কলকাতা, 5 জুন: আগামিকাল অর্থাৎ, মঙ্গলবার ফের ওড়িশা যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় ৷ মূলত কটক এবং ভুবনেশ্বরের হাসপাতালে যাবেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ দুই জায়গাতেই রাজ্যের যে আহত যাত্রীদের চিকিৎসা চলছে, তাদের দেখতেই ওড়িশা যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷
মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রীর এই ওড়িশা সফরে তাঁর সঙ্গে রাজ্যের দুই মন্ত্রী শশী পাঁজা এবং চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যও যাচ্ছেন বলে জানা গিয়েছে। এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, এখনও পর্যন্ত 206 জন রোগী বিভিন্ন জায়গায় ভর্তি রয়েছেন। মূলত তাদের চিকিৎসা ঠিকমতো হচ্ছে কি না, তা দেখতেই ওড়িশা যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রসঙ্গত, এদিন নবান্নের টোল প্লাজায় রেল দুর্ঘটনায় মৃতদের শ্রদ্ধা জানাতে উপস্থিত হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্য সচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী, ছিলেন রাজ্য প্রশাসনের অন্যান্য আধিকারিকেরাও।
রবিবার মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, করমণ্ডল দুর্ঘটনায় রাজ্যের 62 জন যাত্রীর মৃত্যু হয়েছে ৷ সেখানে সোমবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, রাজ্যে মৃত বেড়ে হয়েছে 90 জন। এখনও পর্যন্ত এই 90 জনকে সনাক্ত করা গিয়েছে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী। সরকারি সূত্রে খবর, এর মধ্যে 73 টি মৃতদেহ ইতিমধ্যেই রাজ্যে এসে পৌঁছেছে। বাকি মৃতদেহগুলির চিহ্নিকরণের কাজ চলছে বলেও জানা গিয়েছে। এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ওড়িশা সরকার যাদের সনাক্ত করতে পারেনি, সেই যাত্রীদের ছবি চাওয়া হয়েছে সে রাজ্যের কাছে। সেইসঙ্গে, আরও একবার রাজ্যের বাসিন্দাদের এই সংকটের মুহূর্তে তিনি রাজ্যবাসীর পাশেই থাকছেন বলেও জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, পূর্ব ঘোষণা মোতাবেক মৃতদের পরিবারকে পাঁচ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। এদিন তার সঙ্গে যোগ করা হয় মৃতদের পরিবার পিছু একটা করে স্পেশাল হোম গার্ডের চাকরি দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন:আইসিইউ থেকে সাধারণ বেডে করমণ্ডলের চালক, মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার সহকারী চালকের
অন্যদিকে, যারা এই দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন, তাদের পঞ্চাশ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে ৷ এর পাশাপাশি আগামী চার মাস পরিবারগুলোকে দু'হাজার টাকা করে রাজ্য প্রশাসন দেবে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী ৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "আমি নিজে কটক যাচ্ছি। এই মুহূর্তে কটকে 53 জনের চিকিৎসা চলছে ৷ ভুবনেশ্বর যাচ্ছেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং শশী পাঁজা। ওড়িশা সরকারের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে।" একই সঙ্গে, এদিন আহতদের দেখতে এসএসকেএম হাসপাতালেও গিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেও কয়েকজন আহত ব্যক্তি ভর্তি রয়েছেন ৷ একই সঙ্গে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "কটকের রোগীদের মধ্যে 30 জনের অবস্থা খুব সংকটজনক। আমাদের অফিসাররা দিন রাত অমানবিক পরিশ্রম করছেন। তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমাদের সঙ্গে ওড়িশা সরকারের সম্পর্ক খুব ভালো তাই কাজ করতে কোনও সমস্যা হচ্ছে না।" একইসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, যাদের হাত বাদ গিয়েছে, পা বাদ গিয়েছে তাদের পরিবারগুলিকেও হোমগার্ডের একটা চাকরি দেওয়া হবে। এটা করলে তাদের পরিবারগুলিও বেঁচে যাবে।