অবস্থায় আছে জানতে পারবেন দত্তক নেওয়া নাগরিকরা ৷ গাছের সংখ্যা বাড়াতে কলকাতায় একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে কলকাতা কর্পোরেশন। বাড়ির একাংশ গাছ লাগালে কর ছাড় মেলার সুযোগ পাবে। বাণিজ্যিক সংস্থাগুলোকেও সিএসআর প্রজেক্টে গাছ লাগাতে বলা হয়েছে।