কলকাতা, 24 নভেম্বর: চলতি বছরের শুরুতেই ঢাক-ঢোল পিটিয়ে ধর্মতলায় অনুষ্ঠান করে কলকাতা কর্পোরেশনের তরফে পার্কিং লটের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলোকে দেওয়া হয়েছিল ই-পস মেশিন। দাবি করা হয়েছিল নির্ধারিত পার্কিং ফি-এর এক টাকাও বেশি দিতে হবে না কাউকে। বছরের শেষের মুখে ই-পস মেশিন দূরে থাক, উপরন্তু তোলাবাজির দাপটে নাজেহাল পার্কিং লটে গাড়ি রাখতে আসা সাধারণ নাগরিকরা।
কর্পোরেশনের নির্ধারিত ফি চার চাকার গাড়ির ক্ষেত্রে সকাল সাতটা থেকে রাত 10টা পর্যন্ত 10 টাকা। তারপর থেকে ফের সকাল সাতটা পর্যন্ত 30 টাকা। অভিযোগ, এইসব নিয়ম তোয়াক্কা করার কোনও বালাই নেই উত্তর থেকে দক্ষিণ রাস্তাগুলোর পার্কিং লটের দায়িত্বপ্রাপ্ত এজেন্সির। কেউ হাঁকছেন 40 টাকা তো কেউ 50 টাকা। আবার বাজার বা ঘন জনবসতি এলাকাগুলোয় 70-80 টাকা আদায় করা হচ্ছে ঘণ্টা পিছু। কার্যত লাগামহীন তোলাবাজি চলছে বলে অভিযোগ ৷
তোলাবাজি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যেখানে শুধু নির্ধারিত ফি থেকে কয়েকগুণ বেশি টাকা আদায় করা তাই নয়, ই-পস মেশিন ব্যবহার করাও হচ্ছে না বলে অভিযোগ। কোথাও নিজেরাই নকল স্লিপ ছাপিয়ে দেদার টাকা তুলছে বলেও অভিযোগ। এই ছবি হাতিবাগান, নিউ মার্কেট, গড়িয়া, বড়বাজার, সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ, রাসবিহারী সব জায়গাতেই এমনই ছবি দেখা যাচ্ছে বলে অভিযোগ। কলকাতা কর্পোরেশনের ধার্য করা ফি দুই চাকার ক্ষেত্রে সকাল সাতটা থেকে রাত 10টা পর্যন্ত পাঁচ টাকা। অধিকাংশ ক্ষেত্রে 20 টাকা, তো কোথাও 30 টাকাও ঘণ্টা পিছু নেওয়া হচ্ছে। কলকাতায় 100-এর বেশি কর্পোরেশন অনুমোদিত পার্কিং লট আছে। অবশ্য এক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েই হাটগুটিয়েছে প্রশাসন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই নাগরিকদের বাধ্য করা হচ্ছে এই অতিরিক্ত টাকা দিতে।
এই প্রসঙ্গে কলকাতা কর্পোরেশনের এক আধিকারিক জানান, নির্ধারিত টাকার থেকে বেশি নেওয়া যাবে না। তবে মাঝে মধ্যেই অভিযোগ আসছে বলেও জানিয়েছেন তিনি ৷ সতর্কও করা হয়েছে ৷ ওই আধিকারিক বলেন, "এরপরেও না শুনলে আইন মাফিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ওয়েব সাইটে তালিকা দেওয়া সেই অনুসারে ফি দেবেন। অতিরিক্ত চাইলে দেবেন না।" উল্লেখ্য, ফি বৃদ্ধি নিয়ে চলতি বছরেই তোলপাড় হয়েছে কলকাতা কর্পোরেশন। কর্পোরেশনের তরফে ফি বৃদ্ধি করে নয়া ফি তালিকা লঘু করা হয়। তার কিছু সময় মধ্যেই কুণাল ঘোষ কর্পোরেশন ও মেয়রের এই ভূমিকা নিয়ে প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।