কলকাতা, 5 সেপ্টেম্বর : কোরোনা আবহে 'জয় মা বলে ভাসা তরী' ডাক দিল চোরবাগান সর্বজনীন দুর্গোৎসব সমিতি । 84 বছরের এই পুজো কলকাতার অন্যতম জনপ্রিয় একটি পুজো । বহু শারদ সম্মান ও খ্যাতি রয়েছে এদের ঝুলিতে । এবছর প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও পুজো চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে চোরবাগান সর্বজনীন দুর্গোৎসব সমিতি । পরিস্থিতি যা-ই হোক পুজো হবেই - এই দৃঢ় অঙ্গীকার নিয়ে জোর কদমে চলছে মণ্ডপ তৈরির কাজ । জুলাই মাস থেকেই কাজ শুরু করে দিয়েছে এই দুর্গাপুজো সমিতি । যখন অন্য কোনও পুজো কমিটি পুজোর ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চিত, সেই সময় চোরবাগান সর্বজনীন দুর্গাপুজো সমিতি তাদের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে । এবছর 85তম বর্ষে পা দিতে চলেছে এই পুজো । মণ্ডপসজ্জায় শিল্পী বিমল সামন্ত । প্রতিমা তৈরি করছেন নবকুমার পাল ।
"জয় মা বলে ভাসা তরী" ডাক দিয়েছে চোরবাগান সর্বজনীন - দুর্গোৎসব
প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও পুজো চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে চোরবাগান সর্বজনীন দুর্গোৎসব সমিতি । পরিস্থিতি যা-ই হোক পুজো হবেই - এই দৃঢ় অঙ্গীকার নিয়ে জোর কদমে চলছে মণ্ডপ তৈরির কাজ ।
এই পুজোর অন্যতম কর্মকর্তা কাজল মান্না জানিয়েছেন, এই পরিস্থিতিতে মায়ের ভরসাতেই পুজোর প্রস্তুতির কাজ শুরু করেছেন তাঁরা । তাই 'জয় মা বলে ভাসা তরী' ডাক দিয়েছেন । থিম ভাবনা প্রকাশ না করলেও তিনি জানিয়েছেন, দর্শকদের প্রতিবছরই নতুন কিছু তুলে দেওয়া হয়। এবছরও তেমনই নতুন চমক থাকবে দর্শনার্থীদের জন্য । তবে কোরোনা পরিস্থিতির জন্য এবছর পুজো একটু ভিন্ন মাত্রায় হবে । যে সব শিল্পী মণ্ডপ তৈরি করছেন তাঁদের নিয়মিত স্যানিটাইজ় করানো হচ্ছে। মাঠের প্রবেশমুখেই বসানো হয়েছে জীবাণুনাশক টানেল গেট । এছাড়া যে ক'জন কর্মী কাজ করছেন সবাই সামাজিক দূরত্ব মেনে মুখে মাস্ক পরে রয়েছেন। নিয়মিতভাবে সবকিছু স্যানিটাইজ় করা হচ্ছে । হাত ধোওয়ার জল, সাবান, স্যানিটাইজ়ার সমস্ত কিছুই রাখা হয়েছে । প্রতিবার মণ্ডপ তৈরি করতে প্রায় 60 জন কর্মী লাগে । এবছর মাত্র কুড়িজন কর্মী মণ্ডপ তৈরি করছেন । তাও সকালে 10 জন ও বিকেলে 10 জন। সামাজিক দূরত্ব, গ্লাভস, স্যানিটাইজ়েশন সবকিছু মেনে কর্মীরা কাজ করছেন।
রাম মন্দির বাস স্টপ থেকে চোরবাগান সর্বজনীন দুর্গাপুজো সমিতি প্রায় 600 মিটার । এই পরিস্থিতিতে পুজো কমিটি ঠিক করেছে, রাস্তা থেকে মণ্ডপে প্রবেশ করা পর্যন্ত মোট তিনটি জীবাণুনাশক স্প্রে টানেল গেটের ব্যবস্থা করা হবে। সেইসঙ্গে কারও মুখে মাস্ক না থাকলে তাদের বিনামূল্যে চোরবাগানে মাস্ক দেওয়া হবে। ও সকল দর্শনার্থীকে স্যানিটাইজ়ারের একটি করে পাউচ দেওয়া হবে। কাজল মান্না জানিয়েছেন, যদি শেষ সময়ে গিয়ে দর্শক প্রবেশের অনুমতি না দেয় সরকার, তাহলে পুজো পুজোর মতো হবে। পাড়ার লোক আনন্দ করবে। যতই প্রতিকূলতা আসুক না কেন পুজো হবে না এটা হতেই পারে না।
শিল্পী বিমল সামন্ত জানিয়েছেন, সামাজিক দূরত্বের কথা মনে রেখেই এবছর চার দেওয়াল ঘিরে মণ্ডপ তৈরি করা হবে না । তাই মাঠের অর্ধেকের বেশি অংশ খোলা রাখা হয়েছে । শুধু প্রতিমা যেখানে থাকবে সেই অংশটা ছোটো মণ্ডপের আকারে তৈরি করা হয়েছে । সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য অন্যভাবে এবার প্রস্তুতি নেওয়া হবে । অনেক বেশি খোলামেলা জায়গা রাখা হয়েছে । তার মধ্যেই শৈল্পিক নকশা দিয়ে সেজে উঠবে এবছরের চোরবাগান সর্বজনীন দুর্গাপুজোর মণ্ডপ । শিল্পী বিমল সামন্ত জানিয়েছেন, দর্শনার্থীরা মণ্ডপে এসে নান্দনিকতার ছোঁয়া পাবেন । এবং প্রতিমা সেজে উঠছে মণ্ডপের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে । মূলত লোহার স্ট্রাকচারের ওপর গাছের মূল ও শিকড় দিয়েই সেজে উঠছে মণ্ডপ ।