কলকাতা, 21 নভেম্বর:রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্য়ালয়ের (Rabindra Bharati University) জোড়াসাঁকো ক্য়াম্পাসে কোনও ধরনের বেআইনি নির্মাণ (Illegal Construction) বরদাস্ত করা হবে না ৷ ইতিমধ্যেই সেখানে যে বেআইনি নির্মাণ করা হয়েছে, তা আগামী তিন সপ্তাহের মধ্য়েই ভেঙে ফেলতে হবে ৷ হঠিয়ে দিতে হবে দখলদারদের ৷ সোমবার এমনটাই নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court) ৷ আদালতের এই নির্দেশ পালনের জন্য কলকাতা পৌরনিগম (Kolkata Municipal Corporation), সংশ্লিষ্ট হেরিটেজ সংরক্ষণ কমিটি এবং কলকাতা পুলিশের (Kolkata Police) সাহায্য নিতে বলা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষককে ৷ আগামী 19 ডিসেম্বর ফের এই মামলার শুনানি করা হবে ৷
উল্লেখ্য, গত কয়েক দিন ধরেই আবারও খবরে উঠে এসেছে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় ৷ সৌজন্যে, বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ ৷ আর এর জন্য রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসকেই দায়ী করছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ৷ তাদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের হেরিটেজ স্বীকৃতি পাওয়া জোড়াসাঁকো ক্য়াম্পাসে বেআইনি নির্মাণ করা হয়েছে ৷ হেরিটেজ আইনের তোয়াক্কা না করেই সেখানে তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় কার্যালয় তৈরি করা হয়েছে ৷ ওই কার্যালয়ের নাম দেওয়া হয়েছে 'শিক্ষাবন্ধু সমিতি' !
আরও পড়ুন:কাজ করার অসুবিধা নিয়ে কোনও উপাচার্য অভিযোগ জানাননি, রবীন্দ্রভারতী প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী
এরই বিরোধিতায় কলকাতা হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা রুজু হয়েছে ৷ সোমবার সেই মামলাটি শুনানির জন্য ওঠে প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষী ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে ৷ মামলাকারীর আইনজীবী শ্রীজীব চক্রবর্তী দাবি করেন, যেভাবে ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাঙ্গনে রাজনৈতিক কার্যালয় গড়ে তোলা হয়েছে, তা একেবারেই বেআইনি ৷ যাঁরা এই কাজ করেছেন এবং ওই নির্মাণ দখল করে রেখেছেন, তাঁদের আদৌ এসব করার অধিকার রয়েছে কিনা, সেই প্রশ্ন তোলেন শ্রীজীব ৷
এর প্রেক্ষিতে আদালত তৃণমূলের তরফের আইনজীবীর কাছে জানতে চায়, তাদের কাছে এই সংক্রান্ত কোনও বৈধ নথি রয়েছে কিনা ৷ জবাবে আইনজীবী জানান, আগে ওই ঘরে সিপিএম-এর কার্যলয় ছিল ৷ এখন সেখানেই 'সারা বাংলা শিক্ষাবন্ধু সমিতি'র কার্যালয় তৈরি করা হয়েছে ৷ অন্যদিকে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই নির্মাণ একেবারেই বেআইনি এবং যাঁরা এই কাণ্ড ঘটিয়েছে, তাঁরা সকলেই দখলদার ! বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অবিলম্বে এই নির্মাণ ভেঙে দিতে চায় এবং দখলদারদের হঠাতে চায় ৷ কিন্তু, এই উচ্ছেদ অভিযান হবে কীভাবে ? এই বিষয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে আদালতে হলফনামাও জমা করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ৷
এরপরই কঠোর পদক্ষেপ করে আদালত ৷ সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, ভবন নির্মাণ আইন অনুসারে ওই নির্মাণ বেআইনি হলে, তা আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যেই ভেঙে ফেলতে হবে ৷ হঠিয়ে দিতে হবে দখলদারদেরও ৷ আর এই কাজে প্রশাসনই তাদের সাহায্য করবে ৷ কলকাতা পৌরনিগম, সংশ্লিষ্ট হেরিটেজ সংরক্ষণ কমিটি এবং কলকাতা পুলিশের সাহায্য নেবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ৷ পাশাপাশি, এই ঘটনার জেরে যদি ইতিমধ্য়ে হেরিটেজ বিল্ডিংয়ের কোনও ক্ষতি হয়ে থাকে, তাহলে অবিলম্বে তারও সংস্কার করতে হবে ৷