কলকাতা, 14 নভেম্বর: শিশু দিবসে এক শিশুর অনন্য গল্প ৷ যার মুখ্য চরিত্রে তৃতীয় শ্রেণির আবদুল আলি নস্কর ৷ বড় হয়ে শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন আঁকা তার চোখে । যদিও পরিস্থিতি মোটেই অনুকূল নয় ৷ তবুই হাল ছাড়ার পাত্র নয় সেই ছোট্ট শিশু ও তার পরিবার ৷ তাই বাবার পেশার কারণে তার সঙ্গে রোজ কলকাতায় আসতে হলেও একইসঙ্গে পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে আবদুল ৷ মেট্রো স্টেশনে বসে । স্কুল সেরে বইপত্র নিয়ে যতীন দাস পার্ক মেট্রো স্টেশনের এক নম্বর গেটই তার আস্তানা । সেখানে বসে সে সেরে ফেলে স্কুল ও বাড়ির রোজকার পড়া । আর তার বাবা মগ্ন থাকে দোকানের বেচাকেনায় । সব সেরে আবারও রাতে বাবার হাত ধরেই বাড়ি ফিরে যায় আবদুল ।
বারুইপুরে থাকেন আবদুল আলি নস্কর । তবে তার বাবার চা-টিফিনের দোকান হাজরার কাছে ৷ তাই কলকাতারই বেলতলার একটি স্কুলে তিনি ছেলেকে ভর্তি করে দিয়েছেন ৷ রোজ ভোর চারটেয় বাবার হাত ধরেই সে রওনা দেয় কলকাতার উদ্দেশে । বাড়িতে আছেন মা, ছোট এক বোন ও দিদা । যতীন দাস পার্ক মেট্রো স্টেশনের এক নম্বর গেটের সামনে আবদুলের বাবা শাহিফুল নস্করের ছোট একটি দোকান । সকাল থেকে রাত চা-ডিম-পাউরুটি বিক্রিবাটা করেন ৷
আর আবদুল স্কুল ছুটি হওয়ার পর রাত পর্যন্ত থাকে বাবার সঙ্গেই ৷ মাঝে এক জায়গায় পড়তেও যায় ৷ বাবার কাজ শেষ হলে রাতে একবারে বাড়ি ফেরে ৷ তবে সারাটা দিন মেট্রো স্টেশনের গেটের কাছে বসেই পড়াশোনা চালিয়ে যায় ছোট্ট আবদুল । স্কুল সেরে সে বই খাতা নিয়ে বসে পড়ে যতীন দাস পার্ক মেট্রো স্টেশনের এক নম্বর গেটে । ব্যস্ততম ওই মেট্রোর গেটের একপাশে মন দিয়ে ছড়া মুখস্থ থেকে জটিল সব অংক - সব সেরে ফেলে আবদুল । তার কথায়, "এই মেট্রো স্টেশনে ঠান্ডা হাওয়া খাই আর পড়াশোনা করি ।"