কলকাতা, 2 মে: মহার্ঘভাতার দাবিতে কো-অর্ডিনেশন কমিটির মিছিলে অনুমতি দিল কলকাতা হাইকোর্ট । তবে রুটে বদল এনে এই মিছিলের অনুমতি দিলেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা । আগামী 4 মে এই মিছিলে হবে । দুপুর 2:30টা থেকে 4:30টা পর্যন্ত মিছিলে অনুমতি দিয়েছে আদালত । মিছিল শুরু হবে হাওড়া ফেরিঘাট থেকে ৷ তারপর বঙ্কিম সেতু , ডিএম স্লোপ, মহাত্মা গান্ধি রোড হয়ে হাওড়া ময়দানে শেষ হবে মিছিল ।
মঙ্গলবার রাজ্যের তরফে আদালতে বলা হয়, হাওড়া ফেরিঘাট থেকে নবান্ন পর্যন্ত রুটে মিছিল করার কথা বলা হচ্ছে ৷ সেটা মিছিলের জন্য নির্দিষ্ট করা কোনও রুট না । জনবহুল এলাকা সাধারণ মানুষের অসুবিধা হবে । স্কুল ও অফিস যাত্রীদের অসুবিধা হবে । ট্রাফিকের অসুবিধা হবে । অন্য রুটে অন্য জায়গায় মিছিল করলে অসুবিধা নেই । আড়াই কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের একটি রুটে কর্মসূচি করতে দিতে রাজ্যের কোনও অসুবিধা নেই বলে জানানো হয়েছে ।
বিচারপতি মান্থা বলেন, যে বিধিনিষেধের কথা আপনারা এখানে বলছেন সেটা রাজ্যের শাসকদলের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য তো ? রেড রোড বন্ধ করে যখন কর্মসূচি হয়, মিছিল হয়, তখন পুলিশের অসুবিধা হয় না ? কিছু দল যখন মিছিল করে তখন গোটা কলকাতা স্তব্ধ হয়ে যায় । আমি শাসকদলের কথা বলছি না । তখন তো পুলিশের কোনও অসুবিধা হয় না ! মানুষ পরিবার নিয়ে রাস্তায় বেরোতে চায়, কিন্তু বেরোতে পারে না ! তখন পুলিশের অসুবিধা হয় না ?
তিনি আরও বলেন, শাহীনবাগের ক্ষেত্রে আন্দোলন দীর্ঘদিন চলেছিল ৷ দিল্লি স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল ৷ তাই সুপ্রিম কোর্টকে কিছু পদক্ষেপ নিতে হয়েছিল । এখানে বিষয়টা সেরকম না । আমি নির্দেশ দিয়েছিলাম, মিছিলের আবেদন সংক্রান্ত একটা রেজিস্ট্রার তৈরি করতে হবে ৷ যাতে মানুষ দেখতে পায় কবে মিছিল রয়েছে । সেটা এখনও তৈরি হয়নি ! 30 থেকে 40টা মামলা আমার কাছে এসেছে মিছিল করার অনুমতি চেয়ে । কেন আদালতকে বারবার হস্তক্ষেপ করতে হবে ? তারা আপনাদের অর্থাৎ রাজ্য সরকারি কর্মচারী । এরা কী চাইছে ? মহার্ঘভাতা ৷ শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করলে অসুবিধা কোথায় ?
বিচারপতি মান্থা বলেন, বিরোধিতা করা বা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করা মৌলিক অধিকারের মধ্যে পরে । বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারেন ৷ কিন্তু শান্তিপূর্ণ মিছিল বন্ধ করতে পারেন না । স্কুল, কলেজ, বাজার, অফিস আছে বলে মিছিলের অনুমোদন প্রত্যাখ্যান করা যায় না । আন্দোলনকারীরা তো দেখাতে চান যে তারা কতটা অসুবিধের মধ্যে আছেন । সুপ্রিম কোর্টে মহার্ঘভাতা মামলা বিচারাধীন । কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট তো আন্দোলন করতে নিষেধ করেনি । এমন চারটে উদাহরণ আমি দিতে পারি যেখানে আগে অনুমতি চাওয়া হয়েছে ৷ কিন্তু পুলিশ সেই অনুমতি দেয়নি ৷ কিন্তু কর্মসূচির 2 দিন আগে অন্য দল চেয়েছে ৷ আর পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে সেই অনুমতি দিয়েছে ।
উল্লেখ্য, আগামী 4 তারিখ নবান্ন অভিযানের অনুমতি চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয় কো-অর্ডিনেশন কমিটি-সহ সরকারি কর্মচারীদের সংগঠন । সকালে এই মামলাটি আদালতে উঠলে বিচারপতি মান্থা রাজ্যকে মিছিলের রুটের ব্যাপারে জানাতে নির্দেশ দেন ।
আরও পড়ুন:মহার্ঘ ভাতা নিয়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সরকারের বৈঠক নিষ্ফলা