কলকাতা, 17 নভেম্বর: ময়দান এলাকায় মেট্রো স্টেশনের কাজ করতে নতুন করে গাছ কাটা যাবে না, শুক্রবার এমনই নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবাজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চ । তবে আদালত জানিয়েছে, মেট্রোরেলের কাজ বন্ধ রাখার প্রয়োজন নেই । কাজ যেমন চলছে চলবে । কাজ করতে গিয়ে যদি নতুন করে গাছ কাটার প্রয়োজন হয়, উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের (বন দফতর) থেকে অনুমতি নিতে হবে আরভিএনএলকে ।
বন দফতর ও রাজ্যকে এই মামলায় সংযুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত । আরভিএনএল, সেনাবাহিনী, রাজ্যের মুখ্যসচিব, কলকাতা পৌরনিগম, বনমন্ত্রক, বনদফতরকে হলফনামা দিয়ে তাদের বক্তব্য জানাতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আদালতের তরফে । আগামী 19 ডিসেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি । এর আগে মেট্রোরেলের কাজের জন্য ময়দান এলাকায় গাছ কাটার উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের পূজাবকাশকালীন বেঞ্চ ।
এই মামলার শুনানিতে এ দিন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি মন্তব্য করেন, মেট্রো পরিষেবা এখন বিলাসিতা নয় ৷ এটা এখন মানুষের কাছে প্রয়োজনীয় বিষয় । তাই মেট্রো ও পরিবেশ রক্ষা, দু’টোর মধ্যে যাতে ভারসাম্য থাকে, সেই বিষয় বিশেষ ভাবে লক্ষ্য রাখতে হবে ৷
পিপল ইউনাইটেড ফর বেটার লিভিং ইন ক্যালক্যাটা বেসরকারি সংস্থা নির্বিবাদে গাছ কাটা হচ্ছে অভিযোগ তুলে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল । এ দিন শুনানিতে ওই সংস্থার আইনজীবী সিদ্ধার্থ মিত্র আগের দিনের মতোই বলেন, ‘‘মোমিনপুর থেকে ধর্মতলা মেট্রোর কাজের জন্য নির্বিবাদে গাছ কাটা হচ্ছে ময়দান এলাকায় । আরভিএনএল (রেল বিকাশ নিগম লিমিটেড) কাজ করছে । মোট 700 গাছ কাটবে তারা, সংবাদমাধ্যম সূত্র থেকে আমরা জানতে পেরেছি । তার মধ্যে প্রায় 200টি শুধুমাত্র মেশিন ও অন্যান্য জিনিসপত্র বহনের সুবিধার জন্য । আরটিআই করেছিলাম আমরা । উত্তর পাইনি । 325 মিটার ময়দান স্টেশন তৈরি হবে । খোঁড়া হচ্ছে মেশিন দিয়ে । একটা অংশ ব্যারিকেড করে ঘেরা । কাউকে সেই অংশে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না ৷’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘25 সেপ্টেম্বর প্রথম চিঠি দিয়েছিলাম আমরা কর্তৃপক্ষকে । কিছু উত্তর দেওয়া হয়নি । পুজোর পরে মার্কিং করা হবে আরও গাছ । পরিবর্তে অন্যত্র গাছ লাগানো হবে বলা হচ্ছে । কিন্তু 80-90 বছরের পুরনো গাছ কাটা হচ্ছে । এই ক্ষতি পূরণ হবে ? গাছ কাটার প্রয়োজনীয় অনুমতি নেই আরভিএনএলের । আরভিএনএল এবং কেন্দ্রকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল 23 অক্টোবর ৷ কিন্তু তারা কোনও উত্তর দেয়নি ।’’
রাজ্যের আইনজীবী মহম্মদ গালিফ বলেন, "কাজ করছে আরভিএনএল । সেনাবাহিনীর জায়গা । রাজ্য শুধু আইনরক্ষার কাজ করতে পারে ।" তবে আরভিএনএলের পক্ষে আইনজীবী শাক্য সেন বলেন, "কলকাতা হাইকোর্টে আগে একটি জনস্বার্থ মামলা হয় । সেই মামলার নির্দেশ মতো আরভিএনএলকাজ করছে ।"